কোটা আন্দোলন থেকে যেভাবে সরকার পতন: ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়
বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। ছাত্রদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে একটি সরকার পতনের ঘটনাও ঘটেছিল। তবে, প্রশ্ন হচ্ছে—কোটা সংস্কার আন্দোলন কি শুধুমাত্র একটিই ঘটনা ছিল, যা শেখ হাসিনার সরকার পতনের কারণ হয়ে দাঁড়াল?
১৯৭২ সালে সরকারি চাকরিতে প্রথম কোটা প্রবর্তিত হয় এবং পরবর্তী বছরগুলোতে এটি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে ৫৬% কোটা নির্ধারণ করা হয়, যার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, নারী কোটা, জেলা কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, ২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত চাকরিপ্রার্থী অনেকেই এই কোটা ব্যবস্থাকে অসঙ্গতিপূর্ণ মনে করেন। কারণ, সিংহভাগ চাকরিপ্রার্থীর জন্য প্রতিযোগিতার সুযোগ ছিল মাত্র ৪০% আসনের জন্য।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামেন। তাঁদের দাবিটি ছিল—মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগ হওয়া উচিত। সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে তারা নিজেদের অনুগত লোকদের নিয়োগ দিচ্ছেন, যা দেশের জন্য ক্ষতিকর। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ছিল, কিন্তু সরকার তাদের দাবির প্রতি সাড়া দেয়নি এবং পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশের টিয়ার শেল ও লাঠিচার্জের পর ছাত্রদের আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে এবং সামাজিক মাধ্যমে সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়।
পরিস্থিতি যখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছায়, তখন শেখ হাসিনা সরকার কোটা ব্যবস্থা বাতিল করার ঘোষণা দেন। কিন্তু, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে আবার কোটা পুনর্বহাল করা হয়। এরপর, ছাত্র আন্দোলন আবার শুরু হয় এবং সারা দেশে দাবির পক্ষে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেন। সরকারের মন্ত্রীরা তাঁদের ধৈর্য ধরার জন্য বলেন এবং অভিযোগ করেন যে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে প্রক্রিয়াধীন।
শেখ হাসিনা যখন কোটা আন্দোলনকে রাজাকারদের সন্তানদের আন্দোলন বলে উল্লেখ করেন, তখন আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সরকারী সন্ত্রাসী দলগুলো হামলা চালায় এবং দেশব্যাপী সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা সারা দেশে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সারা দেশের স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে, এবং এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে শুধুমাত্র কোটা আন্দোলন একটি সরকারের পতন ঘটাতে পারে? আসলে, এই আন্দোলনের পেছনে ছিল সাধারণ জনগণের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ এবং সরকারের বিরুদ্ধে চলমান নীতি ও দুর্নীতির প্রতিবাদ। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, সীমাহীন দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড—এসব বিষয় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছিল। কোটা আন্দোলন এই ক্ষোভের আগুনে শেষ পৌঁছানোর এক জ্বালানি হয়ে ওঠে।
একটি দেশের স্বৈরশাসক যখন শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালায়, তখন তার পতনের সময় শুরু হয়। ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলন থেকে বাংলাদেশে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়, যেখানে ছাত্ররা তাদের রক্ত দিয়ে গণতন্ত্রের পথকে প্রশস্ত করে দেয়।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- শুরু হল বাংলাদেশ বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচ: Live দেখুন এখানে
- ৯০% বেতন বৃদ্ধির সম্ভাবনা: গ্রেড সংখ্যা ১৬ রেখে চূড়ান্ত রিপোর্ট আসছে আগামী সপ্তাহে!
- চাকরিজীবীদের জন্য পে স্কেল নিয়ে বড় আপডেট আসলো
- কিছুক্ষণ পর শুরু হবে বাংলাদেশ vs আর্জেন্টিনা ম্যাচ: Live দেখুন এখানে
- পে স্কেল: কবে বাড়ছে বেতন-ভাতা
- শেষ হল বাংলাদেশ বনাম আর্জেন্টিনার ম্যাচ; দেখুন ফলাফল
- বাংলাদেশ বনাম আর্জেন্টিনা; লাতিন বাংলা সুপার কাপ, মোবাইলে যেভাবে দেখবেন
- লাতিন সুপার কাপ: আর্জেন্টিনার সাথে ড্রয়ে বাংলাদেশ, দেখুন পয়েন্ট টেবিল
- বাংলাদেশ-আর্জেন্টিনা ম্যাচে মারামারি, লাল কার্ড ২ ফুটবলার
- আজ সন্ধ্যা ৭ টায় বাংলাদেশ vs আর্জেন্টিনা: Live দেখুন এখানে
- সন্ধ্যা ৭ টায় বাংলাদেশ vs আর্জেন্টিনার ম্যাচ ফ্রিতে দেখুন এক ক্লিকে
- পে স্কেল গেজেট সর্বশেষ তথ্য যা জানা গেল
- আজ সন্ধ্যায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ: Live দেখুন এখানে
- পে-স্কেল নিয়ে সুখবর আসছে ডিসেম্বরে মধ্যেই!
- আন্দোলনের শঙ্কায় পে-স্কেল: দ্রুত নিষ্পত্তির তাগিদ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
