মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খেলেই কি মৃত্যু! জানুন ভুল ধারণা ও বাস্তবতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আমরা অনেকেই মনে করি, ওষুধের মেয়াদ ফুরোলেই তা এক ধরনের বিষ হয়ে যায়। কিন্তু সত্যিই কি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খেলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে? নাকি কেবল ওষুধের কার্যকারিতা কমে যায়? এই প্রশ্ন ঘিরে বহু ভুল ধারণা আছে। চলুন, বিজ্ঞানের আলোয় বিষয়টি পরিষ্কার করে দেখা যাক।
ঢাকায় এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় জানা যায়, তাকে দেওয়া ভিটামিন সিরাপটির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। অনেকে মনে করছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধই মৃত্যুর কারণ। কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। কারণ ১৯৯০ সালে বহু শিশু মারা যায় ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে, যা মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল না, বরং বিষাক্ত রাসায়নিকে দূষিত ছিল।
তাই সব ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মৃত্যুর কারণ—এমন ধারণা সঠিক নয়।
বেশিরভাগ সময় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ততটা ক্ষতিকর নয়, বরং কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। অর্থাৎ ওষুধটি হয়তো ঠিকভাবে কাজ করবে না, তবে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা সাধারণত কম।
তবে কিছু বিশেষ ধরনের ওষুধ মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। যেমন:
* তরল ওষুধ (সিরাপ)
* ইনসুলিন
* ইনহেলার
* নাইট্রোগ্লিসারিন
* অ্যান্টিবায়োটিক সাসপেনশন
* থাইরয়েড বা হৃদরোগের ওষুধ
এই ধরনের ওষুধ মেয়াদ শেষ হলে রাসায়নিক গঠনে পরিবর্তন হয়ে বিষাক্ত যৌগ তৈরি হতে পারে। যদিও এমন ঘটনা খুবই বিরল।
তাহলে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার কি বৈধ?
বাংলাদেশে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ ও বিক্রি বেআইনি। তবে বাস্তবে অনেক জায়গায় তা মানা হয় না। কিছু সাধারণ ওষুধ যেমন সর্দি-কাশি বা ব্যথার ওষুধ মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও স্বল্প সময়ের জন্য তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হতে পারে। তবে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ব্যবহৃত ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার না করাই ভালো।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA) এবং আর্মি মেডিকেল বিভাগ ১৫ বছর মেয়াদোত্তীর্ণ ১০০টি ওষুধ পরীক্ষা করে দেখে, ৯০ শতাংশ তখনও কার্যকর ছিল।
২০০১ সালে আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ২২ ধরনের ওষুধের ৩০০০ ব্যাচ পরীক্ষা করে দেখে, ৮৮ শতাংশ ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও প্রায় ৬৬ মাস কার্যকর থাকে।
ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, অনেক ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত নিরাপদ থাকতে পারে। তবে সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম মনে করেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ গুণগতমান হারিয়ে ক্ষতিকর হতে পারে এবং মৃত্যুঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
করণীয় কী?
* অকারণে ভয় না পেয়ে সচেতন হোন
* মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্টের পরামর্শ নিন
* অ্যান্টিবায়োটিক, ইনসুলিন, হার্টের ওষুধ, ইনহেলার বা সিরাপ মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে ব্যবহার বন্ধ করুন
* ওষুধ ঠান্ডা, শুকনো ও অন্ধকার জায়গায় সংরক্ষণ করুন
* মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ টয়লেটে নয়, ময়লার ঝুড়িতে ফেলুন
মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মানেই বিষ নয়, আবার একেবারে নিরাপদও নয়। কিছু ওষুধ কার্যকারিতা হারিয়ে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। তাই অন্ধভাবে আতঙ্কিত হওয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি অবহেলাও নয়। সচেতনতা, সঠিক তথ্য ও চিকিৎসকের পরামর্শই সবচেয়ে নিরাপদ পথ।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- যে ২ বিষয়ে বিএনপি একমত হলেই ফেব্রয়ারিতে নির্বাচন
- হঠাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য জরুরি নির্দেশনা
- সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন কত টাকা বেতন বাড়লো
- সয়াবিন তেলের দাম কমে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
- পাসপোর্ট পাবেন না যে তিন শ্রেণির লোক
- অবশেষে বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু
- সরকারি কর্মচারীদের বেতনের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা
- বাংলাদেশে ভারী বৃষ্টিপাত যেদিন থেকে
- ট্রাম্পের হুমকির পর অবিশ্বাস্য এক ঘোষণা দিলেন খামেনি
- ৭টি অভ্যাস আপনাকে কখনোই ধনী হতে দেবে না!
- বাংলাদেশে আজ ১৮, ২১, ২২ ক্যারেট সোনার দাম
- অবসর ভেঙে দলে ফিরতে পারেন বাংলাদেশের ২ ক্রিকেটার
- কালো জাদু কি সত্যিই কাজ করে!
- এবার ইসরায়েল খালি করার নির্দেশ
- যে কারনে তেহরান খালি করতে বললেন ট্রাম্প