এক ধাক্কায় পেজের দাম কমিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি করতে যে সিদ্ধান্ত দিলো ভারত

দীর্ঘ দশ মাসের নিষেধাজ্ঞার পর অবশেষে ভারতের সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল। প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের জন্য নির্ধারিত ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য (৫৫০ ডলার) শর্ত বাতিলের পাশাপাশি রপ্তানি শুল্ক ৪০ শতাংশ থেকে এক ধাক্কায় কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। শুক্রবার ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এই পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়।
‘দ্য হিন্দু’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহারাষ্ট্র রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে পেঁয়াজ রপ্তানিতে শর্ত শিথিলের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ উৎপাদনকারী রাজ্য, যা দেশটির পেঁয়াজ বাণিজ্যে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পেঁয়াজের ঘাটতির আশঙ্কায় ভারতের সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এর মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত, তবে বাংলাদেশের মতো বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর অনুরোধে সীমিত পরিসরে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞার কারণে মহারাষ্ট্রসহ ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষকরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন এবং সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা গত মে মাসে তুলে নেওয়া হলেও, তখনই ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৫৫০ ডলার এবং ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। তবে সম্প্রতি, অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের আকাশচুম্বী দামের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য বাতিলের ঘোষণা দেয়। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয় রপ্তানি শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করার নির্দেশনা জারি করে।
গত কয়েক মাসে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম দ্রুত বেড়েছে। জুলাই মাসে পাইকারি বাজারে দাম প্রায় ৮৮ শতাংশ বেড়ে যায়, আর আগস্টে খুচরা বাজারে ৫০ শতাংশেরও বেশি দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুধু পেঁয়াজই নয়, একই দিনে ভারত সরকার বাসমতি চাল রপ্তানির ক্ষেত্রেও বড় সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতি মেট্রিক টন বাসমতি চালের জন্য ৯৫০ ডলারের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য শর্ত তুলে দেওয়া হয়। কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্য রপ্তানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (এপিইডিএ) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে বাসমতি চাল রপ্তানিতে কোনো ‘অবাস্তব মূল্য’ নির্ধারণ করা না হয়।
ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম পেঁয়াজ রপ্তানিকারক দেশ। বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, নেপাল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো ভারতীয় পেঁয়াজের প্রধান ক্রেতা। যখন ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তখন দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম কিছুটা স্থিতিশীল হলেও, বিশ্ববাজারে এর প্রভাব ছিল ব্যাপক। বাংলাদেশের বাজারেও পেঁয়াজের দাম তখন লাগামহীনভাবে বেড়ে গিয়েছিল।
ভারতে পেঁয়াজ শুধু একটি কৃষিজ পণ্য নয়, বরং রাজনৈতিক অর্থনীতিতে এর প্রভাবও অত্যন্ত গভীর। ১৯৮০ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ইন্দিরা গান্ধী সেই নির্বাচনকে ‘পেঁয়াজের নির্বাচন’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন, কারণ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তৎকালীন সরকার। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর, কংগ্রেস সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়, এবং পেঁয়াজের রপ্তানির হার বেড়ে যাওয়ার ফলে কৃষক ও রপ্তানিকারকরা ব্যাপক লাভবান হন। সেই সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৬ রুপিতে পৌঁছেছিল, যা সেই সময়ের জন্য ছিল অভাবনীয়।
ভারতের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে পেঁয়াজের এমন প্রভাব আজও বিদ্যমান, এবং বর্তমান সরকারও তা ভালোভাবেই উপলব্ধি করছে।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাংলাদেশকে সতর্কবার্তা পাঠাল ইরান
- পায়খানার রাস্তার লোম কাটা জায়েজ কিনা
- সহবাসের পর বীর্য বাইরে ফেললে গুনাহ হয় কি
- দেশে জ্বালানি তেলের দাম নতুন করে নির্ধারণ
- বাংলাদেশের বাজারে আজ ১ ভরি সোনার দাম
- কোন রক্তের গ্রুপে গরম বা শীত বেশি লাগে
- বাংলা ১০ সিনেমায় বাস্তবেই সহবাস করতে হয়েছে নায়ক-নায়িকাদের
- অবশেষে ভারতীয় ভিসা নিয়ে এলো বড় সুখবর!
- নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকিতে বাংলাদেশ!
- মৃত্যুর আগে মানুষ যে স্বপ্ন বার বার দেখে
- চাকরিতে থাকা বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বড় সুখবর
- অবশেষে বাংলাদেশকে সুখবর পাঠাল ভারত
- ইরানের জন্য নতুন দুঃসংবাদ
- আবারও ইসরায়েলে হামলা
- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হতে পারে বিকট শব্দ, যা জানা গেল