ফুটবলের মত ক্রিকেটেও বিশ্বকাপ জেতাটা তো সাকিবেরও প্রাপ্য

একা হাতে দেশের ক্রিকেটকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন এই তারকা। নিজের ষোল বছরের ক্যারিয়ারে অজস্র আনন্দঘন মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন দেশবাসীকে। নানা চড়াই উতরাই পার করে রেকর্ড ভাঙ্গা গড়ার মধ্য দিয়েই পার হয়েছে ১৬ বছরের এই দীর্ঘ পথচলা। ২২৪ ওয়ানডে ম্যাচে ৩৭.৫৫ গড়ে ৬৮০৩ রান করেছেন সাকিব।
ফিফটি করেছেন ৫০ টি এবং সেঞ্চুরি নয়টি। বল হাতে নিয়েছেন ২৯৪ উইকেট! ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন চারবার। অলিখিতভাবে ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটার বোধ হয় সাকিব আল হাসানই। ব্যাট হাতে ৮০০০-৯০০০ রান অথবা বল হাতে তিনশোর অধিক উইকেট। যেকোনো একটি অর্জনই যথেষ্ট ওয়ানডে ক্রিকেটে গ্রেট তকমা পাওয়ার জন্য।
অথচ সাকিব প্রায় দুটি রেকর্ডই একা করে ফেলছেন। এছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে সাকিবের রেকর্ড বেশ সমৃদ্ধ। ৬৩ টেস্ট ম্যাচে সাকিবের ৪২৫১ রান গড় ৩৯। এ ৬৩ ম্যাচে সাকিবের উইকেট সংখ্যা ২২৪ টি। টেস্ট আরো বেশি খেলার সুযোগ পেলে নিঃসন্দেহে এই রেকর্ড আরো অনেক ভালো হতে পারত। দলের উপর ইম্প্যাক্ট কিংবা পরিসংখ্যান সবকিছুতেই ইতিহাসের সেরা অলরাউন্ডারদের ছাপিয়ে গিয়েছেন সাকিব। ইয়ান বোথাম,কাপিল দেব গ্যারি সোবাস,ইমরান খানদের মতো ক্রিকেটাররা ক্রিকেট ইতিহাসে সাকিবের পিছনে কিংবা সমানে থাকবে।
সাকিবের সাথে প্রত্যক্ষ লড়াই করতে পারে এমন অলরাউন্ডার শুধু একজনই। দি গ্রেট জ্যাক ক্যালিস, একমাত্র এই ক্রিকেটারটিকেই সাকিবের সমান কিংবা সাকিবের চেয়ে ভালো বলতেও কোনো দ্বিধা থাকবে না সাকিবের অন্ধ ভক্তেরও। সবমিলিয়ে সাকিব যে বিশ্ব ক্রিকেটের এক লিজেন্ড এই ব্যাপারে সন্দেহ থাকার কোনো প্রশ্ন নেই। নিজের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কি না অর্জন করেছেন, ব্যক্তিগত অর্জনের পাশাপাশি ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও করেছেন অজস্র অর্জন। ভুরি ভুরি অর্জনের মাঝে অপূর্ণতা বলতে যদি কিছু থাকে সেটি একটি আইসিসি ট্রফির।
দেশের জার্সিতে কখনোই কোনো বড় শিরোপা জেতার স্বাদ গ্রহণ করেননি সাকিব। তাই নিজের ১৬ বছরের ক্যারিয়ারেও হাহাকার থেকে গিয়েছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের। বলা হয়ে থাকে প্রকৃতিই কিংবদন্তিদের শেষটা রঙিন করে থাকেন। ইতিহাসের দিকে চোখ বোলালে দেখা যাবে অধিকাংশ সময় খালি হাতে ফেরেনা কিংবদন্তিরা। ক্রিকেটার ইমরান খানের লক্ষ্য ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে এতোটুকু আপোষ করেননি এই কিংবদন্তী। ১৯৮৭ বিশ্বকাপকে লক্ষ্য করে নিজের দলকে যথাসম্ভব সুন্দরভাবে গড়েছিলেন।
অধিনায়কত্ব এবং পারফরমেন্স দিয়েও দলকে দারুণভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তবে দুর্ভাগ্যবশত সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারতে হয় পাকিস্তানের। এই ঘটনার পর অবসর নিয়ে নেন ইমরান খান। পরবর্তীতে নানা ঘটনার কারণে অবসর ভেঙে আবারো ক্রিকেটে ফেরেন ইমরান। সময়ের পালা বদলে চার বছর পর আবারও একটি বিশ্বকাপ দুয়ারে কড়া নাড়ে। এবং নিজেদের প্রথম পাঁচটি ম্যাচের তিনটিতেই হারা পাকিস্তান অবিশ্বাস্যভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় সেবারের বিশ্বকাপে। ফাইনালে ইংল্যান্ডের শেষ উইকেটটিও আসে ইমরান খানের বলেই। আরেক গ্রেট শচীন টেন্ডুলকার, ক্যারিয়ার শুরুই করেছিলেন বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন নিয়ে।
তবে খুব কাছে গিয়েও বারবার খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছিল ভারতীয় দলকে। ২০০৭ বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর অবসর নেওয়ারও চিন্তা করছিলেন টেন্ডুলকার। তবে শেষ পর্যন্ত অবসর না নিয়ে শেষ একটা চেষ্টা করার সিদ্ধান্ত নেন এই কিংবদন্তী। নিজের ষষ্ঠ এবং শেষ বিশ্বকাপে গিয়ে অবশেষে নিজের স্বপ্ন পূরণ করেন শচীন। দিন কয়েক আগেই ফুটবলের কিংবদন্তি মেসি বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফিতে চুমু দেওয়ার সুযোগ পান।
বিশ্ববাসী ধরেই নিয়েছিল আর্জেন্টিনার জার্সিতে ট্রফি জেতার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে ফুটবলের এই জাদুঘরের। তবে প্রকৃতি যেন নিজ থেকেই সুযোগ করে দেয় মেসিকে। মেসির শেষ বিশ্বকাপের সমাপ্তিটাও তাই রূপকথার মতই হয়েছে। আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি না হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ একটি দল বাংলাদেশ। লাল সবুজের দেশটির কাছে বিশ্বকাপে ভালো কিছুই প্রত্যাশা করছে সমর্থকেরা। সাকিবেরও শেষ বিশ্বকাপ এটি।
মেসির মতো সাকিবও খেলতে যাচ্ছেন নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপটি জিতবে বাংলাদেশ এমন প্রত্যাশা করা নিশ্চিতভাবেই বাড়াবাড়ি। তবে স্বপ্ন দেখা তো এই সাকিবই শিখিয়েছেন আমাদের। বাংলাদেশ থেকেও যে বিশ্বসেরা হওয়া যায় এ বিশ্বাসটুকু তো তিনিই দিয়েছেন আমাদের। সাকিবের জন্য হলেও কি স্বপ্নের পরিধিটা কিছুটা বড় করা যায় না? দলের সবাই সর্বোচ্চ চেষ্টা করলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।
২০২৩ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছিলেন"বিগত বিশ্বকাপগুলোতে আমরা গিয়েছিলাম অংশগ্রহণ করতে, তবে ২০২৩ বিশ্বকাপে আমরা যাব জেতার লক্ষ্যে।"অর্থাৎ টাইগারদের লক্ষ্য পরিষ্কার, বিশ্বকাপ জেতার জন্যই ভারতে যাবেন তারা। ২০২৩ বিশ্বকাপ ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়ায় টাইগারদের বিশ্বকাপ জেতার এটাই সেরা সুযোগ। সাকিবের জন্য হলেও বিশ্বকাপটি জেতা উচিত ক্রিকেটারদের। ১৬ বছর দলকে দুহাত ভরে দিয়েছেন, দলের কাছে এতোটুকু পাওনা তো সাকিবের থাকতেই পারে।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাসায় পিঁপড়ে, জানুন আল্লাহর ৫টি গোপন বার্তা!
- ক্যানসারের যেসব প্রাথমিক সতর্ক সংকেত উপেক্ষা করলেই বিপদ
- দুবাইতে চুরি: ৫ প্রবাসীর যাবজ্জীবন ভিসা বাতিল ও কারাদণ্ড
- সৌদি আরবে ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণদের জন্য ৩০ দিনের বাড়তি সুযোগ!
- হাসিনাকে 'পুশ ইন' করার আহ্বান: কাল্পনিক চিত্র, রাজনৈতিক তোলপাড়
- দুই বিভাগে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস: সারাদেশে বর্ষণ অব্যাহত থাকবে
- বাংলাদেশের বাজারে সোনার দাম কমলো: নতুন দর কার্যকর
- টানা বৃদ্ধির পর কমলো সোনার দাম: প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ১৫৭৪ টাকা হ্রাস
- সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল হয়নি: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে গুজব
- এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের সম্ভাব্য স্কোয়াড চূড়ান্ত, বাদ পড়লেন সৌম্য, মিরাজ
- দেশের বাজারে আজ এক ভরি ১৮, ২১, ২২ ক্যারেট সোনার দাম
- সৌদি রিয়ালের বিনিময় রেটের বড় লাফ
- বাংলাদেশের বাজারে আজ এক ভরি সোনার দাম
- ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাড়ল সোনার দাম
- অবিশ্বাস্য ঘটনা: সাপের কামড়ে শিশু নয়, শিশুর কামড়ে সাপের মৃত্যু!