যে ৭ শক্তির দেয়াল ভেঙে ইরানকে হারানো প্রায় অসম্ভব

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসরাইল হয়তো কল্পনাও করেনি, এমন একপ্রকার বজ্রঘাত প্রতিরোধের মুখে পড়বে। তেলআবিবের কিছু এলাকা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে এতটাই বিধ্বস্ত হয়েছে যে, অনেকেই তা গাজা ভেবে ভুল করছেন। তেহরানও হামলার শিকার, তবে মূল প্রশ্ন হলো—এই সংঘাত কি আরেকটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে? যুক্তরাষ্ট্র কি এতে সরাসরি যুক্ত হবে? কিংবা ইরান কি শেষমেশ হার মানবে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ৭টি কারণ রয়েছে যা ইরানকে আজও পরাজিত করা প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে।
১. হরমুজ প্রণালী—বিশ্বের ‘রক্তনালী’ ইরানের হাতে
ইরানের দক্ষিণ সীমান্তঘেঁষা হরমুজ প্রণালী বিশ্বের অন্যতম কৌশলগত সামুদ্রিক পথ। মাত্র ৩৩ কিলোমিটার চওড়া এই পথ দিয়েই বিশ্ব তেলের প্রায় ২০% পরিবহন হয়। প্রণালীর আশপাশের সাতটি দ্বীপ ইরানের দখলে, যা তাকে অপ্রতিরোধ্য ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা দেয়। হুমকি এসেছে—ইরান চাইলে এই পথ বন্ধ করে দিতে পারে, যা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য মারাত্মক আতঙ্ক।
২. ভৌগোলিক নিরাপত্তা ও প্রাকৃতিক দুর্গ
ইরানের চারপাশ জুড়েই পাহাড়, মরুভূমি ও দুর্গম অঞ্চল। পশ্চিম ও দক্ষিণ সীমান্তজুড়ে জাগ্রস পর্বতমালা, উত্তরে আলবর্জ পর্বতমালা, আর দেশের অভ্যন্তরে রয়েছে লুত মরুভূমির মতো ভয়ংকর অঞ্চল—যা ইরানে স্থলসেনা ও রসদ পাঠানোকে প্রায় অসম্ভব করে তোলে।
৩. বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন শক্তি
ইরান মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারের অধিকারী। কিছু ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ ২০০০ কিমি পর্যন্ত, যা ইউরোপ পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। ড্রোন প্রযুক্তিতেও ইরান এখন বিশ্বে আলোচিত নাম। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানি ড্রোন ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য সফলতা পেয়েছে।
৪. তেল-গ্যাস মজুদের রাজ্য
বিশ্বের তেল ও গ্যাস মজুদের প্রায় ১০–১৫% রয়েছে ইরানে। এই প্রাকৃতিক সম্পদ শুধু অর্থনৈতিক শক্তি নয়, কৌশলগত সুবিধাও এনে দিয়েছে দেশটিকে। বিশ্ববাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে সক্ষম ইরান, বিশেষ করে তার কৌশলগত অবস্থানের কারণে।
৫. হাজার বছরের অক্ষুন্ন রাষ্ট্রসীমা ও প্রতিরোধের ঐতিহ্য
ইরান পৃথিবীর অন্যতম পুরনো রাষ্ট্র, যার বর্তমান ভূখণ্ড প্রায় ৫০০ বছর ধরে একই রয়ে গেছে। ইতিহাসে অনেক পরাশক্তি এই দেশকে দখল করতে চেয়েছে, কিন্তু কেউ সফল হয়নি। ইরান প্রতিবারই নিজেকে টিকিয়ে রেখেছে শক্ত প্রতিরোধের মাধ্যমে।
৬. রাশিয়া ও চীনের কৌশলগত মিত্রতা
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের চাপের মাঝেও ইরান রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করেছে। সংঘাতের সময়ে মস্কো ও বেইজিংয়ের কাছ থেকে কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা সহায়তা পাওয়ায় ইরান আরও আত্মবিশ্বাসী। এই মিত্রতা পশ্চিমাদের জন্য বড় ধরনের মাথাব্যথা।
৭. ‘অ্যাক্সিস অফ রেজিস্টেন্স’—মধ্যপ্রাচ্যে প্রক্সি শক্তি
ইরানের সবচেয়ে আলোচিত প্রতিরক্ষা কৌশল—প্রক্সি নেটওয়ার্ক। ফিলিস্তিন, লেবানন, সিরিয়া, ইরাক থেকে শুরু করে ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তৃত এই জোট ‘অ্যাক্সিস অফ রেজিস্টেন্স’ নামে পরিচিত। এদের মাধ্যমে ইরান তার শত্রুদের বিরুদ্ধে সরাসরি না গিয়ে যুদ্ধের চাপ তৈরি করে—যা অত্যন্ত কার্যকর এবং বিপজ্জনক।
ইতিহাস, ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৌশলগত পরিকল্পনার দিক থেকে ইরান একটি ব্যতিক্রমী শক্তি। পারস্য সভ্যতা থেকে আজকের ইরান—দেশটি কখনোই পরাধীন হয়নি। এই ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে কিনা, সেটাই এখন বিশ্বের নজরকাড়া প্রশ্ন।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- যে ২ বিষয়ে বিএনপি একমত হলেই ফেব্রয়ারিতে নির্বাচন
- হঠাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য জরুরি নির্দেশনা
- সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন কত টাকা বেতন বাড়লো
- সয়াবিন তেলের দাম কমে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
- পাসপোর্ট পাবেন না যে তিন শ্রেণির লোক
- অবশেষে বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু
- ১ জুলাই থেকে সরকারি কর্মীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা: কোন গ্রেডে কত পাবেন
- এসএসসির ফল প্রকাশ হতে পারে যেদিন
- ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হলো যাদের
- বাংলাদেশে ভারী বৃষ্টিপাত যেদিন থেকে
- ৭টি অভ্যাস আপনাকে কখনোই ধনী হতে দেবে না!
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ১-৩ লক্ষ টাকা রাখলে মাসিক কত লাভ পাবেন
- কালো জাদু কি সত্যিই কাজ করে!
- অবসর ভেঙে দলে ফিরতে পারেন বাংলাদেশের ২ ক্রিকেটার
- বাংলাদেশে আজ ১৮, ২১, ২২ ক্যারেট সোনার দাম