হাসিনার ভবিষ্যৎ ভারতে: গৃহবন্দী নাকি বিদায়!
নিজস্ব প্রতিবেদক: দিল্লির অভিজাত এলাকার একটি ফ্ল্যাটে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর কড়া পাহারায় কার্যত গৃহবন্দী জীবন কাটাচ্ছেন একসময়ের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা এই স্বৈরাচারী শাসক এখন শুধু খবরের বিষয় নন, বরং ভারতের জন্য একটি বড় রাজনৈতিক সমস্যা। ভারত তাকে রাখতে চাইছে না, আবার সরাসরি কিছু বলছেও না। একসময় যাকে দিল্লি সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র বলতো, আজ তাকে নিয়েই অস্বস্তিতে মোদি প্রশাসন।
দিল্লির নজরবন্দী শেখ হাসিনা: যোগাযোগের অভাব ও দলের হতাশা
বর্তমানে শেখ হাসিনা দিল্লিতে কার্যত গৃহবন্দী। বাংলাদেশের কোনো রাজনীতিবিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই। এমনকি তার দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও তার নাগাল পাচ্ছেন না। তিন সপ্তাহ আগে লন্ডন থেকে ভারতে এসে ড. হাছান মাহমুদ দেখা করার অপেক্ষায় থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। দলের ভেতরের সূত্র বলছে, ওবায়দুল কাদেরও দেখা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভারতের কৌশলগত অবস্থান: নতুন সরকারকে স্বীকৃতি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের চ্যালেঞ্জ
ভারতের অবস্থান এখন কৌশলগত এবং পরিষ্কার। তারা শেখ হাসিনার অধ্যায়কে ইতিহাসে পাঠাতে চায়। মুখে কিছু না বললেও, কার্যত নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তারা স্বীকৃতি দিয়ে ফেলেছে। তবে, সম্পর্ক এখনো মধুর হয়নি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে তারা গ্রহণ করলেও, ব্যবসা-বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা, সীমান্তে উত্তেজনা, চিকিৎসা ভিসা বন্ধ—সব মিলিয়ে সম্পর্ক এখন বরফে ঢাকা।
ভারতের এই দোদুল্যমান নীতির কারণে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের এক অন্ধকার অধ্যায় শুরু হয়েছে। কূটনৈতিক স্তরে নীরবতা এখন নিয়মিত। সীমান্তে পুশ ইন বাড়ছে, গোলাগুলির ঘটনাও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। দিল্লিতে নতুন কূটনীতিক পাঠানো হলেও তিনি এখনো প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন না।
ভুল কৌশল ও ভবিষ্যতের পথ: ভারত কি আস্থা হারিয়েছে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের বড় ভুল ছিল আওয়ামী লীগকেই একমাত্র ভরসা হিসেবে দেখা এবং বিকল্প ভাবনার অনুপস্থিতি। ১৫ বছর পর যখন হাসিনা সরকার পড়ল, তখন ভারতও যেন ধাক্কা খেল। নরেন্দ্র মোদী এবং তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন পরিস্থিতি সামাল দিতে চাচ্ছে ধাপে ধাপে। কিন্তু ভারতের মনোভাব এখন একেবারেই বাস্তববাদী। তারা শেখ হাসিনাকে নয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে নিয়ে ভাবছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন আলোচনা, শেখ হাসিনা কি আর ফিরতে পারবেন নাকি ভারত তাকে নিঃশব্দে বিদায় দেওয়ার পরিকল্পনায় ব্যস্ত। বাংলাদেশে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত নতুন সরকার এখনো স্থিতিশীল নয়। কিন্তু তারা চেষ্টা করছে অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে। এমন অবস্থায় ভারতের চাওয়া অন্তত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, যেখানে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হবে।
কিন্তু ভারত যে নিজেই আজ আস্থা হারিয়েছে, সেটা তাদের কূটনৈতিক ভাষা নয়, তাদের কৌশল বলছে। শেখ হাসিনাকে এখন আর তারা সরাসরি স্পর্শ করছে না। অতীতের সম্পর্ক ভুলে কেবল সামনের দিকে তাকাতে চাইছে তারা।
হাসিনা ও ভারত: এক বিব্রতকর অধ্যায়ের সমাপ্তি?
এই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার ভূমিকা ইতিহাসে কীভাবে লেখা হবে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। কিন্তু এটুকু নিশ্চিত, ভারত ও হাসিনা—উভয় পক্ষই এখন পরস্পরের কাছে বিব্রতকর অধ্যায়। একসময়কার মিত্রতা আজ দুই পক্ষের মাথা ব্যথার কারণ। হাসিনা আজ ভারতের রাজনৈতিক বোঝা, আর ভারত বাংলাদেশের জনগণের চোখে হয়ে উঠেছে এক দালালি শক্তি, যারা দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিল, শেষমেষ ব্যর্থ হয়েছে।
গল্পটি এখানেই শেষ নয়, বরং শুরু হতে যাচ্ছে এক নতুন অধ্যায়, যেখানে দিল্লির ছায়া থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ খুঁজবে নতুন পথ। আর শেখ হাসিনা থাকবেন ইতিহাসের এক প্রান্তিক পাতা জুড়ে, যেখানে লেখা থাকবে, বিশ্বাস আর কৌশল যদি মিলেও যায়, তবুও স্বৈরাচারকে ছেড়ে দেয় তার মিত্রও।
আয়শা/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- পে-স্কেল নিয়ে সর্বশেষ সুখবর যা জানা গেল
- পে-স্কেল নিয়ে সবশেষ ঘোষণা: যা জানা গেল
- পে-স্কেল নিয়ে উত্তেজনা: সবশেষ পরিস্থিতি কি?
- আজকের স্বর্ণের বাজারদর: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
- ওসমান হাদির সবশেষ অবস্থা জানালেন চিকিৎসক
- ওসমান হাদী গুলিবিদ্ধ : সিসিটিভি ফুটেজে যা মিললো
- হাদির ওপর হামলা কারছে কে, জানালেন আইজিপি
- জানা গেল হাদির ওপর হামলাকারীকে নিয়ে আঁতকে ওঠার মতো তথ্য
- ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ: যা জানা গেলো
- আসছে ভয়াবহ শৈত্যপ্রবাহ, কাঁপবে যেসব জেলা
- আজকের স্বর্ণের বাজারদর: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
- ৩৬ বাংলাদেশি পেলেন ভারতের নাগরিকত্ব: তালিকায় আছেন যারা
- দেশের বাজারে আজ এক ভরি সোনার দাম
- আজকের সকল টাকার রেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
- ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরতে হবে তারেক রহমানকে
