জোরপূর্বক জমি দখল হলে কী করবেন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভয়ভীতি প্রদর্শন বা হুমকির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি অন্যের জমিতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে এবং জোরপূর্বক তা ভোগদখল করে, তবে তা প্রচলিত আইন অনুযায়ী একটি গুরুতর ফৌজদারি ও দেওয়ানি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। ভুক্তভোগীর উচিত দ্রুত ও সঠিকভাবে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা।
১. অপরাধের সংজ্ঞা ও প্রযোজ্য আইন
জোরপূর্বক জমি দখলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত দণ্ডবিধি (Penal Code) অনুযায়ী নিম্নোক্ত ধারাগুলো প্রয়োগ করা যায়:
* দণ্ডবিধি ৪৪১ ধারা (অবৈধ অনুপ্রবেশ): আদালতের অনুমতি ছাড়া বা বেআইনিভাবে কারও জমিতে প্রবেশ করা এই ধারায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।
* দণ্ডবিধি ৫০৬ ধারা (ভয়ভীতি প্রদর্শন): হুমকি বা ভয় দেখিয়ে জমি দখল করা হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এই ধারায় ফৌজদারি মামলা করা যায়।
২. প্রাথমিক পদক্ষেপ: প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তা
জমি দখলের শিকার হলে কালক্ষেপণ না করে দ্রুত নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
* থানায় অভিযোগ (জিডি/এফআইআর): তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি (GD) অথবা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরাসরি ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট (FIR) দায়ের করুন। অভিযোগে জমির সঠিক বিবরণ, দখলের সময় এবং অভিযুক্তদের নাম-পরিচয় স্পষ্ট উল্লেখ করতে হবে।
* স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহায়তা: প্রয়োজনে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার বা কাউন্সিলরের মাধ্যমে সালিশের চেষ্টা করা যেতে পারে।
* প্রশাসনিক অভিযোগ: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বা জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জমা দিন। প্রশাসন ভূমি অফিসকে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে।
৩. আদালতের আশ্রয়: দেওয়ানি মামলা ও নিষেধাজ্ঞা
যদি প্রাথমিক প্রশাসনিক বা পুলিশি ব্যবস্থা কার্যকর না হয়, তবে দেওয়ানি (Civil) আদালতের আশ্রয় নিতে হবে।
* মালিকানা সংক্রান্ত মামলা: জমির বৈধ মালিকানা প্রমাণের জন্য সিভিল কোর্টে মামলা দায়ের করতে হবে।
* অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা (Injunction): মামলা দায়েরের সময় আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা সবচেয়ে জরুরি। এই নিষেধাজ্ঞা জারি হলে দখলদার জমিতে কোনো ধরনের নির্মাণ কাজ বা পরিবর্তন করতে পারবে না।
* প্রমাণাদি পেশ: আদালতে অবশ্যই জমির মূল কাগজপত্র, খাজনা পরিশোধের রশিদ এবং পূর্বে আপনার দখলের প্রমাণাদি জমা দিতে হবে।
৪. কেন সঠিক আইনি ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ
জমি দখলের অভিযোগ সময়মতো না করলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দখলকারী আইনি দুর্বলতার সুযোগ নিতে পারে এবং পরবর্তীতে উল্টো সেই জমির মালিকানা দাবি করে বসতে পারে।
৫. যেখানে আইনি সহায়তা পাবেন
আর্থিকভাবে অসচ্ছল ব্যক্তিরা নিম্নোক্ত সরকারি ও আইনি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে সহায়তা পেতে পারেন:
* পুলিশ ও জেলা প্রশাসন: থানা এবং জেলা পুলিশের সহায়তা সেল।
* উপজেলা ভূমি অফিস: ভূমির রেকর্ড ও প্রশাসনিক নির্দেশনার জন্য।
* লিগ্যাল এইড: অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল ব্যক্তিরা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে বিনামূল্যে আইনজীবীর সহায়তা পেতে পারেন।
জোরপূর্বক জমি দখলের ঘটনা অপ্রত্যাশিত হলেও ভুক্তভোগীকে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইন আপনার পাশে আছে—শুধু সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়াই মূল বিষয়।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- আগামী ৮ তারিখ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ
- বেতন কাঠামো নিয়ে আসছে বড় সুখবর
- লাফিয়ে কমলো পেঁয়াজের দামে
- নবম পে-স্কেলের দাবিতে দেশজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করার হুঁশিয়ারি
- শনিবার ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না দেশের যেসব জেলায়
- ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঢাকা; উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশেই
- আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ল
- নতুন পে স্কেল কার্যকর নিয়ে সর্বশেষ যা জানা গেল
- পে স্কেলের পথে কমিশন: সোমবার সচিব সভা, রিপোর্ট ডিসেম্বরে
- বিএনপি অভ্যন্তরীণ কোন্দল: ২৩ আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন
- সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বড় পরিবর্তনের আভাস দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত সুপারিশের পথে পে-কমিশন
- পে স্কেল কার্যকরের সময় নিয়ে সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছে
- নতুন সিদ্ধান্ত: দেশে ফিরতেই হবে শেখ হাসিনার
- যেকোনো সময় বাংলাদেশে আরও বড় ভূমিকম্পের আঘাতের পূর্বাভাস
