| ঢাকা, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

ভারতের ভয়ংকর ষড়যন্ত্র কিডনি-হারা বাংলাদেশের এক গ্রাম

জাতীয় ডেস্ক . বিনোদন৬৯.কম
২০২৫ জুলাই ০৬ ১৫:৪৩:৩৫
ভারতের ভয়ংকর ষড়যন্ত্র কিডনি-হারা বাংলাদেশের এক গ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার একটি ছোট্ট গ্রাম বৈগুড়ি—আজ এটি কেবল একটি সাধারণ গ্রাম নয়, বরং পরিচিত ‘কিডনি গ্রাম’ হিসেবে। কেন এমন নামকরণ? কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এক ভয়ংকর মানবপাচারের বাস্তবতা।

গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী শফিরউদ্দিন ২০২৪ সালে ভারতের এক চক্রের কাছে সাড়ে সাত লাখ টাকার চুক্তিতে নিজের কিডনি বিক্রি করেন। দারিদ্র্যের দুঃসহ শেকল ছিন্ন করে সন্তানদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় গড়াই ছিল তার স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্নই পরিণত হয়েছে দুঃস্বপ্নে। অসম্পূর্ণ বাড়ি, শেষ হয়ে যাওয়া টাকা আর শরীরে অসহনীয় যন্ত্রণা এখন তার জীবনসঙ্গী।

আলজাজিরার তথ্যে দেখা গেছে, কালাই উপজেলার গড়ে প্রতি ৩৫ জনের মধ্যে একজন কিডনি বিক্রির ফাঁদে পড়েছেন। তাদের প্রায় সবাই চরম দারিদ্র্যের শিকার। ৪৫ বছর বয়সী বিধবা জোসনা বেগমও ছিলেন এমনই একজন। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় স্বামীসহ কিডনি বিক্রি করেন কলকাতায়। কথা ছিল ৭ লাখ টাকা, পেয়েছেন মাত্র ৩ লাখ। আজ তিনি অসুস্থ, দিনরাত ভোগেন অসহ্য ব্যথায়।

শুধু জোসনা বা শফিরউদ্দিন নন, আরও অনেকেই রয়েছেন এই তালিকায়। তাদেরই একজন সজল (ছদ্মনাম)। একসময় তিনিও কিডনি বিক্রি করেন এবং পরে যুক্ত হন দালাল চক্রে। এখন সেই চক্র থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নিজের জীবন রক্ষার জন্য।

এই মানবপাচারের নেটওয়ার্ক শুধু বাংলাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতেও বিস্তৃত এই অবৈধ কিডনি বাণিজ্য। জাল কাগজপত্র, ভুয়া আত্মীয়তার প্রমাণ এবং সীমান্ত নজরদারির দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ ব্যবসা চলছে দাপটের সঙ্গে। মাঝে মাঝে দু’দেশের প্রশাসন অভিযান চালালেও বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মানবপাচার চক্রের মূল কাঠামো এখনও অক্ষত।

অভিযোগ রয়েছে, কিডনি অপসারণের পর দালালরা ভুক্তভোগীদের পাসপোর্ট কেড়ে নেয়, যাতে তারা পালাতে না পারেন বা আইনি সহায়তা নিতে না পারেন। এসব কিডনি বিক্রি করা হয় ভারতের অভিজাত ও ধনীদের কাছে। ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশটিতে প্রায় ১৩,৫০০ কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে। অথচ সেই একই বছরে শেষ পর্যায়ের কিডনি ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখ! অর্থাৎ হিসাবের বাইরে আরও হাজার হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে—যা স্পষ্ট করে দেয়, অবৈধ বাজার কতটা সক্রিয়।

দালালরা লাভ পায়, হাসপাতালগুলো টাকার ভাগ পায়—কিন্তু কিডনি দেওয়া সেই অসহায় মানুষগুলো শুধু ঠকেন, প্রতারিত হন, আর আজীবন বয়ে বেড়ান শারীরিক যন্ত্রণা ও মানসিক অভিশাপ।

আশা/

ট্যাগ: কিডনি

আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ

ক্রিকেট

অবিশ্বাস্য ভাবে শেষ হল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ম্যাচ

অবিশ্বাস্য ভাবে শেষ হল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ম্যাচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে শ্রীলঙ্কার কাছে প্রথম ম্যাচে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ছিল ...

অবশেষে বড় সুখবর পেলেন সাকিব আল হাসান

অবশেষে বড় সুখবর পেলেন সাকিব আল হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে থাকলেও থেমে নেই সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ...

ফুটবল

যেভাবে মৃত্যু হয় জোটা ও তার ভাইয়ের

যেভাবে মৃত্যু হয় জোটা ও তার ভাইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাত্র ১২ দিন আগে প্রেমিকা রুতে কার্দোসোকে বিয়ে করেছিলেন দিয়োগো জোটা। জাতীয় দলকে ...

আমেরিকার মাটিতে কি ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না ইরান!

আমেরিকার মাটিতে কি ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না ইরান!

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত রাজনীতির আঁচ এবার ছড়িয়ে পড়ছে ক্রীড়াঙ্গনেও। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে যখন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ...