উত্থান আফগান ক্রিকেটের কাছে যে কারণে হেরে যাচ্ছে টাইগাররা
বিশ্বকাপে আফগানদের বিপক্ষে যে কারণে পিছিয়ে থেকে মাঠে নামতে হবে টাইগারদের
আলমের খান: বাংলাদেশ-আফগানিস্তান উপমহাদেশের নতুন দ্বৈরথ রূপে ফুটে উঠছে এই দুই দলের খেলাগুলো। এইমাত্র কয়েক বছর আগে, সেই ২০১১ সালেই তো। ওয়ানডে অঙ্গনে পা রেখেছিল আফগানরা। পরবর্তীতে সময় গিয়েছে সময়ের গতিতে, তবে আফগানরা যেন ছিল সময়ের চেয়েও দ্রুতগামী। তাই বিশ্ববাসীর চোখের পলকেই ওয়ানডেতে প্রতিপত্তিশালী এক দলে পরিণত হয়ে যায় দুর্বার পাঠানরা।
এমনকি মাত্র চার বছরের ওয়ানডে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দলটি ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবে মাঠে নামে। ২০১৪ এশিয়া কাপেতো টাইগারদের ধরাশয়ীর রেকর্ডও রয়েছে তাদের। তবে ২০১৫ সালে আর দুর্ঘটনাটা ঘটতে দেননি টাইগার বাহিনী। তাই সেইবার জল্পনা কল্পনা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল আফগানদের উত্থান। অবশ্য আফগানদের উত্থান কিন্তু দমিয়ে রাখা যায়নি। বিশ্বজয়ের উদ্দীপনায় উদ্দীপ্ত যেই দেশের মানুষ, তাদের দমিয়ে রাখার সাধ্যই বা কার।
তাই ওয়ানডে অঙ্গনে পা দেওয়ার দশ বছরের মধ্যেই টেস্ট স্ট্যাটাসও পেয়ে যায় দলটি। টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়ে সচরাচর দলগুলো টেস্ট ক্রিকেটকে বুঝে ওঠার চেষ্টা করে। টেস্ট ক্রিকেট শব্দটার মর্ম শেখায় নিমগ্ন থাকে। তবে আফগান পাঠানরা যেন তৈরি হয়েছে ভিন্ন ধাঁচে। নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টেই বাংলাদেশকে যেন টেস্ট খেলা শেখালেন তারা। ২০১৯ সালের ঐতিহাসিক সেই ম্যাচে টাইগারদের পর্যদুস্থ করে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন এক দিগন্তের সূচনা করে আফগানরা। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে না থাকলেও কোনো অর্থেই পিছিয়ে নেই পাঠানরা। ক্রিকেট ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে তুলনামূলক আফগানদের চেয়ে বেশ সমৃদ্ধশালী লাল-সবুজের দেশটি।
ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাও এই দেশে একেবারেই তুঙ্গে। ভারতের পর বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এই পরিমাণ ক্রিকেট উন্মাদনা বিরল। এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যথেষ্ট শক্তিশালী। এত এত সুযোগ সুবিধার পরও আফগানিস্তান শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সমকক্ষ। ব্যাপারটি দেশের দর্শকবৃন্দের কাছে খানিকটা অপমান সুলভ লাগতেই পারে। তবুও সত্যকে হয়তো কিছুকাল অনীহা করা যায়। তবে অস্বীকার করা যায় কি? ওয়ানডে অঙ্গনে পা দেওয়ার এক যুগের মধ্যেই বাংলাদেশের তুলনায় ফ্রাঞ্চাইজি লীগে আফগান ক্রিকেটারদের কদর বহুগুণে বেশি। বিশ্বের এমন কোনো লীগ নেই যেখানে অনুপস্থিত পাঠানরা।
আফগানদের গর্ব রাশিদ খান, মুজিবুর রহমান মোহাম্মদ নবীরা আইপিএল, পিএসএল বিগ ব্যাশ, বিপিএল সবগুলো লীগই চড়ে বেড়াচ্ছেন। এতগুলো লীগে বাংলাদেশের এক সাকিব ছাড়া কেউ খেলেনি। এছাড়া আফগানদের স্পিন আক্রমণ যে শুধু ভালো তা নয়। রীতিমতো বিশ্বসেরা, এই কথা তো বেশ আগে থেকেই অকপটে স্বীকার করতে হচ্ছে। এমনকি স্পিন আক্রমণের ক্ষেত্রে আদর্শ ভারতকেও হয়তো ছাপিয়ে গিয়েছে পাঠানরা। তাই বলাই বাহুল্য আফগানদের উন্নতির গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। এবং তাদের এই ঊর্ধ্বমুখী যাত্রা যেন হচ্ছে আলোর গতির চেয়েও দ্রুতগামী। তাই দ্রুতগামী দলটি বিশ্বকাপে হয়তো হয়ে উঠবে আরও বেশি অপ্রতিরোধ্য।
বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য কিংবা সৌভাগ্য, এই আফগানদের বিপক্ষেই নিজেদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করতে হচ্ছে। তুলনামূলক অনভিজ্ঞ দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করায় হয়তো খানিকটা ভাগ্য সহায়ক হয়েছে টাইগারদের। আবার এই অনভিজ্ঞ দলের কাছে হারার ফলস্রুতিতে পুরো বিশ্বকাপ অভিযানটি হয়তো হয়ে যেতে পারে ব্যর্থতায় নিমজ্জিত। তাই সৌভাগ্য নাকি দুর্ভাগ্য সেটি তো ম্যাচের পরই বোঝা যাবে। তবে এই কথা মেনে নিতেই হবে মানসিকভাবে হলেও বিশ্বকাপে আফগানরা থাকবে কিছুটাই গিয়ে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে আফগানদের তুলনায় এখনো বেশ ভালো ওয়ানডে দল বাংলাদেশ। আফগানদের বোলিং হয়তো অতিমাত্রায় সুসজ্জিত। তবে বাংলাদেশের পেস আক্রমনও বা কম কি? তার চেয়ে বড় কথা টাইগাররা প্রায় সব বিভাগেই ভারসাম্যপূর্ণ। নির্দিষ্ট কোন একটি বিভাগ টাইগারদের শক্তির কিংবা দুর্বলতার জায়গা নয়। ফলশ্রুতিতে কন্ডিশনের উপরও তেমন নির্ভরতা নেই লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। তবে তুলনামূলক অনভিজ্ঞ এবং আন্ডারডগ হওয়ায় একেবারেই চাপমুক্ত থাকবে আফগানরা। ফলে কৌশলে খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও মানসিকতায় যেন এক পা এগিয়েই রয়েছে তারা। তবে আফগানদের বিশ্বকাপ রেকর্ড কিন্তু একেবারেই আশানুরূপ নয়।
সবে মাত্র দুটি বিশ্বকাপ খেলা আফগানরা, নিজেদের এই দুই আগমনে জিতেছে মাত্র একবার। সেটিও দুর্বল স্কটিশদের বিপক্ষে। অর্থাৎ এখনো টেস্ট খেলুড়ে কোন দেশের বিপক্ষে বিশ্বকাপে জয়ের দেখা মেলেনি পাঠানদের। তবু আফগানরা যেই গতিতে এগোচ্ছে সেখানে অতীতের কোন ঠাই নেই। তাই বিগতবার কোন ম্যাচ জিততে না পারা আফগানরাই হয়তো খেলে ফেলছে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। এমন হওয়ার সম্ভাবনাও পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই মানসিকভাবে চাঙ্গা আফগানদের রুখে দিতে হবে কৌশলী টাইগারদের। পারবেন কি তারা? পারতে তো হবেই। ঐতিহ্যশীল দল বলে কথা।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর
- এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা
- নবম বেতন কাঠামো আসছে ৩ ধাপে, সুবিধা শুরু ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে
- নবম পে স্কেল: পর্দার আড়ালে উচ্চপর্যায়ের তৎপরতা, চূড়ান্ত কাঠামো নিয়ে গোপন প্রস্তুতি
- পে স্কেল ডেডলাইন শেষ, কর্মচারীদের আন্দোলন নিয়ে যা বলছে কমিশন
- ব্রাজিল বনাম বাংলাদেশ: লাতিন বাংলা সুপার কাপের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি ঘোষণা
- পে-স্কেল চূড়ান্তের পথে: 'আকাশচুম্বী নয়, বাস্তবসম্মত বেতন কাঠামো'র সুপারিশ
- বিমানবন্দরে তারেক রহমানের ভিডিও, যা জানা গেল
- পে-স্কেল নিয়ে অচিরেই চূড়ান্ত সুপারিশ
- ৭০ সচিবের মতামত চূড়ান্ত: নবম পে-স্কেলের সুপারিশ আসছে ডিসেম্বরে
- টিউলিপের কারণেই দেশে আসতে পারছেন না তারেক রহমান
- আজকের সোনার বাজারদর: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
- খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থার নিয়ে যা জানাল বিএনপি
- নবম পে স্কেল নিয়ে অনিশ্চয়তা: সর্বশেষ যা জানা গেলো
- তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে যে তথ্য দিলেন মির্জা ফখরুল
