অবশেষে ভারতের আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিল

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। চলতি মাসে প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েকের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়। শ্রীলঙ্কার জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে দুর্নীতির অভিযোগ ও প্রকল্পের সম্ভাব্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকা প্রধান কারণ।
দুর্নীতির অভিযোগ ও তদন্ত
২০২৩ সালের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে আদানি গ্রুপের মালিক গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই শ্রীলঙ্কার প্রশাসন আদানি গ্রুপের পরিচালিত প্রকল্পগুলো তদন্তের আওতায় আনে। যদিও বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বাতিল করা হয়েছে, তবে পুরো প্রকল্পটি বাতিলের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। প্রকল্পের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকের প্রতিশ্রুতি
শ্রীলঙ্কার বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে নির্বাচনী প্রচারণার সময় জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি আদানি গ্রুপের বিতর্কিত প্রকল্প বাতিল করবেন। তিনি বলেছিলেন, “বিদেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন থাকলেও তা অবশ্যই স্বচ্ছ ও ন্যায্য দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হতে হবে। আগের সরকার যদি সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করত, তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ অর্ধেকে নেমে আসত।”
আদানি গ্রুপের প্রতিক্রিয়া
শ্রীলঙ্কার সরকারের এই সিদ্ধান্তে আদানি গ্রুপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র বলেন, “নতুন জ্বালানি নীতিমালার আলোকে শ্রীলঙ্কা সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে আমরা শ্রীলঙ্কার সবুজ জ্বালানি খাতে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”
বিতর্কিত বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মান্নার ও পুনরিয়নে ৪৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের একটি বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুমোদিত হয়। আদানি গ্রিন এনার্জি প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ ০.০৮২৬ ডলারে সরবরাহের প্রস্তাব দেয়, যা ২০২৪ সালের মে মাসে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পটি শুরু থেকেই নানা বিতর্কের মুখে পড়ে। পরিবেশবাদী, অর্থনীতিবিদ ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মীরা এর বিরোধিতা করে আসছেন। এমনকি প্রকল্পের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্টে মামলাও দায়ের হয়।
পরিবেশগত উদ্বেগ ও আইনি জটিলতা
প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পরিবেশবাদীরা দাবি করেছেন, প্রকল্পটি স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থানকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রকল্পের আইনি ও পরিবেশগত দিক পুনরায় পর্যালোচনার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ও সরকারের পদক্ষেপ
শ্রীলঙ্কা সরকারের এই পদক্ষেপ নতুন নীতিমালা প্রণয়নের ইঙ্গিত দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কা ন্যায্য দরপত্র প্রক্রিয়া ও টেকসই বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে আরও কঠোর হবে। আগামী মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্টে এই প্রকল্প নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শ্রীলঙ্কার এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের সতর্ক বার্তা হিসেবে কাজ করবে। বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানালেও, তা দেশের অর্থনীতি, পরিবেশ এবং জনগণের স্বার্থে হতে হবে, এই বার্তাটি স্পষ্ট করেছে শ্রীলঙ্কা।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাসায় পিঁপড়ে, জানুন আল্লাহর ৫টি গোপন বার্তা!
- ক্যানসারের যেসব প্রাথমিক সতর্ক সংকেত উপেক্ষা করলেই বিপদ
- দুবাইতে চুরি: ৫ প্রবাসীর যাবজ্জীবন ভিসা বাতিল ও কারাদণ্ড
- সৌদি আরবে ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণদের জন্য ৩০ দিনের বাড়তি সুযোগ!
- হাসিনাকে 'পুশ ইন' করার আহ্বান: কাল্পনিক চিত্র, রাজনৈতিক তোলপাড়
- বাংলাদেশের বাজারে সোনার দাম কমলো: নতুন দর কার্যকর
- দুই বিভাগে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস: সারাদেশে বর্ষণ অব্যাহত থাকবে
- টানা বৃদ্ধির পর কমলো সোনার দাম: প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ১৫৭৪ টাকা হ্রাস
- সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল হয়নি: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে গুজব
- এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের সম্ভাব্য স্কোয়াড চূড়ান্ত, বাদ পড়লেন সৌম্য, মিরাজ
- দেশের বাজারে আজ এক ভরি ১৮, ২১, ২২ ক্যারেট সোনার দাম
- বাংলাদেশের বাজারে আজ এক ভরি সোনার দাম
- সৌদি রিয়ালের বিনিময় রেটের বড় লাফ
- ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাড়ল সোনার দাম
- অবিশ্বাস্য ঘটনা: সাপের কামড়ে শিশু নয়, শিশুর কামড়ে সাপের মৃত্যু!