কোরআন ও আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে ইয়াজুজ ও মাজুজ কারা কি তাদের পরিচয়!

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইয়াজুজ ও মাজুজ—একটি রহস্যময় জাতি যাদের নাম কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ আছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা কারা, এ নিয়ে যুগ যুগ ধরে মানব সমাজে প্রশ্ন ও কৌতূহলের শেষ নেই।
অনেকেই ভাবেন, ইয়াজুজ ও মাজুজ কি মানুষেরই কোনো জাতি? নাকি তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন কোনো সত্তা? তারা কি গোপনে পৃথিবীর অভ্যন্তরে বাস করছে? না কি তারা ভিন গ্রহের কোনো প্রাণী? আজকের আলোচনায় আমরা এই রহস্যময় জাতি নিয়ে বিশ্লেষণ করব কোরআন, হাদিস ও আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে।
কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী, ইয়াজুজ ও মাজুজ ছিল অত্যন্ত হিংস্র ও বর্বর এক জাতি। মানবজাতিকে তাদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে, মহান শাসক জুলকারনাইন একটি বিশাল প্রাচীর নির্মাণ করেন। এই প্রাচীর তাদের আটকে রাখে, কিন্তু কিয়ামতের পূর্বে তারা তা ভেঙে বেরিয়ে আসবে এবং পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। তখন তারা হবে অসংখ্য, এবং পৃথিবীর কোনো শক্তিই তাদের প্রতিরোধ করতে পারবে না। পরে, এক মহামারীতে তারা সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে।
ইয়াজুজ ও মাজুজ সম্পর্কে কোরআনে খুব বিস্তারিত পরিচয় না থাকায় অনেকে মনে করেন তারা এখনো কোনো গোপন স্থানে—সম্ভবত পৃথিবীর ভেতরে বা দুর্গম কোনো অঞ্চলে বাস করছে। এখানেই আসে "হোলো আর্থ থিওরি" বা "গহ্বরযুক্ত পৃথিবী তত্ত্ব"।
এই তত্ত্ব অনুযায়ী, পৃথিবীর অভ্যন্তরে রয়েছে বিশাল গুহা বা গহ্বর, যেখানে থাকতে পারে গোপন সভ্যতা, এমনকি উন্নত প্রযুক্তিও। ইংরেজ বিজ্ঞানী এডমন্ড হ্যালি সর্বপ্রথম এই ধারণা দেন, পরে আমেরিকান সামরিক অফিসার জন ক্লেভ সাইমস জুনিয়র তা আরও জনপ্রিয় করেন।
যদিও আধুনিক বিজ্ঞান এই তত্ত্বকে সায়েন্স ফিকশন বলেই উড়িয়ে দিয়েছে, অনেক গবেষক এখনো মনে করেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরে এমন কিছু লুকানো অঞ্চল থাকতে পারে যেখানে আধুনিক প্রযুক্তি এখনও পৌঁছাতে পারেনি।
আরেকটি আকর্ষণীয় তত্ত্ব হলো, ইয়াজুজ ও মাজুজ আসলে ভিনগ্রহের প্রাণী বা এক্সট্রা-টেরেস্ট্রিয়াল জাতি হতে পারে। কোরআনে বলা হয়েছে, *"তারা প্রতিটি উচ্চ স্থান থেকে ছুটে আসবে"*—এটি অনেকের মতে নির্দেশ করে উপরের দিক, অর্থাৎ আকাশ বা মহাকাশ।
আজকের দিনে আমাদের আকাশে এমন অনেক ইউএফও বা অজানা উড়ন্ত বস্তু দেখা যায় যেগুলোর উৎস ও প্রযুক্তি আজও অজানা। এমনকি পেন্টাগনও স্বীকার করেছে যে কিছু ইউএফওর অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়েছে। তাহলে কি সম্ভব, ইয়াজুজ ও মাজুজ সেই অজানা মহাজাগতিক জাতি?
ইউএফও আলোচনায় আনুন্নাকি নামটিও সামনে আসে। লেখক জেকারিয়া সিচিন তার বই *"The 12th Planet"* এ দাবি করেন, প্রাচীন সুমেরীয়রা বিশ্বাস করত, নিবিরু নামের একটি গ্রহ থেকে এলিয়েনরা এসে মানুষকে তাদের সোনা খননে বাধ্য করত। তিনি বলেন, এই আনুন্নাকি আজও গোপনে মানব সভ্যতাকে প্রভাবিত করছে। তাহলে কি ইয়াজুজ ও মাজুজ সেই এলিয়েনদেরই একটি রূপ?
আর যদি ইয়াজুজ ও মাজুজ পৃথিবীরই কোনো হারিয়ে যাওয়া জাতি হয়, তাহলে তারা হতে পারে নিয়ান্ডারথেল বা ডেনিসোভানের বংশধর। ২০০৮ সালে সাইবেরিয়ার ডেনিসোভা গুহায় আবিষ্কৃত হাড়গোড় বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এই মানব প্রজাতির ডিএনএ আমাদের মধ্যেও আছে। অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, আধুনিক মানুষের পূর্বপুরুষদের মাঝে যেসব রহস্যময় জাতি ছিল, ইয়াজুজ মাজুজ তাদেরই কেউ হতে পারে।
বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ও জেনেটিক মডিফিকেশন প্রযুক্তি দিয়ে ভবিষ্যতে মানুষ নিজেই এমন জাতি তৈরি করতে পারে, যারা ইয়াজুজ মাজুজের মতো হিংস্র, দুর্ধর্ষ এবং মানবজাতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ইয়াজুজ ও মাজুজের রহস্য এখনো পুরোপুরি উন্মোচিত হয়নি। তবে ইসলামিক বর্ণনা এবং আধুনিক বিজ্ঞান ও ইতিহাসের বিভিন্ন তত্ত্ব বিশ্লেষণ করে আমরা এটুকু বলতে পারি—তারা এক ভয়ঙ্কর বাস্তবতা, যারা একদিন আবার ফিরে আসবে।
তালহা/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- তুমুল সংঘর্ষ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে, ৫৪ জনের মৃত্যু
- সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বেতন বাড়লো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের
- আলেমদের বেইজ্জতি করার পরিণতি সাতক্ষীরা চেয়ারম্যান
- তুমুল লড়াই, নিহত ভারতীয় সেনা
- ভারত থেকে যে ৩৩ পন্য আমদানী বন্ধ
- মারা গেছেন চিত্রনায়ক রুবেল, সত্যতা নিয়ে যা জানা গেল
- অভিনেতা সিদ্দিক যেভাবে আটক হলেন
- উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশকে বার্তা পাঠাল পাকিস্তান
- বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায় বাংলাদেশ, খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে টানা দ্বিতীয় বছর
- পাক-আফগান সীমান্তে বড়সড় অভিযানে ৭১ সন্ত্রাসী নিহত
- ভারতকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে, এটা কোনভাবেই কম হবে না
- পর্যটকের ক্যামেরায় ধরা পড়লো কাশ্মীর হামলার দৃশ্য
- ডিজেল ও পেট্রলের দাম কমালো সরকার
- সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা নিয়ে বড় সুখবর
- ২০২৫ সালে এসে কত বছর খাজনা না দিলে জমি খাস হবে