কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র আর নেই!
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র আর আমাদের মাঝে নেই। রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রবীর মিত্রের মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর।
বেশ কিছুদিন ধরে প্রবীর মিত্র গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সিসিইউ থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তার বড় ছেলে মিঠুন মিত্র জানিয়েছিলেন, প্রবীর মিত্র বয়সজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। অক্সিজেনের অভাব, রক্তক্ষরণ এবং প্লাটিলেট কমে যাওয়ার মতো জটিল সমস্যায় তার শরীর ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছিল। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। শৈশবে পুরান ঢাকায় বেড়ে ওঠা এই মানুষটি স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করে তিনি সবার নজর কাড়েন। তার অভিনয় প্রতিভার বিস্তার ঘটতে থাকে এবং তিনি চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন।
১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের পরিচালনায় ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি রুপালি পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। যদিও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালে। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্রে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন। তবে তিনি চরিত্রাভিনেতা হিসেবেই দর্শকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
চার দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রবীর মিত্র চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’ ইত্যাদি।
তার চরিত্রাভিনয় এতটাই প্রাণবন্ত ছিল যে দর্শকরা প্রতিটি চরিত্রেই তাকে আপন করে নিয়েছেন। তিনি ছিলেন একাধারে হাস্যরসাত্মক, রোমান্টিক এবং সিরিয়াস চরিত্রে সমান পারদর্শী।
প্রবীর মিত্র ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এমন একজন অভিনেতা, যিনি প্রতিটি চরিত্রকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য সুপরিচিত। তার অসামান্য অভিনয় দক্ষতা, সততা এবং কাজের প্রতি একাগ্রতা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল। তার মতো শিল্পী বাংলা চলচ্চিত্রে বিরল।
প্রবীর মিত্রের মৃত্যু শুধু তার পরিবার নয়, পুরো শিল্পীজগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি তার কাজের মাধ্যমে স্মৃতির পাতায় অমর হয়ে থাকবেন। তার প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা। বাংলার এই মহান অভিনেতাকে আমরা চিরকাল মনে রাখব।
"আমাদের ছায়াছবির নবাব" আজ ইতিহাসের পাতায়। তার জীবনের প্রতিটি কাজ আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- নতুন মহার্ঘ ভাতা: কোন গ্রেডের কত টাকা বাড়বে? জানালো অর্থ মন্ত্রণালয়
- সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর: বাড়ছে বেতন, সর্বনিম্ন বৃদ্ধি ৪ হাজার টাকা
- নবম পে স্কেল চূড়ান্ত: ১৩ গ্রেড ও ৩২ হাজার টাকা সর্বনিম্ন বেতনের সুপারিশ
- তিন ধাপে বাস্তবায়িত হবে নবম পে স্কেল; সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতন কত
- বর্তমান সরকারের আমলে আসছে না নতুন পে-স্কেল: জানালো অর্থ মন্ত্রণালয়
- সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ছে ৩ ধাপে: জানুয়ারিতে শুরু প্রথম ধাপ
- নবম পে স্কেলের খসড়া চূড়ান্ত: সর্বনিম্ন বেতন ৩২ হাজার ও সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৮ হাজার টাকার প্রস্তাব
- নবম পে স্কেল চূড়ান্ত: রিপোর্টে যা যা আছে
- নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে নতুন ঘোষণা
- আজকের সোনার বাজার দর: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
- অনার্স প্রথম বর্ষের ফল প্রকাশ: এক ক্লিকে দেখুন এখানে
- ডিসেম্বরেই পে-স্কেল নিয়ে নতুন ঘোষণা!
- নতুন পে স্কেলে মহার্ঘ ভাতা: কোন গ্রেডের কত টাকা বাড়বে
- হাদিকে যে প্রস্তাব দিয়েছিল শুটার ফয়সাল
- পে-স্কেল নিয়ে বিশাল বড় সুখবর পেলেন যারা
