শবে বরাতে ইবাদত করবেন যেভাবে

শাবান মাস হলো আমলনামা উত্থাপনের মাস, যেখানে আমাদের এক বছরের সমস্ত আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। এই মাসে ইবাদত-বন্দেগির প্রতি মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শাবান মাস রমজান মাসের আগমনী বার্তা, তাই এই মাসটি শারীরিক ও আত্মিকভাবে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে ১৩, ১৪, ১৫ শাবান তারিখে নফল রোজা রাখা এক ধরনের সুন্নাত আমল।
লাইলাতুল বরাতের গুরুত্ব ও ফজিলত
শাবান মাসের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাত হলো অর্ধ-শাবান বা চৌদ্দ শাবানের রাত, যা ‘শবে বরাত’ নামে পরিচিত। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির দিকে বিশেষ দয়া ও রহমত প্রদান করেন এবং তিনি তাঁর সৃষ্টির সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন, তবে শিরক ও বিদ্বেষের মতো বড় গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিদের মাফ করেন না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "আল্লাহ তায়ালা অর্ধ-শাবানের রাতে সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন, অতঃপর তিনি সকল সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন, কেবল শিরককারী ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতীত।" (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫)
এটি একটি বিশেষ রাত, যেহেতু এই রাতে আমাদের গুনাহ মাফ হতে পারে এবং আমরা আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারি। অতএব, আমাদের উচিত এই রাতটি ইবাদত, দোয়া, ইস্তিগফার এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে অতিবাহিত করা।
শবে বরাতে করণীয় এবং বর্জনীয়
শবে বরাতে আমরা যেসব আমল করতে পারি, তা হলো:
1. ইবাদত-বন্দেগি: শবে বরাতে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া, ইস্তিগফার এবং নফল নামাজ পড়া সুন্নত। এছাড়া, দরিদ্রদের সাহায্য করা, জাকাত ও দান-সদকা দিয়ে গরিব-অসহায়দের সহায়তা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 2. রাত জাগরণ: ১৪ শাবানের দিবাগত রাতে রাত জাগরণ, দোয়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা সুন্নত। এই রাতে যতটা সম্ভব আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠতা ও বিনয়ের সাথে দোয়া করা উচিত।
3. নফল নামাজ: বিশেষ নামাজের কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন নেই। এই রাতে মানুষ যেকোনো সূরা দিয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে পারে। কিছু বইয়ে বিশেষভাবে নির্দিষ্ট সূরা বা রাকাত সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে, তবে এগুলো বিদআত এবং কুসংস্কার।
4. বিস্তারিত দোয়া ও ইস্তিগফার: রাতটি দোয়া এবং ইস্তিগফারের মাধ্যমে অতিবাহিত করতে হবে। আল্লাহর কাছে সারা বছর করা গুনাহর জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত।
শাবান মাসে বিদআত ও ভুল বিশ্বাস
শাবান মাসে কিছু ভুল বিশ্বাস ও বিদআত ছড়িয়ে পড়েছে, যেমন:
1. বিশেষ পদ্ধতিতে নামাজ পড়া: ১৪ শাবানের রাতে বিশেষভাবে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নামাজ পড়ার ধারণা ভুল। এর কোনো সহিহ হাদিসে প্রমাণ নেই। বরং সাধারণভাবে যে কোনো সূরা পড়তে পারেন, কিন্তু নিয়মিত কোরআনের তিলাওয়াত ও দোয়া করা উচিত।
2. হালুয়া-রুটি এবং কবর জিয়ারত: হালুয়া-রুটির আয়োজন করা কিংবা কবর জিয়ারতকে ফরজ মনে করা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এগুলোর জন্য কোনো হাদিস বা ইসলামী বিধান নেই।
3. শুধুমাত্র ১৪ শাবানের রাতকে ইবাদত করার ধারণা: অনেকেই মনে করেন যে শুধু ১৪ শাবানের রাতেই বিশেষভাবে ইবাদত করতে হবে, অন্য রাতের কোনো গুরুত্ব নেই। তবে এটি একটি ভুল ধারণা। আসলে পুরো শাবান মাসেই ইবাদত ও নেক আমল করার চেষ্টা করা উচিত।
শাবান মাসের ফজিলত ও আল্লাহর রহমত
শাবান মাস আল্লাহর এক বিশেষ অনুগ্রহের মাস, যা আমাদের গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার, আমলনামা শুদ্ধ করার এবং রমজানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার একটি সুবর্ণ সুযোগ। এই মাসে যত বেশি সম্ভব ইবাদত, দোয়া, ইস্তিগফার এবং দান-সদকা করা উচিত।
এছাড়া, আমাদের উচিত শাবান মাসে রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করে গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহর রহমত লাভের জন্য পরিপূর্ণভাবে ইবাদত করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই বরকতময় মাসের ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- তুমুল সংঘর্ষ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে, ৫৪ জনের মৃত্যু
- সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বেতন বাড়লো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের
- আলেমদের বেইজ্জতি করার পরিণতি সাতক্ষীরা চেয়ারম্যান
- ভারত থেকে যে ৩৩ পন্য আমদানী বন্ধ
- মারা গেছেন চিত্রনায়ক রুবেল, সত্যতা নিয়ে যা জানা গেল
- অভিনেতা সিদ্দিক যেভাবে আটক হলেন
- বিশ্বব্যাংকের লাল তালিকায় বাংলাদেশ, খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে টানা দ্বিতীয় বছর
- উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশকে বার্তা পাঠাল পাকিস্তান
- পাক-আফগান সীমান্তে বড়সড় অভিযানে ৭১ সন্ত্রাসী নিহত
- পর্যটকের ক্যামেরায় ধরা পড়লো কাশ্মীর হামলার দৃশ্য
- ভারতকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে, এটা কোনভাবেই কম হবে না
- ডিজেল ও পেট্রলের দাম কমালো সরকার
- সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা নিয়ে বড় সুখবর
- ২০২৫ সালে এসে কত বছর খাজনা না দিলে জমি খাস হবে
- গর্ভে সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে কোরআনের আবাক করা তথ্য