| ঢাকা, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২

হাসিনাকে জায়গা দিয়ে পাকিস্তান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব বিপদ পেল ভারত

জাতীয় ডেস্ক . বিনোদন৬৯.কম
২০২৪ আগস্ট ২৭ ১২:৪৩:২৫
হাসিনাকে জায়গা দিয়ে পাকিস্তান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব বিপদ পেল ভারত

দেড় দশক ধরে ভারত শেখ হাসিনার নৃশংস ও স্বৈরাচারী শাসনকে সমর্থন করে আসছে। দেশে ২০ দিনের সহিংস সরকার বিরোধী আন্দোলন তাকে একটি সামরিক কার্গো বিমানে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। এই আন্দোলনে অন্তত ৫৪২ জনের মৃত্যু হয়।

ভারত বহু বছর ধরে দুর্নীতিবাজ হাসিনা সরকারকে অন্ধভাবে সমর্থন করে আসছে। সেই শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছিল, যা দেশের জাতীয় বাজেটের দ্বিগুণের সমান।

হাসিনার শাসনামলে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার কখনোই বাংলাদেশ বা এর জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেনি। এমনকি হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জন্য ভারত তার সুনাম ও জাতীয় স্বার্থকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করলেও ভারত হাসিনাকে সুযোগ দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনকে চাপ দিতে থাকে। নয়াদিল্লি ওয়াশিংটনকে বলেছে যে আমাদের একই ধরনের কৌশলগত ঐকমত্য না থাকলে তারা আমাদেরকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে নিতে পারবে না।

বাংলাদেশে যেভাবে সত্যিকারের গণতন্ত্র ফিরতে পারেবাংলাদেশে যেভাবে সত্যিকারের গণতন্ত্র ফিরতে পারে

গত ১৯ জুলাই বাংলাদেশে পুলিশের গুলিতে ৭৫ জন নিহত হন। ওই দিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর কয়েক দিন পর গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতন হয়। ক্ষমতা নিয়ে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস এটিকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ হিসেবে আখ্যা দেন। এরপরেও পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেন প্রতিবেশী দেশের মানুষজন তাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উঠেছে সেই বিষয়টি তুলে ধরেননি।

কারণ না খুঁজে কিছু ভারতের গণমাধ্যম হাসিনার পতনের পেছনে সন্দেহভাজন হিসেবে পাকিস্তান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাম বলেছে। এটা সত্যিই পরিহাসের বিষয় যে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্নায়ুযুদ্ধ ২.০-এর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়কেই বাংলাদেশের মিত্র হিসেবে দেখা হয়। এই গণঅভ্যুত্থানে পাকিস্তানের সম্পৃক্ততাও হাস্যকর।

গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ মাথাপিছু জিডিপিতে ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে। দেশটির জনগণের গড় বয়স ২৬। যে জেন-জি প্রজন্মের নেতৃত্বে হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে তারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। ভারত ও পাকিস্তান তাদের কাছে নিতান্তই দুটি দেশ, যা নিয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে মিম তৈরি করে থাকেন।

কিছু কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করেছে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য। এই ধরনের প্রচারণা সমগ্র উপমহাদেশে সংখ্যালঘুদের নিপীড়নের বড় ইস্যুটিকে তুচ্ছ করে তোলে।

গণমাধ্যমের মতো ভারত সরকারও বুঝতে পারছে না যে হাসিনা তাদের জন্য একটি বোঝা। এরইমধ্যে ক্ষমতাচ্যুত এই স্বৈরশাসক একাধিক অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, বাংলাদেশে আন্দোলনে ৩২ জন শিশু নিহত হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে ছোট শিশুটির বয়স পাঁচ। রিয়া গোপ নামের এই হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিশুটি ছাদে খেলার সময় গুলিবিদ্ধ হয়। যার নির্দেশে এমন অমানবিক কর্মকাণ্ড হয়েছে তাঁকে আশ্রয় দেওয়া ও রক্ষা করা অসম্ভব। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো লাগছে না। হাসিনার প্রতি বছরের পর বছর সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। তবে সাধারণ বাংলাদেশিরা ভারতকে আওয়ামী লীগ থেকে আলাদা করা কঠিন মনে করছে। হাসিনার পতনের কয়েক ঘণ্টা পরই ঢাকায় ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করার মতো ঘটনা ঘটেছে। তবে গত সপ্তাহে ঢাকায় সীমিত আকারে ভারতের ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। হাসিনাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভারতে থাকতে দিলে বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক আরও খারাপ হতে পারে। হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ চূড়ান্ত হলে নতুন বাংলাদেশ সরকার তাকে প্রত্যর্পণ চাইতে পারে। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। এর অধীনে হত্যা মামলার আসামি হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এরইমধ্যে সরকার হাসিনার বিশেষ পাসপোর্ট বাতিল করেছে। তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় এটি ব্যবহার করেছিলেন। এ বিষয়টি দিল্লিতে তার থাকার বিষয়টি আরও জটিল করে তুলেছে।

ইউনূস সরকারকে যে ভুলগুলো এড়াতে হবেইউনূস সরকারকে যে ভুলগুলো এড়াতে হবে

হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত হাজার হাজার তরুণকে তাঁদের থেকে বিচ্ছিন হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। সেইসঙ্গে এইসব তরুণদের চীনমুখী হওয়ার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এটি একটি বিশৃঙ্খলা যা স্পষ্টতই ভারতের অদক্ষ এবং অলস আমলাতন্ত্র নিজের ওপর নিয়ে এসেছে।

একটি সমস্যা সমাধানের জন্য বড় পদক্ষেপ হল সমস্যাটিকে স্বীকার করা। ভারতের এখনই সময় বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার এবং তার বাংলাদেশে পুরনো বন্ধুদের কাছ থেকে লিজ নেওয়া বন্ধ করার। ভারতকে বাংলাদেশে নতুন বন্ধু খুঁজে বের করতে হবে। তাদের পুরোনো নীতি ব্যর্থ হয়েছে, এটি তাদের বুঝতে হবে। এটিও বুঝতে হবে যে, বাংলাদেশে তার পুরনো বন্ধুকে ঘৃণার চোখে দেখা হচ্ছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিও পাল্টাতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের সাহায্য আমাদের ইতিহাসের অংশ। কিন্তু ৫৪ বছর আগে যে সাহায্য দেওয়া হয়েছিল তা বাংলাদেশকে ঋণী মনে করার জন্য যথেষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ স্বাধীন করেছে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের কলোনি না। ওয়াশিংটন, ফ্রান্স, ইতালি বা জার্মানিতে গণতন্ত্রকে গলা টিপে দেওয়ার চেষ্টা করে না। ভারত যদি একটি আঞ্চলিক পরাশক্তি হতে চায়, তার পররাষ্ট্রনীতিকে আমেরিকার মতো ভূমিকা পালন করতে হবে। সাধারণ বাংলাদেশিরা ভারতের শত্রু নয়। সমস্যাটা হচ্ছে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের নীতি।

আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ

ক্রিকেট

দ্বিতীয়টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: মোবাইলে যেভাবে দেখবেন

দ্বিতীয়টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: মোবাইলে যেভাবে দেখবেন

শারজাহতে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ১-০ তে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। তরুণ ওপেনার ...

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশের উড়ন্ত সূচনা

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশের উড়ন্ত সূচনা

গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্দা উঠেছে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের। তবে আসরে প্রথমবারের মতো আজ মাঠে ...

ফুটবল

দুই ম্যাচ সামনে রেখে ব্রাজিলের শক্তিশালী দল ঘোষণা

দুই ম্যাচ সামনে রেখে ব্রাজিলের শক্তিশালী দল ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করছে ব্রাজিল। আগামী ১০ ...

নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান, মোবাইলে যেভাবে দেখবেন

নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান, মোবাইলে যেভাবে দেখবেন

অবশেষে শুরু হচ্ছে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত যাত্রা। আজ, বৃহস্পতিবার (০২ অক্টোবর) নিজেদের ...