জেলখানায় আ.লীগ নেতার 'গোপন পরিকল্পনা' ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদন: কারাগারে থেকেই মোবাইল ফোনে দলীয় ও অপরাধী চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু—এমন বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস হওয়ার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে প্রশাসনসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে।
কারা সূত্র জানায়, ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় নিয়মিতভাবেই মোবাইল ব্যবহার করতেন মিন্টু। শুধু তৃণমূল নেতাকর্মী নয়, অপরাধ জগতের চিহ্নিত কিছু সদস্যের সঙ্গেও ছিল তাঁর সরাসরি যোগাযোগ। অভিযোগ আছে, এই অনিয়মে কারা কর্মকর্তাদের একটি অংশের সহায়তা পেয়েছেন তিনি, বিনিময়ে ঘুষ ও মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনের কথাও উঠে এসেছে।
স্থানীয়রা বহুদিন ধরেই আঁচ করতে পারছিলেন মিন্টুর এই সুবিধাপ্রাপ্তির বিষয়টি। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব ও ভয়ের কারণে কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ তাকে গোপনে অন্য একটি কারাগারে স্থানান্তর করেছে।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের জেল সুপার আবু ইউসুফ জানান, “আমি আসার আগেই বন্দি মোবাইল ব্যবহার করেছেন বলে শুনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তদন্তের পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে কীভাবে একজন বন্দি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন—এই প্রশ্নে তিনি স্পষ্ট উত্তর দেননি।
উল্লেখ্য, সাইদুল করিম মিন্টু ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে অপহরণ ও হত্যার মামলায় বর্তমানে কারাবন্দি। ২০২৪ সালের ১১ জুন তাকে ঢাকার ধানমণ্ডি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তে উঠে আসে, ভারতে একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে সাবেক এমপিকে হত্যা করে মরদেহ গুম করা হয়।
সাইদুল করিম মিন্টু একসময় ঝিনাইদহ পৌরসভার তিনবারের মেয়র ছিলেন। একই সঙ্গে ২০১৫ ও ২০২২ সালে টানা দুই মেয়াদে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন তিনি। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সময়ের পর সময় উঠেছে খুন, চাঁদাবাজি, সোনা পাচার, জমি দখলসহ অন্তত ছয়টি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ।
বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল করে বাগানবাড়ি নির্মাণ, শহরের বাণিজ্যিক এলাকায় জমি দখল করে বিপণিবিতান গড়ে তোলা এবং ঢাকাসহ বিদেশে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যদিও এসব অভিযোগ তদন্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্র বলছে, মিন্টু আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একটি অংশের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পালাবদলে তাঁর অবস্থান নিয়ে এখন দলে নানা আলোচনা চলছে।
২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে সংঘটিত একাধিক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে তাঁর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আছে। এর মধ্যে রয়েছে—
* ২০১৪: শ্রমিক নেতা আব্দুল গফফার বিশ্বাস হত্যা
* ২০১৫: তরিকুল ইসলামকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা
* ২০২১: খাজুরা ইউনিয়নে আবন হত্যাকাণ্ড
* ২০২২: সরকারি কলেজছাত্র ভিপি মুরাদসহ দুই শিক্ষার্থীর নৃশংস হত্যা
এছাড়া বিরোধী দলগুলোর কার্যালয়ের জমি দখল করে সেখানে শপিং কমপ্লেক্স গড়ে তোলা এবং ‘বাগানবাড়ি’ নির্মাণের মতো কর্মকাণ্ড নিয়ে বিস্তর আলোচনা রয়েছে।
এই ঘটনায় শুধু একজন রাজনীতিবিদের অনিয়মই নয়, বরং গোটা দেশের কারা ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার—সবকিছুর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়েই বড় প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দল—দুয়ের জন্যই এটি একটি শক্ত বার্তা।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- দাম কমিয়ে আজ থেকে নতুন দামে এলপি গ্যাস
- সকালে যে আম্মা ডাকে রাতে ক্ষুধা মিটাতে বিছানায় ডাকে
- বাংলা ৬ সিনেমায় বাস্তবেই সহবাস করতে হয়েছে নায়ক-নায়িকার
- দুই সপ্তাহ আগে শেখ রেহানা বাংলাদেশে এসেছেন! সত্য মিথ্যা যা জানা গেল
- বিসিবিতে মাশরাফির চমক, আলোড়ন ক্রিকেট অঙ্গনে!
- বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধ হল যেসব দেশে
- ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করলেন হিরো আলম
- নতুন বাজেটে বাড়ল বয়স্ক ভাতা বিধবা ভাতাসহ সকল ভাতা
- আজ ১৮, ২১, ২২ ক্যারেট ১ ভরি সোনার দাম কত
- একলাফে কমে গেল সয়াবিন তেলের দাম!
- লাফিয়ে কমে গেল এলপিজি গ্যাসের দাম
- ৯৯% মুসলমানদের দেশে এবার পশু কোরবানি নিষিদ্ধ
- ফরজ গোসল দেরিতে করলে কি গুনাহ হয়!
- নতুন বাজেটে যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে
- বিসিবিতে মাশরাফির চমক উপস্থিতি, কাঁপছে ক্রিকেট অঙ্গন!