হাত বদলেই যেভাবে ১৮০ টাকার ইন্টারনেট হয়ে যায় ৩০০ টাকা
বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতির পথচলা শুরু হয়েছিল "ডিজিটাল বাংলাদেশ" এবং "স্মার্ট বাংলাদেশ" স্লোগান দিয়ে। সরকার তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে নানা প্রকল্প গ্রহণ করলেও বাস্তবে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় তার সুফল কতটা পৌঁছেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ইন্টারনেটের সেবা, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তা প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। একদিকে সরকারের প্রচারণা এবং আইসিটি খাতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থাকলেও, দেশে ইন্টারনেটের স্পিড এখনও অনেক ক্ষেত্রেই ২জি-র নিচে রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, সরকারি অফিসে ইন্টারনেট সেবা পেতে এখনও বাধা পেতে হয় সাধারণ মানুষকে। অনেক গ্রাহকই জানেন না, ১৮০ টাকার একটি এমবি ইন্টারনেট, নানা স্তরের হাত বদলের পর গ্রাহকদের কাছে প্রায় ৩০০ টাকায় পৌঁছে যায়। একদিকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের উচ্চ মূল্য, অন্যদিকে বাড়তি ভ্যাট, ট্যাক্স ও সাপ্লিমেন্টারি ডিউটির কারণে ইন্টারনেটের খরচ বাড়ছে।
তথ্য বলছে, বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবার দাম অন্যান্য এশীয় দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। অথচ, ইন্টারনেট সেবার গুণগত মানে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। সরকারের ত্রুটিপূর্ণ নীতি এবং অসংখ্য স্তর তৈরির ফলে সাধারণ মানুষের জন্য ইন্টারনেট ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে। সরকারের অধীনে চলা এনটিএন কোম্পানিগুলি দীর্ঘদিন ধরে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে এবং জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। গত ১৫ বছরে, এই কোম্পানিগুলির লাভজনক কার্যক্রমে জনগণের কোন উপকার হয়নি, বরং তাদের দুর্বলতা বেড়েছে।
এনটিএন কোম্পানির সুবিধা এবং সরকারের স্বার্থের কারণে দেশে আইএসপি বা মোবাইল অপারেটরদের জন্য ট্রান্সমিশন লাইন তৈরি করতে দেওয়া হয়নি। এর ফলস্বরূপ, সাধারণ মানুষকে অতিরিক্ত খরচ দিয়ে ইন্টারনেট পরিষেবা গ্রহণ করতে হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে এই পরিস্থিতি চলতে থাকায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, এবং ফ্রিল্যান্সিংসহ বিভিন্ন খাতে প্রভাব পড়েছে। ইন্টারনেটের উচ্চমূল্য জনসাধারণকে ডিজিটাল বিভাজনের মুখে ফেলছে, বিশেষ করে শহর ও গ্রামের মধ্যে এটি একটি বড় পার্থক্য সৃষ্টি করেছে।
এভাবে, যদি আমরা উচ্চমানের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা গ্রামীণ এলাকাগুলিতে পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিজিটাল বিভাজন কমানো সম্ভব হবে। কিন্তু, যদি ইন্টারনেটের মূল্য কমানো না যায়, এবং স্পিড যথাযথ না হয়, তাহলে এটি শুধু শহরবাসীর জন্যই সুবিধাজনক হবে, গ্রামীণ জনগণের জন্য নয়।
এমন পরিস্থিতিতে, সরকারের উচিত একটি সঠিক পলিসি গ্রহণ করা, যেখানে প্রতিটি স্তরের ভ্যাট, ট্যাক্স ও অতিরিক্ত খরচ কমিয়ে ইন্টারনেট সেবাকে সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করা হবে। কয়েকটি স্তরের এই জটিল ব্যবস্থা অনেক বেশি কর এবং বিভিন্ন খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ১১১টি দেশের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট স্পিডে ৮৭তম এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট স্পিডে ১৫৫টি দেশের মধ্যে ১০০তম অবস্থানে রয়েছে।
এখন প্রয়োজন একটি সিম্প্লিফায়েড লাইসেন্সিং সিস্টেম এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরির, যাতে কম খরচে উচ্চমানের ইন্টারনেট সেবা সকলের কাছে পৌঁছাতে পারে। উন্নত দেশের মতো আমাদেরও একটি সহজ এবং কার্যকরী ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা প্রণয়ন করা উচিত, যেখানে মধ্যসত্ত্বভোগী ব্যবসায়ীদের সুযোগ কমিয়ে গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করা হবে।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- নতুন পে-স্কেল: কার্যকর হবে জানুয়ারি ২০২৬ থেকে
- পে-স্কেল কার্যকর নিয়ে মিললো চরম অনিশ্চয়তা
- নতুন পে স্কেলে পেনশন ও গ্র্যাচুইটিতে আসছে বড় পরিবর্তন!
- আজকের সোনার বাজারদর: ৫ নভেম্বর ২০২৫
- দেশের বাজারে আজ এক ভরি স্বর্ণের দাম
- পে স্কেলে চিকিৎসা ভাতা বেড়ে যত টাকা হতে পারে
- আজকের সোনার বাজারদর: ৬ নভেম্বর ২০২৫
- সরকারি কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধি: চূড়ান্ত প্রস্তাব আসছে জানুয়ারিতে
- আফগানিস্তান দলের হেড কোচ হচ্ছেন মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন
- আপনার ফোন বৈধ না অবৈধ; ১৬ ডিসেম্বরের আগে চেক করুন সহজে
- নতুন পে-স্কেলে কমছে গ্রেড, কোন গ্রেডে বেতন কত হতে পারে
- সরকারি কর্মকর্তাদের বড় সুখবর: ভাতা বাড়ল দ্বিগুণ
- নতুন পে স্কেল: বেতন বাড়ছে ৭০% থেকে ১০০% পর্যন্ত
- গ্রেড কমছে ২০ থেকে ১২, সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকার প্রস্তাব
- নতুন পে-স্কেলে: বেতন বাড়তে পারে ১০০% পর্যন্ত, গ্রেড কমছে ১২টি
