ড. ইউনুস পদত্যাগ করলে যে সংকটে পড়বে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন চলছে টানটান উত্তেজনা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। দেশের টালমাটাল রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই গুঞ্জন যেন এক ধরনের উদ্বেগের ঝড় তুলেছে সাধারণ মানুষের মনেও। প্রশ্ন উঠছে— সত্যিই যদি ড. ইউনূস সরে দাঁড়ান, তবে কি চরম সঙ্কটে নিমজ্জিত হবে বাংলাদেশ?
জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস। শুরুতে তার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ছাত্রনেতাসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের আস্থা পেলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই আস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এখন সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব, সমন্বয়হীনতা এবং ব্যর্থতার অভিযোগ তুলছে।
সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে ড. ইউনূসের পদত্যাগের সম্ভাবনা। বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো এ আলোচনা গণমাধ্যমে আসে, যার পরপরই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। একের পর এক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন— যদি এই মুহূর্তে ড. ইউনূস পদত্যাগ করেন, তাহলে বাংলাদেশ এক ভয়াবহ রাজনৈতিক শূন্যতার মুখে পড়বে।
জাতীয় দৈনিক যুগান্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুবুল্লাহ বলেন, "এই মুহূর্তে ড. ইউনূসের পদত্যাগ হলে তা দেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।" তিনি মনে করেন, এখনো পর্যন্ত দেশে এমন রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি হয়নি, যা এই সংকট মোকাবিলা করতে পারে। তাঁর ভাষায়, এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী শক্তি, বিশেষ করে ভারতীয় আধিপত্যবাদ রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করতে পারে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সংগঠন ‘সুজন’-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ড. ইউনূস যদি পদত্যাগ করেন, তাহলে দেশ কার্যত অকার্যকর রাষ্ট্রে রূপ নিতে পারে। এই অস্থিরতার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এই প্রজন্মকে বহন করতে হবে।”
তিনি আরও সতর্ক করেন যে, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন এবং আস্থাহীনতা বাড়তে থাকলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে এবং বিরোধী পক্ষগুলো এই দুর্বলতা কাজে লাগাতে পারে।
ড. ইউনূসের সরকারের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, যেমন করিডর ইস্যু ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তীব্রভাবে বিরোধিতা করেছে। এসব ঘটনায় সরকারের নিরপেক্ষতা ও স্বার্থরক্ষার প্রশ্ন উঠেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তার অন্যতম কারণ উপদেষ্টাদের একাংশের নির্লিপ্ত মনোভাব। যারা পূর্ববর্তী স্বৈরশাসনকালেও নীরব ছিলেন, তারা এখনো সরকারের কর্মকাণ্ডকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে পারছেন না।”
বিশ্লেষকদের অভিমত, এখন আর কার দোষ সেই বিতর্কে না গিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে একটি সমাধানের পথে এগিয়ে আসতে হবে। তবে ড. ইউনূস যদি সত্যিই পদত্যাগ করেন, তা শুধু একটি সরকারের সংকট হবে না— পুরো দেশ এক অনিশ্চয়তা, ভয়াবহতা এবং রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে পড়ে যাবে।
এখন সময় পদত্যাগ নয়— সময় রাজনৈতিক সংলাপ, সমঝোতা এবং জাতীয় স্বার্থে ঐক্যের।
সিদ্দিকা/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- রেলগাড়ি থেকে ঝুলিয়ে ফেলে দেওয়া: ভাইরাল ভিডিওর নেপথ্যে কী ঘটেছিল
- ৩টি শর্তে সিদ্ধান্ত বদলালেন ড. ইউনূস
- ভোক্তা অধিকারের আব্দুল জব্বার মন্ডলের উপর হামলা, সত্যতা নিয়ে যা জানা গেল
- বাংলাদেশের বাজারে আজ এক ভরি সোনা ও রূপার দাম
- সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বেতন বাড়লো সরকারি চাকরিজীবীদের
- নতুন অর্থবছরে মহার্ঘ ভাতা আসছে, নিশ্চিত করলেন অর্থ উপদেষ্টা
- বাংলাদেশে ধেয়ে আসছে বন্যা, ডুবে যেতে পারে ৪ জেলা
- পরীমণির মৃত্যুর গুজব: সত্যিটা কী!
- নতুন হারে মহার্ঘ ভাতা: কোন গ্রেডে কত বাড়ছে!
- যদি এই ৪টি আলামত থাকে, বুঝবেন আল্লাহ আপনাকে খুব ভালোবাসেন
- গ্রামের গোপন কারখানায় তৈরি হচ্ছে অনুমোদনহীন শিশুখাদ্য
- জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন ড. ইউনুস
- মমতাজের বাড়ি থেকে ৯০০ কোটি উদ্ধারের ভিডিও আসলে কী
- কক্সবাজারে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে যা জানা গেছে
- বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল জাতিসংঘ