নতুন পে স্কেল আসছে, বেসরকারি চাকরিজীবীদেরও কি মিলবে সুখবর

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নবম পে কমিশন এখন নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে এনেছে। কমিশন বর্তমানে সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করছে, যাতে তাদের প্রস্তাব ও যৌক্তিক দাবি অন্তর্ভুক্ত করা যায়। আশা করা হচ্ছে, চলতি মাসের মধ্যেই এসব আলোচনা শেষ করে আগামী বছরের শুরুতেই চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেবে কমিশন।
তবে সরকারি কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণ পর্যন্ত বাড়ার সম্ভাবনার খবরে যেমন আনন্দ ছড়িয়েছে সরকারি খাতে, তেমনি বেসরকারি খাতের কোটি চাকরিজীবীর মনে দেখা দিয়েছে নতুন উদ্বেগ। অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, সরকারি বেতন বাড়লে তার প্রভাবে বাড়তে পারে বাড়িভাড়া, খাদ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসার খরচ— প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে স্থির বেতনে থাকা বেসরকারি চাকরিজীবীরা পড়তে পারেন চরম আর্থিক চাপে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেহেদি হাসান মনে করেন, সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও একটি সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো থাকা জরুরি। তিনি বলেন, “বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কারো বেতন অনেক বেশি, আবার কারো অল্প। তাই একটি ন্যায্য কাঠামো দরকার, যাতে সবাই অন্তত ন্যূনতম মানবিক জীবনযাপন করতে পারে।”
মেহেদি আরও বলেন, “সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়া ইতিবাচক, তবে বাজারদর নিয়ন্ত্রণ না হলে বেসরকারিদের জন্য সেটা হবে বিপর্যয়। বেতন বাড়ানোর পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
তিনি বেসরকারি কর্মীদের প্রাপ্ত ছুটি ও অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার ভাতা নিশ্চিতেরও দাবি জানান। তার অভিযোগ, “বেসরকারি খাতে অনেক সময় সরকারি ছুটির দিনও মানা হয় না। আবার বাড়তি সময় কাজ করলেও ভাতা দেওয়া হয় না। এসব বিষয়ে সরকার যদি খাতভিত্তিক নীতিমালা দেয়, তাহলে কর্মজীবীরা উপকৃত হবেন।”
এফবিসিসিআই-এর মহাসচিব মো. আলমগীর বলেন, “আমরা সরকারি-বেসরকারি বিভাজন নয়, মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে জীবনমান উন্নয়নের পক্ষে। একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য যে ন্যূনতম বেতন প্রয়োজন, সেটি নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। না হলে বৈষম্য ও দুর্নীতি বাড়বে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “বিদেশি কর্পোরেট সেক্টরে বেতন কাঠামো তুলনামূলক ভালো হলেও দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা এখনও দুর্বল। অর্থনৈতিক অবকাঠামো যত উন্নত হবে, তত এই বৈষম্য কমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রতিবছর বেতন বাড়ানো উচিত।”
কমিশনের এক সদস্য জানিয়েছেন, সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের বিষয়টিও কমিশনের নজরে রয়েছে। কমিশনে বেসরকারি প্রতিনিধি থাকায় তাদের প্রস্তাবকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। যদি বেসরকারি খাতের জন্য বিশেষ সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়, কমিশন তা আলোচনা করে বিবেচনায় নেবে।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রস্তাব অনুযায়ী, দেশে সর্বনিম্ন বেতন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় উন্নীত করা উচিত বলে মত দিয়েছে এফবিসিসিআই।
নতুন পে স্কেলে সরকারি কর্মচারীদের আয় বাড়লেও, তার প্রভাব পুরো অর্থনীতিতে পড়বে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন— “শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি খাতের কর্মীদের জন্যও সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো নির্ধারণ এখন সময়ের দাবি।”
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- নতুন পে-স্কেলের অনুমোদন চুড়ান্ত: কোন গ্রেডে কত টাকা বেতন বাড়ল
- সরকারি কর্মচারীদের বাড়বে বেতন বাতিল হবে যেসব সুবিধা
- সরকারি কর্মকর্তাদের সর্বনিম্ন বেতন ২৫ হাজার, সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা
- যে মাস থেকে কার্যকর হবে নতুন পে-স্কেল
- ১০ বছরে স্বর্ণের দামে সবচেয়ে বড় ধস
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শনিবারের ছুটি বাতিল
- হঠাৎ কেন ১০ বছরের সর্বনিম্ন ধস নামল স্বর্ণের দামে
- রেকর্ড গড়ার পরই বড় ধস! সোনার দামে হঠাৎ বড় পতন
- নতুন পে স্কেলে বাড়ল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ ভাতা
- আবারও সোনার দামে বিশাল বড় পতন
- পে স্কেলের প্রতিবেদন দাখিল নিয়ে সর্বশেষ তথ্য জানাল বেতন কমিশন
- দেশের বাজারে আজকের স্বর্ণের দাম
- বাড়ল বাড়িভাড়া: চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা নিয়ে যা জানাল মন্ত্রণালয়
- বাংলাদেশের বাজারে আজ যে দামে বিক্রি হবে সোনা
- এ মাসেই শেষ হচ্ছে পে কমিশনের আলোচনা, কবে আসছে বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ