ভারত থেকে যে ৩৩ পন্য আমদানী বন্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক: বছরের পর বছর ধরে ভারত থেকে যেসব পণ্য বাংলাদেশে আমদানি হচ্ছিল, তা একদিকে দেশীয় শিল্পকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছিল, অন্যদিকে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের লাভ বাড়াচ্ছিল হু-হু করে। বাংলাদেশের বাজার যেন হয়ে উঠেছিল তাদের খেলার মাঠ। কিন্তু এবার সরকার একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারত থেকে ৩৩টি পণ্যের আমদানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রধান তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করা। দ্বিতীয়ত, অপ্রয়োজনীয় আমদানির চাপ কমানো। তৃতীয়ত, শুল্ক ফাঁকি ও অবৈধ রিরাউটিং বন্ধ করা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত পণ্যের মধ্যে অনেকগুলোরই দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থা শক্তিশালী। কিন্তু ভারতীয় পণ্যের সস্তা দামের কারণে সেসব খাত মার খাচ্ছে। অনেক কারখানা উৎপাদন কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে, কেউ কেউ বন্ধ পর্যন্ত হয়ে গেছে।
যে ৩৩টি পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে: ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, মাছ, আলু, গুঁড়ো দুধ, তামাক, রেডিও, টিভি, সাইকেল ও মোটরযানের যন্ত্রাংশ, সিরামিক, স্যানিটারি সামগ্রী, স্টেইনলেস স্টিল পণ্য, মার্বেল স্ল্যাব, টাইলস, মিশ্র কাপড়, ছাপানো কাপড়, ডিনার সেট, গ্লাসওয়্যার, কৃত্রিম রেশমি সুতা, প্যাকেটজাত নুডুলস, সৌন্দর্য চর্চার প্লাস্টিক সামগ্রী, প্লাস্টিক চামচ ও বালতি, অ্যালুমিনিয়াম ফিটিংস, ইলেকট্রিক সুইচ, ইউপিএস বক্স, কমদামী ফার্নিচার, কিচেন সেট এবং বিভিন্ন গৃহস্থালী প্লাস্টিক পণ্য।
নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে। যেমন, নিবন্ধিত বিড়ি কারখানাগুলোর জন্য কাঁচা তামাকের নির্দিষ্ট উপাদান বিশেষ শর্তে আমদানি করার অনুমতি থাকবে।
এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি বড় বার্তা বহন করে। সরকার স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে যে দেশীয় শিল্পকে আর অবহেলা করা যাবে না। এতদিন ভারত থেকে আসা সস্তা পণ্যের কারণে যারা স্থানীয় বাজার হারিয়েছে, তাদের জন্য এটি স্বস্তির খবর।
এছাড়া নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি হবে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা বাড়লে মানও উন্নত হবে। এতে করে দেশীয় পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার মতো সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের উপর নির্ভরতা কমবে এবং বাংলাদেশ বিকল্প বাজার ও উৎসের দিকে মনোযোগ দিতে পারবে—যেমন চীন, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য।
সবশেষে বলা যায়, এই আমদানি নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র একটি বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা ও শিল্পায়নের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এতে একদিকে আমদানি হ্রাস পাবে, অন্যদিকে দেশীয় শিল্পে গতি আসবে এবং কর্মসংস্থানও বাড়বে।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- নতুন পে স্কেল: বেতন দ্বিগুণ, বাতিল হচ্ছে যেসব ভাতা
- আজ থেকে কমে বিক্রি হচ্ছে সোনা, ভরি প্রতি ২২ ক্যারেটের দাম কত
- বেতন বাড়লেও সরকারি কর্মীদের জন্য দ্বিগুণ ধাক্কা, বাড়ছে আয়কর ও বাড়িভাড়া
- ফের কমেছে স্বর্ণের দাম, দেশে ভরি কত
- খরচ কমে গেল: বিকাশ, নগদ, রকেটে সরাসরি আন্তঃলেনদেন চালু
- দাম কমে আজ থেকে স্বর্ণের নতুন দাম, ভরি কত
- ২০ গ্রেড থাকছে না: সরকারি বেতন কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আনছে পে কমিশন
- নতুন পে স্কেলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতা বাধ্যতামূলক!
- নতুন পে-স্কেলে যেভাবে ব্যাপকভাবে বাড়বে জনদুর্ভোগ
- কবে ঘোষণা হচ্ছে নতুন পে স্কেল; যা জানাচ্ছে পে কমিশন
- নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে সর্বশেষ কী জানা গেল
- শেষ হলো পে কমিশনের মতবিনিময় পর্ব: কবে আসছে নতুন পে-স্কেলের সুখবর
- পে-কমিশনের কাছে ১১-২০ ফোরামের ১৩ টি গ্রেড ও সর্বনিম্ন ৩২,০০০ টাকা বেতনের দাবি
- বিশ্ববাজারে কমছে স্বর্ণের দাম: দেশে ভরি কত
- পে স্কেল ঘোষণা কবে! যা জানা গেলো
