শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগোবে না

বাংলাদেশ ও ভারত ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হলেও, দুই দেশের সম্পর্ক বর্তমানে একটি বড় জটিলতার মধ্যে পড়েছে। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে জনমনে অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে গণহত্যার বিচার শুরু হয়েছে। এমন একজন অভিযুক্তকে ভারত আশ্রয় দেওয়ায় দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে, তবে ভারতের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। বরং পালিয়ে যাওয়া একজন স্বৈরশাসককে প্রশ্রয় দেওয়ায় ভারতের অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে ভারতে অবস্থান করে তিনি যেভাবে উত্তেজনামূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছেন, তা বন্ধ না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। যদিও ভারত তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ, বিশেষ করে যদি ভারত চায় ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সুবিধার জন্য তাকে ব্যবহার করতে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৮ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে বাংলাদেশ মাত্র ৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছে। ভারতীয় বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, বিদ্যুৎ খাত এবং পর্যটনেও বাংলাদেশের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের জন্য শিলিগুড়ি করিডর, পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর বিকল্প সংযোগ, এবং সেভেন সিস্টার্সের নিরাপত্তা ইস্যুগুলোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের জন্য ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখা জরুরি। তিস্তা চুক্তি, পানি ভাগাভাগির বিষয়, বাণিজ্য বৈষম্য, ও ভিসা সমস্যার দ্রুত সমাধান চায় বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান যদি এই সম্পর্কের বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে তা দুই দেশকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ড. এম শহিদুজ্জামান বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া একটি দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া, এবং তাৎক্ষণিক সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, হাসিনার সই করা যেসব চুক্তি বাংলাদেশ মেনে চলছিল, সেগুলো বাতিল হতে পারে, ফলে ভারসাম্যহীন সম্পর্ক আর থাকবে না।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস বলেন, শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ একপাশে রেখেও দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া সম্ভব, বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও মানবিক বিষয়ে। সার্কের ভবিষ্যৎ ও আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য ভারত-বাংলাদেশকে ন্যূনতম সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ড. এম জসিম উদ্দিন বলেন, ইউনূস-মোদি বৈঠকটি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত। ইউনূস সেখানে সীমান্ত হত্যা, তিস্তা চুক্তি ও শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন—যা নতুন বাংলাদেশের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতিরই প্রতিফলন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার ভারত অবস্থান এবং সেখান থেকে উত্তেজনা ছড়ানো একটি বড় বাধা। এই পরিস্থিতি প্রশমিত করতে হলে ভারতের উচিত হবে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভুয়া প্রচারণা বন্ধ করা এবং বাংলাদেশের জনচেতনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- তুমুল সংঘর্ষ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে, ৫৪ জনের মৃত্যু
- সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বেতন বাড়লো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের
- আলেমদের বেইজ্জতি করার পরিণতি সাতক্ষীরা চেয়ারম্যান
- ভারত থেকে যে ৩৩ পন্য আমদানী বন্ধ
- মারা গেছেন চিত্রনায়ক রুবেল, সত্যতা নিয়ে যা জানা গেল
- অভিনেতা সিদ্দিক যেভাবে আটক হলেন
- বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায় বাংলাদেশ, খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে টানা দ্বিতীয় বছর
- উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশকে বার্তা পাঠাল পাকিস্তান
- পাক-আফগান সীমান্তে বড়সড় অভিযানে ৭১ সন্ত্রাসী নিহত
- পর্যটকের ক্যামেরায় ধরা পড়লো কাশ্মীর হামলার দৃশ্য
- ভারতকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে, এটা কোনভাবেই কম হবে না
- ডিজেল ও পেট্রলের দাম কমালো সরকার
- সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা নিয়ে বড় সুখবর
- ২০২৫ সালে এসে কত বছর খাজনা না দিলে জমি খাস হবে
- গর্ভে সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে কোরআনের আবাক করা তথ্য