| ঢাকা, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২

ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে হাতবোমা, একশ বোমায় পারিশ্রমিক ৪০ হাজার টাকা (ভিডিওসহ)

জাতীয় ডেস্ক . বিনোদন৬৯.কম
২০২৫ এপ্রিল ১৩ ১৩:১১:৪৯
ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে হাতবোমা, একশ বোমায় পারিশ্রমিক ৪০ হাজার টাকা (ভিডিওসহ)

নিজস্ব প্রতিবেদক: শরীয়তপুরের বিলাসপুর ইউনিয়ন, যেখানে আধিপত্যের লড়াই চলছে প্রায় চার দশক ধরে। এখানকার প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী দুই পক্ষের মধ্যে চলে আসছে ভয়াবহ হাতবোমা হামলা, যার ফলে হাজারো মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠেছে। প্রতিটি সংঘর্ষে বোমার আঘাতে নিহত হয়েছে বহু মানুষ, আহত হয়েছে অসংখ্য।

এলাকার রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে কুদ্দুস ব্যাপারী এবং জলিল মাদবরের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ। কুদ্দুস, বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, ২০০১ সালে প্রথম বোমাবাজির মাধ্যমে এ যুদ্ধের সূচনা করেন। তার বিরুদ্ধে লড়াই করেন জলিল মাদবর, যিনি এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।

২০০১ সাল থেকে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের কারণে হাতবোমা ব্যবহার একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। বোমার আঘাতে বিলাসপুরের বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ২৫ বছর বয়সী সজীব এবং স্কুল ছাত্র সৈকত অন্যতম। সজীবের মায়ের কষ্ট এখনো কানে বাজে, তিনি বলেন, "আমার বাবা তো প্রাণ হারিয়েছেন, আর সৈকত মারা যাওয়ার পরেও তার বাড়ি লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকে।"

শুধু যে প্রাণহানি হয়েছে, তা নয়, অনেকেই জীবনের চিরস্থায়ী ক্ষতি পেয়েছেন। হাজারো মানুষ আহত হয়েছেন, অনেকের হাত বা পা চলে গেছে। একজন আহত ব্যক্তির কথায়, "আমার হাতে বোমার আঘাত লেগে উড়ে গিয়েছিল, এখন বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করতে অনেক কষ্ট হয়।"

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন নিজেরাই নিজেদের এই মারামারির শিকার হচ্ছেন? অনুসন্ধানে উঠে আসে, কুদ্দুস ব্যাপারী এবং জলিল মাদবর দুজনেই নিজেদের শক্তি বজায় রাখার জন্য এসব বোমা তৈরি এবং ব্যবহার করেন। কুদ্দুসের ভাই, নুর ইসলাম ব্যাপারী, এলাকা জুড়ে বোমার রসদ সরবরাহ করে থাকেন।

বোমা তৈরির কাজে সহায়ক হিসেবে স্থানীয়রা পেশাদার কারিগর। ঘরের মধ্যে, নিঃসঙ্গ জায়গায় কিংবা নৌকায় বসে তারা মাত্র পাঁচ মিনিটে একটি বোমা তৈরি করে ফেলেন। প্রতি ১০০টি বোমার জন্য তারা পান ৪০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক।

এদিকে, এলাকার মানুষের নিরাপত্তা এখন বিপন্ন। বহু পরিবার তাদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে, এবং যারা বাসায় রয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই এখনো বোমার আতঙ্কে রয়েছেন। একজন বলেন, "বোমার আঘাতে শুধু আমার পরিবার নয়, পুরো গ্রামটাই ক্ষতিগ্রস্ত। কেউ বাঁচল, কেউ মরে গেল, আর প্রশাসন কিছুই করতে পারল না।"

এলাকার দুই সাবেক এমপি কুদ্দুস এবং জলিলের এই সহিংসতা বন্ধ করার চেষ্টা করলেও, কোনো উপকার হয়নি। একপক্ষের পক্ষেও লোকেরা দাবি করে, "জলিল মাদবর জেলে থাকলে আমরা নিরাপদ থাকতাম।" অপরপক্ষের দাবি, "কুদ্দুস ব্যাপারী জেলে থাকলে ভালো থাকতাম।"

এলাকা এখন এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। মানুষ উদ্বিগ্ন, কারণ প্রশাসন একাধিকবার চেষ্টা করেও তেমন কোনো সমাধান দিতে পারছে না। এলাকাবাসীরা এখন শুধু একটাই আশা রাখেন—নিরাপত্তা। তারা চান, তাদের পূর্বপুরুষের ভিটে বাড়ি নিরাপদে ফিরে আসুক।

ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন-

রাকিব/

ট্যাগ: হাতবোমা

আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ

ক্রিকেট

অবিশ্বাস্য ভাবে শেষ হল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ম্যাচ

অবিশ্বাস্য ভাবে শেষ হল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ম্যাচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে শ্রীলঙ্কার কাছে প্রথম ম্যাচে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ছিল ...

তামিমের অবসর নাটকের পর্দা ফাঁস!

তামিমের অবসর নাটকের পর্দা ফাঁস!

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত অধ্যায়গুলোর একটি—তামিম ইকবালের হঠাৎ আন্তর্জাতিক অবসর। ...

ফুটবল

যেভাবে মৃত্যু হয় জোটা ও তার ভাইয়ের

যেভাবে মৃত্যু হয় জোটা ও তার ভাইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাত্র ১২ দিন আগে প্রেমিকা রুতে কার্দোসোকে বিয়ে করেছিলেন দিয়োগো জোটা। জাতীয় দলকে ...

আমেরিকার মাটিতে কি ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না ইরান!

আমেরিকার মাটিতে কি ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না ইরান!

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত রাজনীতির আঁচ এবার ছড়িয়ে পড়ছে ক্রীড়াঙ্গনেও। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে যখন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ...