কতটা শক্তিশালী ইসরায়েলি গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিদেশের মাটিতে একের পর এক টার্গেট কিলিং কিংবা হাই-প্রিসিশন হামলায় বারবার উঠে এসেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নাম। শুধু সম্প্রতি নয়, বহু দশক ধরেই এধরনের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। একইসঙ্গে হিজবুল্লাহর যোগাযোগ ব্যবস্থাও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণে প্রায় ৩৭ জন নিহত হয়। এর আগে এপ্রিল মাসে দামেস্কে ইরানি কূটনৈতিক ভবনে ইসরায়েলি হামলায় ১৩ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ইরান বিপ্লবী গার্ডের সদস্যরাও ছিলেন। জুলাইয়ে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহও তেহরানে নিহত হন, যদিও ইসরায়েল এসব হামলার দায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।
তাহলে প্রশ্ন হলো, কিভাবে এত গোপন ও সফলভাবে এসব অভিযান চালায় ইসরায়েল? তাদের গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক আদৌ কতটা শক্তিশালী?
মোসাদ: ইসরায়েলের ছায়া বাহিনী
ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার দেড় বছরের মাথায়, ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে গঠিত হয় বহুল আলোচিত ও ভয়ংকর গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। এর মূল দায়িত্ব দেশের বাইরের হুমকি শনাক্ত ও প্রতিহত করা। বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা—সাইবার গোয়েন্দাবৃত্তি, হ্যাকিং, ড্রোন, স্যাটেলাইট ইত্যাদিতে তারা সিদ্ধহস্ত। মোসাদের সদস্যরা পেশাদার, সুপ্রশিক্ষিত এবং কৌশলী। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সক্রিয়ভাবে কাজ করে।
শিন বেত (সাবাক): দেশের অভ্যন্তরীণ নজরদারি
মোসাদের পাশাপাশি কাজ করে শিন বেত বা সাবাক, যার কাজ দেশের ভেতরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিশেষ করে গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে আসা হুমকি মোকাবিলায় এই সংস্থার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
আমান: সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা
‘আমান’ হলো ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা ইউনিট, যা সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের অধীনে পরিচালিত হয়। এর কাজ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো বিশ্লেষণ করে সামরিক নেতৃত্বকে সহায়তা করা।
ইউনিট ৮২০০: সাইবার গোয়েন্দার হুবহু ঘাঁটি
ইসরায়েলের অন্যতম গোপন এবং প্রযুক্তিগতভাবে অগ্রসর ইউনিট হলো ৮২০০। এই ইউনিটের সদস্যসংখ্যা প্রায় এক লাখ। তারা মূলত ইলেকট্রনিক গোয়েন্দা, হ্যাকিং, কোড বিশ্লেষণ ও সামাজিক মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহে নিয়োজিত। ধারণা করা হয়, ২০১০ সালে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সাইবার হামলায় ব্যবহৃত স্টাক্সনেট ভাইরাসের পেছনেও ছিল ইউনিট ৮২০০।
ইউনিট ৯৯০০: ইসরায়েলের ‘চোখ’
এই ইউনিট কাজ করে ভূ-চিত্র বিশ্লেষণে। স্যাটেলাইট, ড্রোন ও গোয়েন্দা বিমানের মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে সেনা কমান্ডারদের সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য ৩-ডি ম্যাপ তৈরি করাও তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
ইউনিট ৫০৪: মানব গোয়েন্দা
মানব গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে কাজ করে ইউনিট ৫০৪। দেশের ভিতরে যেমন তেমন, সীমান্তের বাইরেও তারা গুপ্তচর নিয়োগ করে থাকে। গাজা, সিরিয়া কিংবা লেবাননে অনেক মিশনে এই ইউনিট সক্রিয়।
নতুন ইউনিট: ইরান কেন্দ্রিক নজরদারি
২০২৩ সালের জুনে ইসরায়েল একটি নতুন গোয়েন্দা ইউনিট গঠন করে, যেটি সরাসরি ইরান ও বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তুতির কাজ করে। প্রাথমিকভাবে এতে কাজ শুরু করেন মাত্র ৩০ জন সদস্য।
এইসব গোয়েন্দা ইউনিটের সম্মিলিত কার্যক্রম ও দক্ষতাই ইসরায়েলকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শত্রুদের বিরুদ্ধে সফল অপারেশনের দিক থেকে। এমনকি যেখানে অনেক রাষ্ট্র ব্যর্থ, সেখানে ইসরায়েল চুপিসারে মিশন সম্পন্ন করে—প্রমাণ করে তারা শুধু প্রযুক্তিগতভাবেই নয়, গোয়েন্দা দৃষ্টিভঙ্গিতেও এক ভয়ংকর শক্তি।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- ১২ দেশের নাগরিকদের আজীবন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ
- আবারও কমলো জ্বালানি তেলের দাম
- যে ২ বিষয়ে বিএনপি একমত হলেই ফেব্রয়ারিতে নির্বাচন
- পাসপোর্ট পাবেন না যে তিন শ্রেণির লোক
- হঠাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য জরুরি নির্দেশনা
- আজ দেশের বাজারে ১ ভরি ১৮, ২১, ২২ ক্যারেট সোনার দাম
- এই ৪টি আলামত থাকলে বুঝে নিন — আল্লাহ আপনাকে ভালোবাসেন!
- ১ জুলাই থেকে সরকারি কর্মীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা: কোন গ্রেডে কত পাবেন
- এসএসসির ফল প্রকাশ হতে পারে যেদিন
- ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হলো যাদের
- বাংলাদেশে ভারী বৃষ্টিপাত যেদিন থেকে
- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে ১-৩ লক্ষ টাকা রাখলে মাসিক কত লাভ পাবেন
- বাংলাদেশের হার, এশিয়াকাপের কোন সমীকরণে বাংলাদেশ
- কালো জাদু কি সত্যিই কাজ করে!
- অবসর ভেঙে দলে ফিরতে পারেন বাংলাদেশের ২ ক্রিকেটার