| ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

যে মহামারিতে মাত্র ১০০ বছর আগে সৎকারের জন্য কোন লোক ছিল না

বিশ্ব ডেস্ক . বিনোদন৬৯.কম
২০২৫ মার্চ ১১ ১৩:১৬:৩২
যে মহামারিতে মাত্র ১০০ বছর আগে সৎকারের জন্য কোন লোক ছিল না

এক শতাব্দী আগেও এক ভয়াবহ মহামারি বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল—স্প্যানিশ ফ্লু। ১৯১৮ সালে শুরু হওয়া এই মহামারিতে প্রায় পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ মারা যায়, যা ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী মহামারিগুলোর একটি।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে, ১৯১৮ সালের মার্চে, যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসে সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্পে প্রথম এই রোগ শনাক্ত হয়। প্রথমদিকে সাধারণ সর্দি-জ্বরের মতো মনে হলেও দ্রুত এটি ভয়ংকর রূপ নেয়। যুদ্ধ শেষে সেনারা নিজ নিজ দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসও ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপ ও অন্যান্য মহাদেশে।

এই মহামারি তিনটি ধাপে আঘাত হানে। প্রথম ধাপে সংক্রমণ তুলনামূলক কম ভয়াবহ ছিল। তবে দ্বিতীয় ধাপে, ১৯১৮ সালের আগস্টে, ভাইরাস ভয়ংকর হয়ে ওঠে। নিউমোনিয়ার মতো লক্ষণ দেখা যেত, আর মাত্র দুই-তিন দিনের মধ্যে রোগী মারা যেতেন। তৃতীয় ধাপে, শীতকালে ও বসন্তকালে, এটি আরও ভয়াবহ রূপ নেয় এবং লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালি সংবাদমাধ্যমে সেনাদের মনোবল ধরে রাখতে মহামারির খবর প্রকাশ করতে চাইছিল না। কিন্তু স্পেন, যে দেশটি যুদ্ধে অংশ নেয়নি, সেখানে সংবাদমাধ্যম খোলামেলাভাবে মহামারির খবর প্রচার করেছিল। ফলে অনেকের কাছে মনে হয়েছিল, এই রোগ স্পেনেই বেশি ছড়িয়েছে, আর তাই একে "স্প্যানিশ ফ্লু" বলা হয়।

যুদ্ধকালীন সময়ে সৈন্যরা বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করছিলেন, ফলে ভাইরাস দ্রুত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। ক্যাথারিন আর্নল্ডের বই "প্যানডেমিক ১৯১৮" অনুসারে, সৈন্যরা জাহাজে করে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়ার ফলে ভারত, আফ্রিকা, রাশিয়া এবং অন্যান্য অঞ্চলেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

এই ফ্লুতে শিশু ও বৃদ্ধদের পাশাপাশি তরুণ ও কর্মক্ষম ব্যক্তিরাও ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হন। চিকিৎসাব্যবস্থা অপ্রতুল ছিল, কারণ তখনও অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হয়নি। হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছিল রোগীতে, আর চিকিৎসার অভাবে বহু মানুষ মারা যাচ্ছিল।

১৯১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মহামারির সবচেয়ে ভয়াবহ ধাক্কা আসে। কেপটাউনের প্রধান এক নার্স লন্ডন টাইমসকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছিলেন, "দুই সপ্তাহে ছয় হাজার মানুষ মারা গেছে। পুরো শহর যেন মৃত্যুর উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে থাকত, অথচ সৎকারের জন্য কোনো লোক পাওয়া যেত না।"

১৯১৯ সালের শুরুতে বেশিরভাগ দেশ মহামারির প্রকোপ থেকে মুক্তি পেতে শুরু করে। তবে সেই বছরেই নিউইয়র্ক ও প্যারিসে আবারও সংক্রমণ বাড়ে। অবশেষে ১৯২০ সালের শেষের দিকে মহামারি পুরোপুরি বিলীন হয়ে যায়।

স্প্যানিশ ফ্লুর মতো মহামারিগুলো ইতিহাসে আমাদের জন্য সতর্কবার্তা হয়ে রয়েছে যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের বিপর্যয় ঠেকাতে আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।

আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ

ক্রিকেট

আচমকা টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বললেন রোহিত শর্মা

আচমকা টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বললেন রোহিত শর্মা

রোহিত শর্মা টেস্ট ক্রিকেটকে জানালেন বিদায়। ইনস্টাগ্রামে ক্যাপশনের সঙ্গে দিলেন আবেগঘন বার্তা। দেখে নিন তার ...

পিএসএলের উদ্বোধনী দিনেই হোটেলে অগ্নিকাণ্ড

পিএসএলের উদ্বোধনী দিনেই হোটেলে অগ্নিকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ২০২৫-এর পর্দা উঠছে আজ, ১১ এপ্রিল, ইসলামাবাদ ইউনাইটেড বনাম ...

ফুটবল

বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব: ২০২৫ সালেআর্জেন্টিনার পরবর্তী ম্যাচ সূচি

বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব: ২০২৫ সালেআর্জেন্টিনার পরবর্তী ম্যাচ সূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে লাতিন আমেরিকার বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনা আগামী চারটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ...

বাংলাদেশ দলে খেলে কত টাকা পেলেন হামজা

বাংলাদেশ দলে খেলে কত টাকা পেলেন হামজা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের ...