আল্লাহ কেন মানুষকে বিভিন্ন রঙে সৃষ্টি করেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: মানুষের গায়ের রঙ—ফর্সা, শ্যাম বা কালো—আসলে কোনো জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের বিষয় নয়। এটি আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি, পরিবেশভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং মানবজাতির সৌন্দর্যের বৈচিত্র্য।
বিজ্ঞান কী বলে?
মানবদেহের প্রতিটি বর্গইঞ্চি ত্বকে রয়েছে প্রায় ৬০০ কোষ, যেগুলোর প্রতিটিতে জমা হয় মেলানিন নামক একটি রঞ্জক পদার্থ। এই মেলানিনই নির্ধারণ করে কার গায়ের রং গাঢ় হবে, কারটা হালকা।
তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলেন, সব মানুষের ত্বকে মেলানোসাইট কোষের সংখ্যা প্রায় সমান। পার্থক্য কেবল মেলানিনের পরিমাণে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতেই মেলানিন কাজ করে।
এই কারণে যেসব অঞ্চলে সূর্যের তাপ বেশি, যেমন বিষুবরেখা, সেখানে মানুষের গায়ের রং হয় গাঢ়। আর উত্তর বা দক্ষিণ মেরুর মতো ঠান্ডা এলাকায় সূর্যের তীব্রতা কম থাকায় সেখানে মানুষের রং হয় তুলনামূলক ফর্সা।
সুতরাং, এটা কোনো শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় নয়—বরং পরিবেশভিত্তিক এক অলৌকিক দেহগত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
কোরআনের ঘোষণা
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
“তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি হলো নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য রয়েছে নিদর্শন।”(সূরা আর-রূম: আয়াত ২২)
মুফাসসিরগণ বলেন, একই বাবা-মা থেকেও সন্তানদের গায়ের রং এক হয় না। কেউ ফর্সা, কেউ শ্যামবর্ণ, কেউ কৃষ্ণাঙ্গ। এমনকি ভাইয়ের মাঝেও পার্থক্য থাকে। এটা আল্লাহর সৃষ্টির বিস্ময়কর বৈচিত্র্য। চেহারার গঠন, উচ্চতা, চোখ-মুখ—সব কিছুতেই এমন স্বতন্ত্রতা থাকে যা মানুষকে একে অন্যের থেকে আলাদা করে দেয়।
বয়স বাড়লে মেলানিন উৎপাদন কমে যায়। প্রতি দশকে তা ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়। ফলে গায়ের রঙ হয়ে যায় কিছুটা ফ্যাকাসে। এটাও আল্লাহর কুদরতের আরেক নিদর্শন।
বিদায় হজে রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা করেছেন, আরবের উপর অনারবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই, না আছে ফর্সা গাত্রবর্ণের শ্রেষ্ঠত্ব কৃষ্ণাঙ্গের উপর। একমাত্র তাকওয়া বা আল্লাহভীতিই মানুষের মর্যাদা নির্ধারণ করে।
একবার আবু যার (রা.) এক দাসকে তার মায়ের গায়ের রং দিয়ে অপমান করলে, রাসূল (সা.) কড়া ভর্ৎসনা করে বলেন, “তুমি তাকে তার মায়ের পরিচয়ে অপমান করলে কেন? তারা তোমাদের ভাই।”
আবু বকর (রা.) যখন আফ্রিকান বংশোদ্ভূত সাহাবি বিলাল (রা.)-কে দাসত্ব থেকে মুক্ত করেন, তখন তিনি বলেছিলেন, “সে আমার ভাই।” ওমর (রা.) বলতেন, “আবু বকর আমাদের নেতা, যিনি আমাদের আরেক নেতাকে মুক্ত করেছেন।” বিলাল (রা.)-কে তিনি নেতা হিসেবে মানতেন এবং সেই সম্মান দিতেন। অথচ তিনি ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ।
মানুষের রঙের এই ভিন্নতা আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন। কাকতালীয় বা কৃত্রিম কিছু নয়। এটি বৈজ্ঞানিক, পরিবেশগত এবং আধ্যাত্মিকভাবে যুক্তিযুক্ত।
আসুন, আমরা মানুষকে তার গায়ের রং নয়—তার চরিত্র, তাকওয়া ও কাজ দিয়ে বিচার করি। ভাষা, বর্ণ বা জাতিগত পরিচয়ের কারণে কেউ কারও চেয়ে শ্রেষ্ঠ নয়। আল্লাহর কাছে মর্যাদা নির্ধারিত হয় একমাত্র আল্লাহভীতির মাধ্যমে।
তাই অহংকার নয়, বরং বিনয় ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা হোক আমাদের পথ।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাংলাদেশকে সতর্কবার্তা পাঠাল ইরান
- পায়খানার রাস্তার লোম কাটা জায়েজ কিনা
- সহবাসের পর বীর্য বাইরে ফেললে গুনাহ হয় কি
- ২৪ ঘন্টার মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ কমে গেল জ্বালানি তেলের দাম
- স্বর্ণের বাজারে বড় ধাক্কা, লাফিয়ে কমছে দাম
- কোন রক্তের গ্রুপে গরম বা শীত বেশি লাগে
- ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত যেসব দেশ
- বাংলা ১০ সিনেমায় বাস্তবেই সহবাস করতে হয়েছে নায়ক-নায়িকাদের
- মৃত্যুর আগে মানুষ যে স্বপ্ন বার বার দেখে
- অবশেষে ভারতীয় ভিসা নিয়ে এলো বড় সুখবর!
- বাংলাদেশে আজ ১ ভরি সোনার দাম
- লাফিয়ে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম
- চাকরিতে থাকা বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বড় সুখবর
- বাংলাদেশের বাজারে আজ ১ ভরি সোনার দাম
- আবারও ইসরায়েলে হামলা