কেন ইরানকে হারাতে পারবে না ইসরায়েল

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে যুদ্ধের গন্ধ—ইরান বনাম ইসরায়েল। প্রশ্ন উঠছে, শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হবে কে? প্রযুক্তিতে শীর্ষে থাকা ইসরায়েল, নাকি দীর্ঘমেয়াদে কৌশলগতভাবে প্রস্তুত ইরান? সরল উত্তর নেই, তবে বাস্তবতা বলছে—ইসরায়েলের পক্ষে এই যুদ্ধ সহজ হবে না।
গত কয়েক বছর ধরেই ইরান যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে শুধু আত্মরক্ষার জন্য নয়, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যও। হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র, গভীর ভূগর্ভস্থ সামরিক ঘাঁটি, উন্নত ড্রোন প্রযুক্তি, এমনকি স্যাটেলাইট এড়িয়ে চলতে সক্ষম মিসাইল—সব মিলিয়ে ইরান নিজেকে তৈরি করেছে একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের জন্য।
অন্যদিকে ইসরায়েল প্রযুক্তিতে আধুনিক হলেও দেশটি ভৌগোলিকভাবে ছোট এবং চারপাশে শত্রু পরিবেষ্টিত। উত্তরে হিজবুল্লাহ, দক্ষিণে হামাস, পশ্চিমে ইয়েমেনের হুথি এবং কেন্দ্রে রয়েছে ইরান নিজেই। ফলে যুদ্ধ হলে একাধিক ফ্রন্টে চাপ নিতে হবে ইসরায়েলকে।
অনেকে বলেন, ইসরায়েলের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র আছে, তাই তারা নিরাপদ। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বলছে, সেই সম্পর্ক এখন বেশ ঠান্ডা। গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে হোয়াইট হাউস প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও শক্তিশালী অস্ত্র চাইলেও, তা নিয়ে ওয়াশিংটনের দ্বিধা দেখা গেছে। এটা কি কৌশলগত দূরত্ব, না কি বড় কোনো ভূরাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত?
এই নাটকে চীন ও রাশিয়াও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ইরানের সঙ্গে চীনের ২৫ বছরের কৌশলগত চুক্তিতে শুধু জ্বালানি নয়, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সহায়তাও রয়েছে। রাশিয়া ইরানকে দিচ্ছে ড্রোন, স্যাটেলাইট সাপোর্ট এবং উন্নত অস্ত্র। অর্থাৎ, ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত মানে শুধু তেহরান নয়, মস্কো ও বেইজিংকেও স্পর্শ করা।
ধরা যাক, ইসরায়েল ইরানের একটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়। তখন একসঙ্গে জ্বলে উঠবে একাধিক ফ্রন্ট—লেবাননে হিজবুল্লাহ ছুঁড়বে রকেট, ইয়েমেনের হুথি লক্ষ্য করবে তেল আবিব, সিরিয়া ও ইরাকের মিলিশিয়ারা নামবে মার্কিন ঘাঁটির বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল কেবল প্রযুক্তির ওপর ভরসা করে টিকে থাকতে পারবে না।
হ্যাঁ, ইসরায়েলের একটি বড় সুবিধা—তাদের পারমাণবিক অস্ত্র। কিন্তু সেটার ব্যবহার এত সহজ নয়, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক চাপ ও কূটনৈতিক ভারসাম্যের কারণে।
ইরান যুদ্ধ চায় না, তবে যুদ্ধ এলে চালায় নিজের নিয়মে। তারা জানে, কিভাবে এমনভাবে জবাব দিতে হয় যাতে শত্রু দ্বিতীয়বার ভেবে দেখে। এই মনোভাবকে এখন পশ্চিমারা বলে ‘ডিটারেন্স ক্যালকুলেশন’। অর্থাৎ, তারা যুদ্ধ শুরুর আগেই বিশ্বকে জানিয়ে দেয়—‘আমি প্রস্তুত’।
সবচেয়ে বড় কথা, এই লড়াই শুধু দু’টি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আদর্শ, ভূরাজনীতি ও অস্তিত্বের সংঘর্ষ। পশ্চিমা আধিপত্যের সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটি ধর্মীয় পরিচয় ও ঐতিহাসিক প্রতিরোধের দেশ—ইরান। আর যখন কেউ নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যুদ্ধ করে, তখন তাকে হারানো সহজ নয়।
তাই প্রশ্নটা এখন প্রযুক্তি নয়, বরং কৌশল, ধৈর্য ও প্রস্তুতির। আর এই তিনটি দিকেই আপাতত ইরান এগিয়ে আছে। ইসরায়েল কি সেটা বুঝতে পারছে, নাকি অপেক্ষা করছে এমন এক ভুল পদক্ষেপের, যেখান থেকে আর ফিরে আসার পথ থাকবে না?
আশা/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- জান্নাতি ব্যাক্তির ৩ টা রোগ লেগেই থাকে
- রেলগাড়ি থেকে ঝুলিয়ে ফেলে দেওয়া: ভাইরাল ভিডিওর নেপথ্যে কী ঘটেছিল
- ভোক্তা অধিকারের আব্দুল জব্বার মন্ডলের উপর হামলা, সত্যতা নিয়ে যা জানা গেল
- বাংলাদেশের বাজারে আজ এক ভরি সোনা ও রূপার দাম
- সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বেতন বাড়লো সরকারি চাকরিজীবীদের
- নতুন অর্থবছরে মহার্ঘ ভাতা আসছে, নিশ্চিত করলেন অর্থ উপদেষ্টা
- বাংলাদেশে ধেয়ে আসছে বন্যা, ডুবে যেতে পারে ৪ জেলা
- পরীমণির মৃত্যুর গুজব: সত্যিটা কী!
- নতুন হারে মহার্ঘ ভাতা: কোন গ্রেডে কত বাড়ছে!
- যদি এই ৪টি আলামত থাকে, বুঝবেন আল্লাহ আপনাকে খুব ভালোবাসেন
- গ্রামের গোপন কারখানায় তৈরি হচ্ছে অনুমোদনহীন শিশুখাদ্য
- ৯০ হাজার প্রাণ, ১৫০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি: পাকিস্তানের দাবি
- মমতাজের বাড়ি থেকে ৯০০ কোটি উদ্ধারের ভিডিও আসলে কী
- কক্সবাজারে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে যা জানা গেছে
- আছিয়া হত্যা মামলার রায় ঘোষণা: হিটু শেখের ফাঁসি