ভারতে বাংলাভাষীদের 'বাংলাদেশি' তকমা: গভীর হচ্ছে উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতে বাংলাভাষীদের অন্যায়ভাবে 'বাংলাদেশি' বলে চিহ্নিত করার ঘটনা একদিকে যেমন গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে, অন্যদিকে এটি ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ভাষাগত পরিচয়ের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিষয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আবেদন জানানো পরিস্থিতিটির গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই ধরনের ঘটনার পেছনে বেশ কিছু সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে:
১. ভাষাগত পরিচয়ের সংকট:বাংলাভাষীদের ওপর এই ধরনের 'বাংলাদেশি' তকমা চাপানো ভাষার ভিত্তিতে একটি অদৃশ্য বিভেদ তৈরি করছে। এর মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে 'বিদেশি' হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে, যা ভারত ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সংবেদনশীল ভাষাগত ঐতিহ্যের পরিপন্থী।
২. রাজনৈতিক প্রভাব:মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপের পর বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়ছে। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের প্রতি এমন আচরণ রাজনীতি ও ভাষার মধ্যে ব্যবধান আরও গভীর করছে, যা রাজ্যগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজনকে ভাষাগত দিক থেকেও স্পষ্ট করে তুলছে।
৩. বাংলাদেশি অভিবাসী ইস্যু:ভারতে বাংলাভাষীদের 'বাংলাদেশি' তকমা দেওয়ার বিষয়টি দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও অভিবাসন সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে। গত কয়েক বছরে আসাম ও অন্যান্য রাজ্যে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিষয়টি বারবার রাজনৈতিক উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে।
৪. ভাষা ও সংস্কৃতির অবজ্ঞা:আসামের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য যে, "যারা বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে দাবি করবেন, তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে"—এটি একটি গভীর সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত সংকটের ইঙ্গিত দেয়। এই ধরনের মন্তব্য ভারতীয় সংস্কৃতি ও ভাষার প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞা বা তিরস্কার হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা ভারতের বৈচিত্র্যপূর্ণ ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
৫. রাজ্য সরকারের কঠোর পদক্ষেপ:উড়িষ্যায় সাড়ে ৩০০ ব্যক্তিকে আটক করা, দিল্লির বসন্তকুঞ্জ এলাকায় বাঙালি পাড়ার বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মতো ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন উদাহরণ নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর প্রবণতার অংশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের পর বিষয়টি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি:
* সামাজিক অস্থিরতা: এমন ঘটনা ভারতীয় সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সম্মান জানানো উচিত, বিভাজনের উৎস হিসেবে ব্যবহার করা নয়।
* রাজনৈতিক সুবিধা: কিছু রাজনৈতিক দল এই ধরনের ইস্যুতে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করতে পারে, বিশেষ করে স্থানীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে।
* অর্থনৈতিক অভিবাসন: অর্থনৈতিক কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভারতে আসা এই ধরনের পদক্ষেপের পেছনে একটি কারণ হতে পারে, যা স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
এই পুরো পরিস্থিতি কেবল ভাষা বা জাতিগত পরিচয়ের প্রশ্ন নয়, এটি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- যে রক্তের গ্রুপে স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি
- সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ছে, সর্বনিম্ন ৪ হাজার, সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৮০০ টাকা
- দাঁত ব্রাশ করার পরও মুখে দুর্গন্ধ! জেনে নিন ৬ সমাধান
- শেখ হাসিনা কি লন্ডন যাচ্ছেন, যা জানা গেল
- এমন বৃষ্টি আর কতদিন চলবে, জানালো আবহাওয়া অফিস
- জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জরিপে চমক: দেখে নিন বিএনপির অবস্থান
- একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ সিম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত
- কত দিনের বাচ্চা নষ্ট করলে গুনাহ হয় না
- আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বাংলাদেশকে ভিসা দিবে ৬ দেশ!
- নৃশংস সেই ঘটনায় জড়িতরা শনাক্ত, মিলল ২ জনের পরিচয়
- প্রকাশ্যে পাথর মারার ঘটনায় ছাত্রদল নেতা রবিনের দায় স্বীকার, যা জানা গেল
- বাড়ছে ক্যানসার, যেসব লক্ষণ অবহেলা করলেই বিপদ
- কার সঙ্গে কার বিয়ে হবে—এটা কি পূর্বনির্ধারিত!
- এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের তারিখ ঘোষণা
- প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন দুঃসংবাদ