পে স্কেল বাস্তবায়ন জানুয়ারিতে: ১৫ লাখ কর্মীর বেতন দ্বিগুণ
নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হতে পারে। এই নতুন কাঠামোয় প্রায় ১৫ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর বেতন ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে চলেছে। সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকসহ প্রায় ২২ লাখ পরিবার এর আওতায় আসবে।
এই সুবিধা ২২ লাখ পরিবারে 'আনন্দের বন্যা' বইয়ে দিলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে, যা দেশের চার কোটি বেসরকারি চাকরিজীবী পরিবারকে নতুন অর্থনৈতিক চাপে ফেলবে।
পে স্কেলের লক্ষ্য: আয় বৃদ্ধি ও রাজস্ব আদায়
নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে সরকারের ওপর প্রাথমিকভাবে বাড়তি অর্থের চাপ এলেও, অর্থ বিভাগ মনে করছে, এর সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক দিক রয়েছে:
* রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি: নতুন স্কেলে প্রায় সব সরকারি চাকরিজীবীই আয়করের আওতায় চলে আসবেন। সর্বনিম্ন বেতনভোগী (বর্তমান স্কেল ৮,২৫০ টাকা, নতুন স্কেলে ১৬ হাজার টাকার বেশি) কর্মকর্তারাও করদাতা হবেন।
* ভাতা বাতিল ও রাজস্ব লাভ: বেতনবহির্ভূত বহু ভাতা ও সম্মানী বাতিল করা হচ্ছে। এছাড়া, সরকারি আবাসন ভাড়ার হার বাড়ানো হবে, যা সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করবে।
জাতীয় পে কমিশনের সভাপতি সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান বলেন, "আমাদের হাতে সীমিত সম্পদ আছে। এর মধ্য থেকেই সর্বোচ্চ বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব থাকবে। এই কাঠামো অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয় বৃদ্ধি পাবে, যা তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াবে এবং সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।"
অর্থনৈতিক ঝুঁকি ও বেসরকারি খাতের ওপর চাপ
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা এই উদ্যোগকে জনতুষ্টিমূলক এবং ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন:
* মূল্যস্ফীতি: বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, সরকারি খাতে বেতন বাড়লে বাজারে চাহিদা বাড়বে, যা দ্রব্যমূল্যকে আরো ঊর্ধ্বমুখী করবে। দেশের প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন, যাদের আয় না বাড়লেও জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে।
* সামাজিক বৈষম্য: বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন মন্তব্য করেন, "মূল্যস্ফীতি সব শ্রেণির মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি খাতে বেতন বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ নেই। নতুন পে-স্কেলের ফলে সামাজিক বৈষম্য আরো গভীর হবে।"
* সরকারের ওপর চাপ: বিশ্লেষকদের মতে, অনির্বাচিত সরকার ২২ লাখ পরিবারকে সুবিধা দিতে গিয়ে যে বাড়তি অর্থের জোগান নিশ্চিত করবে, তার চাপ (প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ করের মাধ্যমে) সাধারণ মানুষের ওপর পড়বে এবং তা নবনির্বাচিত সরকারের ঘাড়ে যাবে।
বাস্তবায়ন ও আইনি প্রক্রিয়া
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নিশ্চিত করেছেন যে, নতুন বেতন কাঠামো অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের মধ্যেই গ্যাজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে এবং এর জন্য পরের রাজনৈতিক সরকারের অপেক্ষা করা হবে না। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে স্কেল বাস্তবায়নের জন্য অর্থের বরাদ্দ দেওয়া হবে।
সিদ্দিকা/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- পে স্কেল চূড়ান্ত: বেতন বাড়ার আগে জিএমপিএস চালু
- নবম পে স্কেল কার্যকর হবে জানুয়ারিতে: অর্থ উপদেষ্টা
- নবম পে স্কেলে আসছে ‘সাকুল্য বেতন’ ধারণা
- আজকের সোনার বাজারদর: ৮ নভেম্বর ২০২৫
- পে স্কেল চূড়ান্ত! ২০২৬ এর শুরুতেই কার্যকর
- নতুন পে-স্কেল জানুয়ারি থেকে কার্যকর, বাড়তি চাপ পড়বে যেসব খাতে
- নতুন পে স্কেল: কার্যকর হচ্ছে ২০২৬-এর জানুয়ারি থেকেই
- নবম পে স্কেল ২০২৬-এর শুরুতেই: বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে আসছে ‘সাকুল্য বেতন’ ধারণা
- নতুন পে স্কেলে যেসব আর্থিক সুবিধা বাড়তে পারে
- আজকের সোনার বাজারদর: ৯ নভেম্বর ২০২৫
- সরকারি পে স্কেল: অর্থ বরাদ্দ শুরু, জিপিএমএস আসছে
- ১২ ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে, ৫ বেসরকারি ব্যাংক 'নামেমাত্র টিকে আছে'
- নতুন পে স্কেল: সুপারিশ চূড়ান্তের শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে, তবে বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা
- হংকং সিক্সেস ফাইনাল: দুপুরে হংকংয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ, যেভাবে দেখবেন
- পে স্কেল কার্যকর কবে! জানাল কমিশন
