৫ আগস্ট বাথরুমে লুকিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের: এক অভূতপূর্ব স্বীকারোক্তি
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি অডিও ক্লিপে শোনা যায়, আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের দিন আতঙ্কে পাঁচ ঘণ্টা ধরে একটি বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন। এই ক্লিপটি ভারতের গণমাধ্যম দ্য ওয়াল-এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়, যেখানে দ্য ওয়ালের নির্বাহী সম্পাদক অমল সরকারের সঙ্গে তার কথোপকথন রেকর্ড হয়েছে।
অডিওতে কাদের বলেন, "আমি সত্যিই ভাগ্যবান ছিলাম। সেদিন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। সংসদ ভবনের আশেপাশে আমার নিজ বাসায় না গিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিই। চারদিকে মিছিল, আগুন, ধ্বংস—সবই যেন এক বিপ্লবের ছাপ বহন করছিল।"
তিনি বলেন, "আমার মনে হয়েছিল এটি রাজনৈতিক অভ্যুত্থানের চেয়ে লুটপাটের উন্মত্ততায় পরিণত হয়েছে। আমি যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম, সেখানে হামলা হবে তা কল্পনাও করিনি। কিন্তু ওরা এসে সব ভেঙে-চুরে লুট করতে শুরু করে। আমি ও আমার স্ত্রী বাথরুমে গিয়ে লুকিয়ে পড়ি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আমরা ওখানেই ছিলাম। শেষে ওরাও বাথরুমের দরজায় এসে হামলা চালায়, ভাঙচুর করে এমনকি বাথরুমের কমোড-বেসিনও নিয়ে যায়।"
সবচেয়ে নাটকীয় মুহূর্ত আসে যখন কিছু যুবক হঠাৎ তার পরিচয় বুঝতে পারে এবং তার সঙ্গে সেলফি তোলে। তারা তখন কাদেরকে রাস্তায় নিয়ে যায়, মুখে মাস্ক পরিয়ে, বুকে লাল পতাকার ব্যাজ লাগিয়ে এক ট্যাক্সিতে তুলে দেয়। "তারা বলছিল, 'চাচা-চাচি অসুস্থ, হাসপাতালে নিচ্ছি'—এইভাবে তারা আমাদের নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেয়।"
এই অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, "যারা এক মুহূর্ত আগে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল, তারাই পরমুহূর্তে আমাদের প্রাণরক্ষা করল—এটি আমার জীবনের সবচেয়ে অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা।"
পরবর্তীতে কাদের জানান, তিনি প্রায় তিন মাস বাংলাদেশেই ছিলেন এবং দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। শ্রমিক অসন্তোষ ও সামাজিক ক্ষোভকে কেন্দ্র করে কিছু করার চিন্তাও করেছিলেন, তবে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে তাকে দেশ ছাড়তে হয়।
নিজের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, "আমি ছাত্রলীগকে অভ্যুত্থান দমন করতে বলিনি। এটা অপপ্রচার। আমি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি। তারা মেট্রোরেল, সেতু ভবন, বিটিভি—সব আক্রমণ করেছে। আমি কি চুপচাপ বসে থাকতাম?"
ভুল-ত্রুটি স্বীকারের বিষয়ে তিনি বলেন, "আমার ভুল থাকতে পারে, তবে আমি দুর্নীতি করিনি। আমি চাঁদাবাজি করিনি, কমিশন খাইনি।"
সরকার পতনের পর এতবড় ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগ দুঃখ প্রকাশ করেনি—এমন অভিযোগের জবাবে কাদের বলেন, "আমরা দেশকে যে উন্নয়ন দিয়েছি, তা তুলনাহীন। ১৫ বছরের অর্জন রাত-দিনের পার্থক্যের মতো। সময় হলে সবকিছুর মূল্যায়ন হবে।"
শেষে তিনি জানান, তার দীর্ঘ নীরবতার কারণ ছিল শারীরিক অসুস্থতা। "প্রধানমন্ত্রী নিজেই আমার খোঁজ নিয়েছেন এবং আমার অসুস্থতা নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ছিলেন।"
এই প্রথম গণমাধ্যমে মুখ খুললেন ওবায়দুল কাদের—একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক অধ্যায়ের অন্তরালের গল্প জানিয়ে গেলেন তিনি।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- পে-স্কেল নিয়ে সর্বশেষ সুখবর যা জানা গেল
- পে-স্কেল নিয়ে সবশেষ ঘোষণা: যা জানা গেল
- পে-স্কেল নিয়ে উত্তেজনা: সবশেষ পরিস্থিতি কি?
- আজকের স্বর্ণের বাজারদর: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
- ওসমান হাদির সবশেষ অবস্থা জানালেন চিকিৎসক
- ওসমান হাদী গুলিবিদ্ধ : সিসিটিভি ফুটেজে যা মিললো
- হাদির ওপর হামলা কারছে কে, জানালেন আইজিপি
- জানা গেল হাদির ওপর হামলাকারীকে নিয়ে আঁতকে ওঠার মতো তথ্য
- ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ: যা জানা গেলো
- আসছে ভয়াবহ শৈত্যপ্রবাহ, কাঁপবে যেসব জেলা
- আজকের স্বর্ণের বাজারদর: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
- ৩৬ বাংলাদেশি পেলেন ভারতের নাগরিকত্ব: তালিকায় আছেন যারা
- দেশের বাজারে আজ এক ভরি সোনার দাম
- আজকের সকল টাকার রেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
- ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরতে হবে তারেক রহমানকে
