দলিল বড়, রেকর্ড বড় নাকি দখল বড়: আইন কী বলে?
নিজস্ব প্রতিবেদক: "দলিল বড়, রেকর্ড বড়, নাকি দখল বড়?"— এটি বাংলাদেশের ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের সবচেয়ে জটিল এবং সাধারণ প্রশ্ন। প্রায়শই দেখা যায়, একটি জমির দলিল একজনের নামে, রেকর্ড (খতিয়ান) আরেকজনের নামে, আর জমিতে বসবাস বা দখল আছে তৃতীয় কোনো ব্যক্তির। এই জটিল পরিস্থিতিতে আইন অনুযায়ী জমির প্রকৃত মালিক কে হবেন?
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, জমির মালিকানা নির্ধারণে রেকর্ড, দলিল এবং দখল—এই তিনটি বিষয়েরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে কোনটির আইনি শক্তি বেশি, তা নির্ভর করে সেগুলোর ধারাবাহিকতা এবং প্রমাণের শক্তির ওপর।
১. রেকর্ড (খতিয়ান): মালিকানার মূল ভিত্তি
জমির মালিকানার ক্ষেত্রে রেকর্ড বা খতিয়ান হলো আইনি ভিত্তির প্রথম ধাপ। বাংলাদেশে ব্রিটিশ আমল থেকে আজ পর্যন্ত সিএস (CS), এসএ (SA), আরএস (RS), বিএস (BS), সিটিজ (City Survey) এবং সর্বশেষ বিডিএস (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে) সহ একাধিক ভূমি জরিপ পরিচালিত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিএস (Cadastral Survey) রেকর্ড হলো মালিকানার মূল ভিত্তি বা শেকড়। যদি কোনো ব্যক্তি তার জমির মালিকানার ধারাবাহিকতা সিএস রেকর্ড থেকে শুরু করে সর্বশেষ রেকর্ড (যেমন বিএস বা সিটিজ) পর্যন্ত সঠিকভাবে প্রমাণ করতে পারেন, তবে সেই রেকর্ডের দাবিই আদালতে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে গণ্য হবে।
গুরুত্বপূর্ণ: শুধু একটি খতিয়ানে নাম থাকাই যথেষ্ট নয়, সেই খতিয়ানটি কীভাবে পূর্ববর্তী খতিয়ান থেকে এলো, সেই ধারাবাহিকতা (Chain of Title) প্রমাণ করা জরুরি।
২. দলিল: মালিকানা হস্তান্তরের প্রমাণ
দলিল হলো জমি ক্রয়, দান, বা অন্য কোনো উপায়ে মালিকানা হস্তান্তরের আইনি চুক্তিপত্র।
তবে একটি দলিলের বৈধতা যাচাই করতে হলে দুটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
ক) যিনি জমি বিক্রি করেছেন (দাতা), তিনি কি আইনত ওই জমির মালিক ছিলেন?
খ) তার মালিকানা কি সিএস রেকর্ডের ধারাবাহিকতায় সঠিকভাবে এসেছে?
যদি বিক্রেতার নিজের নামেই জমির বৈধ রেকর্ড বা মালিকানার সঠিক ধারাবাহিকতা না থাকে, তবে তার তৈরি করা শত শত দলিলও আদালতে মূল্যহীন বা জাল প্রমাণ হতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ: একটি বৈধ দলিল অবশ্যই রেকর্ডের ধারাবাহিকতার অংশ হতে হবে।
৩. দখল: একটি শর্তসাপেক্ষ অধিকার
অনেকেই মনে করেন, "দখল" থাকলেই জমির মালিক হয়ে যাওয়া যায়। এই ধারণাটি পুরোপুরি সত্য নয়। তবে, বাংলাদেশের তামাদি আইন (Limitation Act) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি একটি সম্পত্তিতে একটানা ১২ বছরের বেশি সময় ধরে প্রকাশ্যে এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে দখলদার থাকেন, এবং ওই সময়ের মধ্যে মূল মালিক তাকে উচ্ছেদের জন্য কোনো আইনি পদক্ষেপ বা মামলা না করেন, তবে দখলকারী ব্যক্তি "বিরুদ্ধ দখল" (Adverse Possession) বা অধিকারপ্রাপ্ত মালিক হিসেবে গণ্য হতে পারেন।
তবে এর জন্য কঠোর শর্ত পূরণ করতে হয়:
* দখলটি হতে হবে প্রকাশ্য, গোপন নয়।
* দখল হতে হবে নিরবচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিক।
* মূল মালিকের জ্ঞাতসারে হতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ: জোরপূর্বক বা অবৈধভাবে দখল করে জমির মালিকানা দাবি করা যায় না, যদি মূল মালিকের কাছে বৈধ রেকর্ড ও দলিল থাকে।
কে হবেন জমির আসল মালিক? (চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত)
আইন অনুযায়ী, উপরের তিনটি বিষয়ের মধ্যে কোনো একটি এককভাবে মালিকানা প্রমাণ করে না। জমির আসল মালিক তিনিই হবেন:
* যিনি সিএস রেকর্ড থেকে শুরু করে সর্বশেষ রেকর্ড পর্যন্ত মালিকানার সঠিক ধারাবাহিকতা প্রমাণ করতে পারবেন;
* যার কাছে সেই রেকর্ডের ভিত্তিতে করা বৈধ দলিল (ক্রয়/উত্তরাধিকার সূত্রে) রয়েছে; এবং
* যিনি সেই দলিল ও রেকর্ডের ভিত্তিতে আইনিভাবে জমির দখলে আছেন।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
ভূমি আইনজীবীরা সবসময় পরামর্শ দেন যে, জমি কেনার আগে শুধু বিক্রেতার দলিল বা বর্তমান দখল দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। অবশ্যই জমি কেনার আগে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও ভূমি অফিসে গিয়ে সেই জমির সিএস রেকর্ড থেকে শুরু করে সর্বশেষ রেকর্ড পর্যন্ত সমস্ত খতিয়ান ও দলিলের ধারাবাহিকতা (চেইন অব টাইটেল) যাচাই করে নিতে হবে।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- আজ ব্রাজিল বনাম বাংলাদেশ সন্ধ্যা ৭টায়, লাইভ দেখবেন যেভাবে
- স্কেল নিয়ে বড় সুখবর দিল মন্ত্রণালয়
- শুরু হল ব্রাজিল বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ; লাইভ দেখুন এখানে
- লাইভ স্কোর: ৩০ মিনিটে ব্রাজিল ২-০ গোলে এগিয়ে, খেলা দেখুন এখানে
- হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল; দেখুন ফলাফল
- ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল; সরাসরি দেখুন এখানে
- আবারও গোল, বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল লাইভ দেখুন এখানে
- আর মাত্র কিছুক্ষণ পর: ব্রাজিল বনাম বাংলাদেশ, সন্ধ্যা ৭টায় লাইভ দেখুন এখানে
- ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই আসছে পে স্কেলের গেজেট; যা জানা গেল
- ৮০ মিনিটের খেলা শেষ, বাংলাদেশ বনাম ব্রাজিল; সরাসরি দেখুন এখানে
- পে-স্কেল নিয়ে সুখবর আসছে ডিসেম্বরেই!
- ১৫ ডিসেম্বর পে-স্কেলের গেজেট; যা জানাচ্ছে কমিশন
- একটু পর ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ; লাইভ দেখবেন যেভাবে
- ঢাকা নয়, ভূমিকম্পের সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে যে নগরী
- সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ শনিবার
