মাকে রাজি করিয়ে যুদ্ধে যোগ দেন সেই আবু সাইয়িদ
ডিসেম্বর মাস, বিজয়ের মাস, যখন পরাধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে সূচনা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের। এই মাসেই বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে বাঙালি জাতিকে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইয়িদ মিয়া বলেন, "১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী যখন বাঙালির ওপর নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছিল, তখন একদিকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য মায়ের বাধা, আর অন্যদিকে বাঙালির ওপর অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ চলছিল—এই দুঃখ-দুর্দশায় মনটা অস্থির হয়ে উঠত। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনার পর যুদ্ধের জন্য মনোবল আরও বেড়ে যায়। ঠিক তখনই স্থির করি, যেকোনো মূল্যে যুদ্ধ করতে হবে। শেষে মাকে বুঝিয়ে, গোপনে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাই।"
এভাবে ১৩ ডিসেম্বর এক আলাপচারিতায় মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইয়িদ মিয়া তাঁর যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আমোদাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে।
১৯৭১ সালে, তখন তিনি হাই স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন, বয়স ছিল ১৭ বছর। বর্তমানেও তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে জীবিত আছেন। আট বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। শান্তিপ্রিয় এক মানুষ হিসেবে সাইয়িদ মিয়া যুদ্ধের মাঠে গিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়ে একটি স্বাধীন দেশ গঠনে তার অবদান রেখেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইয়িদ মিয়া আরও বলেন, "পাকিস্তানি বাহিনী যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশপাশের এলাকা আক্রমণ করতে শুরু করলো, তখন আমাদের এলাকায় লোকজন সিঙ্গারবিল বাজারে জড়ো হতে শুরু করে। পাকিস্তানি বাহিনী জনসমাগম দেখলে আক্রমণ করবে, এমন আশঙ্কায় অনেকেই সীমান্ত দিয়ে ভারত চলে যেতে শুরু করলো। আমি এবং বন্ধু ইলিয়াস ও সামাদ গোপনে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। মায়ের দেওয়া পাঁচ টাকা এবং একটি গেঞ্জি ও শার্ট পরেই আমরা বাড়ি ছাড়ি। পরে সিঙ্গারবিলের নোয়াবাদী সীমান্ত দিয়ে আগরতলায় চলে যাই। সেখান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের জন্য কংগ্রেস ভবনে ভর্তি হই এবং প্রশিক্ষণ শেষে আসাম থেকে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্তে পাঠানো হয়।"
"সেখানে আমাদের প্রথম আক্রমণ ছিল পাকিস্তানি ক্যাম্পে। ওই ক্যাম্পে আক্রমণের পর পাকিস্তানি বাহিনী পালিয়ে যায়। পরে আমাদের গ্রামবাসী সহায়তায় বড় বড় বাঙ্কার তৈরি করা হয়। ৩২ দিন সেখানে অবস্থান করে পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণ ঠেকানো হয়। পরে রহিমপুর বাজারে নতুন আক্রমণ চালিয়ে কয়েকজন পাকসৈন্যকে হত্যা করি এবং তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করি," বলেন সাইয়িদ মিয়া।
তিনি আরও বলেন, "১৪ আগস্ট পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনের আগমন উপলক্ষে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে আক্রমণ চালাই। তার গাড়ি লক্ষ্য করে পাহাড় থেকে হামলা চালানো হয়, এতে ক্যাপ্টেন বেঁচে গেলেও বেশ কয়েকজন মারা যায়।"
আবু সাইয়িদ মিয়া বলেন, "মুক্তিযুদ্ধের সময় যা কিছু করণীয় ছিল, দেশপ্রেম থেকেই করেছি। অর্থ কিংবা অন্য কোনো প্রাপ্তির জন্য নয়, মায়ের দেওয়া দেশকে মুক্ত করার জন্য যুদ্ধ করেছি। তাজা রক্তের বিনিময়ে আমাদের সন্তানদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছি, যেখানে তারা স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠবে এবং চলাফেরা করবে। এটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।"
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- পে স্কেল নিয়ে অনিশ্চয়তার মাঝে নতুন করে 'সুখবর' দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- অবশেষে নতুন পে-স্কেল নিয়ে 'সুখবর'
- বিএনপির ২৩ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের ইঙ্গিত!
- আজকের সোনার বাজারদর: ১৪ নভেম্বর ২০২৫
- নগদ অ্যাপে 'প্লে প্রোটেক্ট' সতর্কতা; যা জানাল কর্তৃপক্ষ
- মোবাইলেই লাইভ দেখুন: বাংলাদেশ বনাম নেপাল ম্যাচ
- পে স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ: ব্রাজিল বনাম সেনেগাল, যেভাবে দেখবেন
- প্রথমার্ধের খেলা শেষ; বাংলাদেশ বনাম নেপাল, সরাসরি দেখুন এখানে
- আজ রাতে অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা, যেভাবে দেখবেন
- সরকারি কর্মীদের জন্য বড় নির্দেশনা
- হামজার জোড়া গোলেও নেপালের কাছে জয় হাতছাড়া বাংলাদেশের
- শনিবার ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়
- চলছে বাংলাদেশ বনাম নেপাল ম্যাচ: সরকারি দেখুন এখানে
- বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা আজ রাতে অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে, দেখবেন যেভাবে
