বাংলাদেশের ভূমিকম্পের রেড জোন যেসব এলাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ভূমিকম্প-সংবেদনশীলতার তালিকায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে অবস্থান রংপুরের। বিশেষজ্ঞের সতর্কতা এবং ২৯ বছর আগে সরকারিভাবে 'রেড জোন' ঘোষণা করার পরও এই জনপদে দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতিতে চরম উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) নরসিংদীতে উৎপত্তিস্থল হওয়া ভূমিকম্পের পর রংপুরেও বড় ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই আবারও সামনে এসেছে এই অঞ্চলের নাজুক প্রস্তুতির চিত্র।
ভৌগোলিক অবস্থান ও ঝুঁকির কারণ
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ভূমিকম্পের তিনটি জোনের মধ্যে সিলেট প্রথম এবং রংপুর দ্বিতীয় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।
তাঁর মতে, যমুনা উপারের মধুপুর ফল্ট ও শিলং ফল্ট—এই দুইয়ের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকায় রংপুরের ঝুঁকি অনেক বেশি। ১৮ শতকের শেষের দিকে এই অঞ্চলের চিলমারীতে সাড়ে আট মাত্রার যে ভূমিকম্প হয়েছিল, তার ফলেই যমুনা নদীর উৎপত্তি ঘটেছিল।
বিগত ২১ বছরে রংপুর অঞ্চলে বড় কোনো ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল না। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, দীর্ঘদিন শক্তি সঞ্চিত থাকায় এবার এই অঞ্চলে কম্পনের উৎপত্তি হলে তা ৭ মাত্রার বেশি হতে পারে। এছাড়া ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনক হারে নিচে নেমে যাওয়াকেও ভূমিকম্পের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
প্রশাসনিক উদাসীনতা ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২৯ বছর আগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় রংপুরকে ভূমিকম্পের রেড জোন ঘোষণা করলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। বরং বিল্ডিং কোড না মেনে অবাধে গড়ে উঠছে বহুতল ভবন।
২০১৬ সালে রংপুর নগর ভবন ৪৭টি সরকারি স্থাপনার একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল, যেগুলো অতি ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ট্রেজারি ভবন ও পুরাতন সার্কিট হাউজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভবন রয়েছে। বিস্ময়করভাবে, কয়েকটি ছাড়া বাকি ভবনগুলোতে সামান্য সংস্কার করেই এখনও দাপ্তরিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
২০২০ সালে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ভূমিকম্প মোকাবিলায় একটি বৈঠক থেকে সুপারিশমালা পাঠানো হলেও, সেগুলোর কোনো অগ্রগতি জানা যায়নি।
কম্পনের পরিসংখ্যান ও উদ্ধার সক্ষমতায় ঘাটতি
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, ২০০৯ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ২১ নভেম্বর পর্যন্ত এই অঞ্চলে মোট ১৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ২০২০ সালেই কম্পন অনুভূত হয় ৭৪ বার।
রংপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) বাদশা মাসুদ আলম স্বীকার করেছেন যে, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই অঞ্চল চরম ঝুঁকিতে। তিনি জানান, ৬ মাত্রার বেশি কম্পন হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে, অথচ উদ্ধারকাজের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সংকট এখনও কাটেনি। ফায়ার সার্ভিস জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করলেও বড় দুর্যোগ সামাল দেওয়ার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বড় পরিবর্তনের আভাস দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন ৩০ জন
- যেকোনো সময় বাংলাদেশে আরও বড় ভূমিকম্পের আঘাতের পূর্বাভাস
- শনিবার ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না দেশের যেসব জেলায়
- ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঢাকা; উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশেই
- মুঠোফোনে ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা চালু করুন এক ক্লিকে
- ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত সুপারিশের পথে পে-কমিশন
- পে স্কেল কার্যকরের সময় নিয়ে সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছে
- নরসিংদীর মাধবদী যে কারনে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্র হলো
- বিএনপির প্রার্থী তালিকায় অসন্তোষ: ২৩ আসনে মনোনয়ন পরিবর্তনের ইঙ্গিত
- তৃণমূলের ক্ষোভে বেকায়দায় বিএনপি: ৩০ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা
- আরও কমলো সোনা-রুপার দাম, ভরি কত
- ঢাকা কাঁপানো ভূমিকম্প নিয়ে চরম সতর্কতা: যেকোনো সময় আরও বড় আঘাতের আশঙ্কা
- ভয়াবহ ভূমিকম্পের রেশ কাটেনি: দেশে আবারও ভূমিকম্প
- একদিনে ১৬০০ ভূমিকম্পের ভয়াবহ সংকেত
