রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া টাকা: শরীয়তের বিধান ও শায়খ আহমাদুল্লাহর ব্যাখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া টাকা বা কোনো মূল্যবান জিনিসকে ইসলামী পরিভাষায় 'লুকতা' (لُقَطَة) বলা হয়। এটি একটি আমানত, যা খুঁজে পাওয়া ব্যক্তির উপর কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য আরোপ করে। অনেকেই মনে করেন, কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ব্যবহার করলে তিনগুণ ফেরত দিতে হয়। শায়খ আহমাদুল্লাহর বক্তব্য অনুযায়ী, এই ধারণাটি সরাসরি সহীহ হাদীস দ্বারা সমর্থিত নয়, বরং এর ব্যাখ্যা ও বিধান ভিন্ন।
লুকতা (কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস) কী?
লুকতা হলো এমন কোনো মাল, যা হারিয়ে গেছে এবং তার মালিক কে, তা জানা নেই। এটি কুড়িয়ে পাওয়া ব্যক্তির কাছে এক প্রকার আমানত।
লুকতা বিষয়ক শরয়ী বিধান:
শায়খ আহমাদুল্লাহ এবং অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের মতে, লুকতার ক্ষেত্রে মৌলিক বিধানগুলো হলো:
১. ঘোষণা করা (ই'লান): কুড়িয়ে পাওয়া জিনিসটি প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে হবে। এর উদ্দেশ্য হলো প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করা। হাদীস অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন যে, এমন বস্তু এক বছর পর্যন্ত ঘোষণা করতে হবে। সাধারণত, এমন জায়গায় ঘোষণা করতে হবে যেখানে জিনিসটি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি, যেমন— যেখানে পাওয়া গেছে তার আশেপাশে, অথবা স্থানীয় মসজিদ, বাজার বা জনসমাগমের স্থানে মাইকিং করে। বর্তমান যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, স্থানীয় পত্রিকা বা অনলাইন গ্রুপও ঘোষণার মাধ্যম হতে পারে।
২. রক্ষণাবেক্ষণ: জিনিসটি এমনভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যেন তার কোনো ক্ষতি না হয়। এটি আমানত হিসেবে বিবেচিত হবে।
৩. মালিকানা নির্ধারণ: এক বছর ঘোষণার পরও যদি আসল মালিক না পাওয়া যায়, তাহলে কুড়িয়ে পাওয়া ব্যক্তি সেই জিনিসের মালিক হতে পারবে।
৪. ব্যবহারের অনুমতি: মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কুড়িয়ে পাওয়া ব্যক্তি সেই জিনিসটি ব্যবহার করতে পারবে। তবে শর্ত হলো:
* নিয়ত: তার নিয়ত থাকবে, যদি কোনোদিন আসল মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়, তাহলে তাকে ফেরত দেবে অথবা তার সমপরিমাণ মূল্য পরিশোধ করবে।
* ফেরতের বাধ্যবাধকতা: যদি মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর জিনিসটি ব্যবহার করা হয় এবং পরবর্তীতে আসল মালিক এসে তার জিনিসের দাবি করে, তাহলে কুড়িয়ে পাওয়া
ব্যক্তিকে তা ফেরত দিতে বাধ্য থাকতে হবে। যদি জিনিসটি ব্যবহার হয়ে যায়, তাহলে তার মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
তিনগুণ ফেরত দেওয়ার ধারণা:
"রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ব্যবহার করলে তিন গুণ দিতে হয়" – এই প্রচলিত ধারণাটি সরাসরি কোনো সহীহ হাদীসের ভিত্তিতে আসেনি। সম্ভবত, এটি একটি সতর্কতামূলক বা বাড়িয়ে বলা কথা, যা লোকমুখে প্রচলিত হয়েছে মানুষকে আমানতের প্রতি যত্নশীল করার জন্য। ইসলামী শরীয়তে কোনো গুনাহর জন্য শাস্তির বিধান সুনির্দিষ্টভাবে কোরআন ও হাদীসে উল্লেখ থাকে। কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস ব্যবহার করার অপরাধে তিনগুণ ফেরত দেওয়ার কোনো বিধান পাওয়া যায় না।
তবে, যদি কেউ লুকতা পাওয়ার পর তা আত্মসাৎ করে, ঘোষণা না করে নিজের কাজে লাগিয়ে দেয় এবং পরবর্তীতে মালিক পাওয়া গেলে অস্বীকার করে, তাহলে এটি আত্মসাতের গুনাহ। এটি সাধারণ গুনাহ নয়, বরং এটি অন্যের হক নষ্ট করার শামিল, যা আল্লাহ তা'আলা সহজে ক্ষমা করেন না। এর জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে জবাবদিহি করতে হবে।
আশা/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ছে, সর্বনিম্ন ৪ হাজার, সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৮০০ টাকা
- মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার নতুন মোড়, বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য!
- নির্বাচন নিয়ে সিইসির সম্ভাব্য সময়সূচী
- প্রকাশ্যে পাথর মারার ঘটনায় ছাত্রদল নেতা রবিনের দায় স্বীকার, যা জানা গেল
- নৃশংস সেই ঘটনায় জড়িতরা শনাক্ত, মিলল ২ জনের পরিচয়
- ধারের টাকা ফেরত পাচ্ছেন না! জেনে নিন কার্যকর কৌশল
- বাংলাদেশের বাজারে আজ এক ভরি সোনার দাম কত
- পায়ের যে লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার ডায়াবেটিস!
- বাংলাদেশের স্পর্শকাতর প্রতিরক্ষা তথ্য কি ভারতে পাচার হচ্ছে!
- শ্রীলঙ্কা কোচের মুখে তানজিদ তামিমের প্রশংসা: ৪৭ বলে ৭৩ রানের ঝলক
- গোপালগঞ্জের 'আবু সাঈদগঞ্জ' নামকরণের প্রস্তাব
- বাংলাদেশে আজ সোনার দাম কমেছে
- অবশেষে নির্মম ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন সোহাগের স্ত্রী
- ৬টি রোগ থাকলেনই বুঝবেন আপনি জান্নাতি
- সারা দেশে ১০ দিনের ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা!