সোহাগ আহমদে
সিনিয়র রিপোর্টার
সিটিসেলের ফেরার পথে গোপনে বাধা দিচ্ছে কারা
বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের বাজারে ফিরে আসার খবরে দেশের টেলিকম খাতে বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ আট বছর কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর, সিটিসেল আনুষ্ঠানিকভাবে লাইসেন্স ও তরঙ্গ ফেরত চেয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) আবেদন করেছে।
এই প্রত্যাবর্তনের খবরে একদিকে যেমন পুরনো গ্রাহকরা নস্টালজিয়ায় ভাসছেন, তেমনি অন্যদিকে প্রতিষ্ঠিত বড় অপারেটর, বিশেষত গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক-এর মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র উদ্বেগ ও গোপন তৎপরতা।
টেলিনরের উদ্বেগ ও প্রতিযোগিতার আশঙ্কা:
সিটিসেল ফিরে আসার খবরে দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের মূল সংস্থা টেলিনর গ্রুপ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ আলোচনায় সিটিসেলের প্রত্যাবর্তনকে বাংলাদেশের টেলিকম ব্যবসার জন্য একটি 'বড় ঝুঁকি' হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যদি সিটিসেল প্রযুক্তি নিরপেক্ষ লাইসেন্স নিয়ে ৪জি বা ৫জি সেবার মাধ্যমে প্রত্যাবর্তন করে এবং প্রতিযোগিতামূলক কম মূল্যে কল রেট ও ইন্টারনেট সেবা দেয়, তবে তা বাজারে গ্রামীণফোনের একক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে এবং রাজস্বের ওপর প্রভাব ফেলবে।
গোপন তৎপরতার অভিযোগ:
বর্তমানে টেলিকম বাজারে একটি বা দুটি প্রতিষ্ঠানের একক আধিপত্য থাকায় ছোট অপারেটরদের জন্য প্রতিযোগিতা কঠিন। এই পরিস্থিতিতে, সিটিসেলের মতো একটি নস্টালজিক ব্র্যান্ডের প্রত্যাবর্তন বর্তমান অপারেটররা চায় না বলে বাজারে রটনা রয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রতিষ্ঠিত অপারেটররা নীতি নির্ধারক ও প্রশাসনিক পর্যায়ে নানাভাবে গোপনে বাধা প্রদানের চেষ্টা করছে। টেলিকম বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাজারে বিদ্যমান প্রতিযোগিতা আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণেই এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর ও গোপন প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হচ্ছে, যা শেষ পর্যন্ত গ্রাহকের স্বার্থকেই ক্ষুণ্ন করে।
গ্রাহকদের জন্য সুফল:
সিটিসেলের প্রত্যাবর্তন কেবল একটি কোম্পানির ফিরে আসা নয়, বরং এটি দেশের টেলিকম বাজারের কাঠামোকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
* কমবে খরচ: নতুন প্রতিযোগী হিসেবে টিকে থাকতে সিটিসেলকে অবশ্যই কম দামে বা বেশি ডেটা/টকটাইম অফার করতে হবে। এর ফলে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকও তাদের অফারগুলো আরও সাশ্রয়ী করতে বাধ্য হবে, যার সরাসরি সুফল পাবে সাধারণ মানুষ।
* সেবার মান: প্রতিযোগিতা বাড়লে সব অপারেটরই তাদের গ্রাহকসেবা, কল ড্রপ সমস্যা এবং নেটওয়ার্কের মান বাড়াতে মনোযোগ দেবে, বিশেষ করে দুর্বল নেটওয়ার্কের এলাকাগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
* নতুন প্রযুক্তি: সিটিসেল যদি সরাসরি ৫জি-এর মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী প্যাকেজ নিয়ে আসে, তবে তা বর্তমান অপারেটরদের গতানুগতিক অফার থেকে ভিন্ন হবে।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ:
সিটিসেলকে সফলভাবে বাজারে ফিরতে হলে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ, অত্যাধুনিক অবকাঠামো তৈরি, নতুন প্রযুক্তি আয়ত্ত করা এবং বকেয়া পরিশোধসহ আইনি জটিলতা নিরসন করার মতো বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, যদি তারা এই সকল বাধা পেরিয়ে সফলভাবে ফিরতে পারে, তবে বাংলাদেশের টেলিকম শিল্প এবং গ্রাহক সমাজ উভয়ই এর ইতিবাচক ফল ভোগ করবে এবং বাজারে একটি স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য ফিরে আসবে।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- পে স্কেল চূড়ান্ত: বেতন বাড়ার আগে জিএমপিএস চালু
- নবম পে স্কেলে আসছে ‘সাকুল্য বেতন’ ধারণা
- আজকের সোনার বাজারদর: ৮ নভেম্বর ২০২৫
- মহার্ঘ ভাতা: ১১-২০ গ্রেডের কর্মীদের জন্য ২৫% বৃদ্ধির প্রস্তাব, সর্বনিম্ন ৪,০০০ টাকা!
- নবম পে স্কেল কার্যকর হবে জানুয়ারিতে: অর্থ উপদেষ্টা
- নতুন পে-স্কেল জানুয়ারি থেকে কার্যকর, বাড়তি চাপ পড়বে যেসব খাতে
- নতুন পে স্কেলে যেসব আর্থিক সুবিধা বাড়তে পারে
- পে স্কেল চূড়ান্ত! ২০২৬ এর শুরুতেই কার্যকর
- নবম পে স্কেল ২০২৬-এর শুরুতেই: বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে আসছে ‘সাকুল্য বেতন’ ধারণা
- নতুন পে স্কেলে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে সুপারিশ
- ১২ ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে, ৫ বেসরকারি ব্যাংক 'নামেমাত্র টিকে আছে'
- নতুন পে স্কেল: সুপারিশ চূড়ান্তের শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে, তবে বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা
- দেশের বাজারে আজ এক ভরি স্বর্ণের দাম
- আজকের সোনার বাজারদর: ৯ নভেম্বর ২০২৫
- ২০২৬ সালে সরকারি ক্যালেন্ডারে যুক্ত হলো নতুন ছুটি
