ঢাকার খিলক্ষেতে পূজা মণ্ডপ উচ্ছেদ নিয়ে যা জানা গেল
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি পূজা মণ্ডপ ভাঙার ঘটনায় সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ঘটনার ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই উদ্বেগ, ক্ষোভ ও প্রশ্ন তুলছেন—এভাবে মন্দির উচ্ছেদ কেন?
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে একটি এক্সকাভেটর দিয়ে মণ্ডপের কাঠামো ভাঙা হচ্ছে। কয়েকটি ছবিতে দেব-দেবীর প্রতিমা রেললাইনের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়, যা নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হয়।
ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বাংলাদেশ বলছে, উচ্ছেদ অভিযানটি সম্পূর্ণভাবে আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয়েছে, অপরদিকে ভারত এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জানা যায়, গত বছর (২০২৪) দুর্গাপূজার আগে খিলক্ষেত রেললাইনসংলগ্ন রেলওয়ের জমিতে একটি অস্থায়ী মণ্ডপ স্থাপন করা হয়। পূজা উদযাপন কমিটি বলছে, তারা রেল কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতি নিয়ে মণ্ডপ স্থাপন করে এবং পূজা-উৎসব পালন করে আসছিলেন।
তবে চলতি বছরের ২৪ জুন রাতে স্থানীয় কিছু লোকজন ‘জমি দখলের’ আশঙ্কায় মণ্ডপ সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরদিন দুপুরের মধ্যে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। ২৬ জুন দুপুরে রেলওয়ে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে মণ্ডপসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ করে।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু মণ্ডপ নয়, রেললাইনের পাশে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ দোকান, রাজনৈতিক কার্যালয় এবং কাঁচাবাজারও একই অভিযানে সরিয়ে ফেলা হয়।
তবে পূজা কমিটির অভিযোগ, কোনো লিখিত বা পর্যাপ্ত সময়ের নোটিশ না দিয়েই মণ্ডপ উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং এতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। অনেকেই বলছেন, প্রতিমাগুলো যথাযথ সম্মানের সঙ্গে বিসর্জনের সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল।
ঘটনার পর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. ফওয়াজুল কবির খান লিখিত বিবৃতিতে জানান, আয়োজকরা পূজার পর মণ্ডপ সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেননি। বরং তারা সেখানে স্থায়ী মন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেন, যা রেলওয়ের জমিতে অননুমোদিত কার্যক্রম হিসেবে বিবেচিত হয়।
রেলওয়ের মহাপরিচালক জানান, মন্দির কর্তৃপক্ষকে আগে থেকেই মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছিল এবং এলাকাটি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ায় পুরো অঞ্চল থেকে সব অবৈধ স্থাপনাই সরিয়ে ফেলা হয়।
রেলওয়ের দাবি, প্রতিমাগুলো পরবর্তীতে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় বালু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।
পুরো ঘটনাটি এখনো নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে—উচ্ছেদ বৈধ হলেও, তা কি ধর্মীয় সংবেদনশীলতা বিবেচনায় যথাযথভাবে করা হয়েছিল? লিখিত নোটিশ বা আলোচনার সুযোগ দেওয়া হলে কি পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত?
ঘটনার প্রকৃত তথ্য এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি যাতে আর না ঘটে, সে জন্য পারস্পরিক সম্মান ও আইনি প্রক্রিয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া সময়ের দাবি।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বড় পরিবর্তনের আভাস দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- বেতন কাঠামো নিয়ে আসছে বড় সুখবর
- আগামী ৮ তারিখ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ
- নবম পে-স্কেলের দাবিতে দেশজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করার হুঁশিয়ারি
- শনিবার ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না দেশের যেসব জেলায়
- আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ল
- ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঢাকা; উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশেই
- পে স্কেলের পথে কমিশন: সোমবার সচিব সভা, রিপোর্ট ডিসেম্বরে
- বিএনপি অভ্যন্তরীণ কোন্দল: ২৩ আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন
- ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত সুপারিশের পথে পে-কমিশন
- পে স্কেল কার্যকরের সময় নিয়ে সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছে
- যেকোনো সময় বাংলাদেশে আরও বড় ভূমিকম্পের আঘাতের পূর্বাভাস
- নতুন সিদ্ধান্ত: দেশে ফিরতেই হবে শেখ হাসিনার
- পে স্কেলের ১৫ পৃষ্ঠার সুপারিশ ফেসবুকে ভাইরাল; যা জানা গেল
- বিএনপির প্রার্থী তালিকায় অসন্তোষ: ২৩ আসনে মনোনয়ন পরিবর্তনের ইঙ্গিত
