সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা করার দাবি: যৌক্তিকতা কী
নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো (পে স্কেল) প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে পে কমিশন। ইতোমধ্যে কর্মচারী সংগঠনগুলো তাদের প্রস্তাব জমা দেওয়া শুরু করেছে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণের বিষয়টি। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনসহ (বিএসকেকেএফ) অধিকাংশ সংগঠনই সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে।
কেন ৩৫ হাজার টাকা দাবি
বিএসকেকেএফ-এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র আব্দুল মালেক এই দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন:
* ১০ বছরের বকেয়া সমন্বয়: সর্বশেষ পে স্কেল হয়েছে ২০১৫ সালে। নিয়ম অনুযায়ী, ২০২০ এবং ২০২৫ সালে দুটি নতুন পে স্কেল হওয়ার কথা ছিল। যদি তা নিয়মিত হতো, তবে ২০২৫ সালে সর্বনিম্ন বেতন স্বাভাবিকভাবেই ৩৩ হাজার টাকা হতো। এই ১০ বছরের ক্ষতি ও দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি সমন্বয় করেই ৩৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে।
* দ্রব্যমূল্যের চাপ: তিনি উল্লেখ করেন, ছয়জনের একটি পরিবারের শুধু ডাল-ভাত-ভর্তার পেছনেই মাসে প্রায় ২৭ হাজার টাকা খরচ হয়। আমিষ, বাসা ভাড়া, চিকিৎসা ও শিক্ষা খরচসহ একটি পরিবারের ব্যয় মাসিক ৫০ হাজার টাকারও বেশি। কিন্তু অনেক কর্মচারী এখনও ১৫ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন।
* ক্ষতিপূরণ ও হতাশা: পে স্কেল নিয়মিত না হওয়ায় কর্মচারীরা আর্থিকভাবে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এই আর্থিক ক্ষতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সামঞ্জস্য রক্ষাই ৩৫ হাজার টাকা দাবির প্রধান কারণ।
কমিশনের কাছে অন্যান্য প্রস্তাব
* গ্রেড কমানো: বৈষম্য কমাতে বিদ্যমান ২০টি গ্রেড কমিয়ে ১২টিতে নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছে বিএসকেকেএফ।
* বেতন অনুপাত: তারা সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত ১:৪ করার প্রস্তাব দিয়েছেন (বর্তমানে এটি ১:১০)।
* বেতন বৃদ্ধির ইঙ্গিত: সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে বেতন ৭০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
রাজস্ব বৃদ্ধি ও বৈষম্য নিরসন
কমিশনের একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, নতুন পে কমিশনের মূল লক্ষ্য হলো বেতন বৈষম্য হ্রাস করা এবং গ্রেড কাঠামো পুনর্বিন্যাস করা।
* কর আওতা: নতুন স্কেল বাস্তবায়িত হলে প্রায় ২২ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আয়করের আওতায় চলে আসবেন, যা সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়াবে।
* সচিবের আশ্বাস: শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞের আহ্বান: আব্দুল মালেক বেসরকারি খাতেও বেতন বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পে স্কেল দিলেই দাম বাড়ে; এটি মাথায় রেখেই আগামী ৫ বছরের কথা চিন্তা করে পে স্কেল দিতে হবে, যাতে মূল্যস্ফীতিতে কর্মীদের ভোগান্তি না বাড়ে এবং সেবার মান উন্নত হয়।
কমিশনের অগ্রগতি
কমিশন ইতোমধ্যে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০টি সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে পে-কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- পে স্কেল চূড়ান্ত: বেতন বাড়ার আগে জিএমপিএস চালু
- নবম পে স্কেল কার্যকর হবে জানুয়ারিতে: অর্থ উপদেষ্টা
- নবম পে স্কেলে আসছে ‘সাকুল্য বেতন’ ধারণা
- পে স্কেল চূড়ান্ত! ২০২৬ এর শুরুতেই কার্যকর
- নতুন পে-স্কেল জানুয়ারি থেকে কার্যকর, বাড়তি চাপ পড়বে যেসব খাতে
- নতুন পে স্কেল: কার্যকর হচ্ছে ২০২৬-এর জানুয়ারি থেকেই
- নবম পে স্কেল ২০২৬-এর শুরুতেই: বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে আসছে ‘সাকুল্য বেতন’ ধারণা
- নতুন পে স্কেলে যেসব আর্থিক সুবিধা বাড়তে পারে
- আজকের সোনার বাজারদর: ৯ নভেম্বর ২০২৫
- সরকারি পে স্কেল: অর্থ বরাদ্দ শুরু, জিপিএমএস আসছে
- ১২ ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে, ৫ বেসরকারি ব্যাংক 'নামেমাত্র টিকে আছে'
- নতুন পে স্কেল: সুপারিশ চূড়ান্তের শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে, তবে বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা
- ১৫ ডিসেম্বরের আল্টিমেটামের মুখে পে-স্কেল নিয়ে নতুন দ্বন্দ্ব
- হংকং সিক্সেস ফাইনাল: দুপুরে হংকংয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ, যেভাবে দেখবেন
- পে স্কেল কার্যকর কবে! জানাল কমিশন
