সেনাপ্রধানের বক্তব্য কি সংবিধান লঙ্ঘনের ইঙ্গিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীর প্রধানের কিছু মন্তব্য নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। যদি সত্যি সত্যি এই বক্তব্যগুলো তিনি দিয়ে থাকেন, তবে সেটি স্পষ্টভাবে সংবিধান ও পেশাগত দায়িত্বের সীমা অতিক্রম করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনসম্মুখে চ্যালেঞ্জ করা কেবল একটি সেনা-আধিপত্যের (military coup) ইঙ্গিতই নয়, বরং এটি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর সরাসরি হস্তক্ষেপ।
সেনাবাহিনীর প্রধান বলে থাকেন, "দেশ অভিভাবকহীন"— অথচ বাংলাদেশের সংবিধান এখনো বলবৎ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কার্যকর রয়েছে। তাহলে অভিভাবকহীনতার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? এই সরকারের বৈধতা নেই— এমন মন্তব্য একজন সেনাপ্রধানের পক্ষে করা কি তার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে?
সেনাবাহিনী দেশের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকলেও, রাজনৈতিক বৈধতা ও ম্যান্ডেট নিয়ে আলোচনার এখতিয়ার একমাত্র রাজনৈতিক দল ও জনগণের। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হয়েছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সর্বসম্মত সরকার— প্রায় সব রাজনৈতিক দলের অনুমোদিত একটি ঐক্য সরকার। এমন সরকারের ম্যান্ডেট নিয়ে প্রশ্ন তোলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সামরিক প্রধানের কিছু বক্তব্য ভারতীয় গণমাধ্যমে গত এক বছরে উঠে আসা বক্তব্যগুলোর সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি আবারও প্রশ্ন তুলছে— আমরা কি ২০০৭ সালের মত আরেকটি 'দিল্লির পরিকল্পনা' দেখতে পাচ্ছি?
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণআন্দোলনে শহীদদের রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ আজ কোনো মীরজাফরের ষড়যন্ত্রে ফের বিক্রি হয়ে যাবে না। ইতিহাসের শিক্ষা হলো, যখনই দিল্লি-কেন্দ্রিক চাপ তৈরি হয়, তখনই কিছু অদৃশ্য শক্তি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করে।
এখন সময় নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর পেশাদার আচরণ নিশ্চিত করার। কোনো ফোর্স— সেনাবাহিনী, পুলিশ বা র্যাব— কারোরই উচিত নয় রাজনৈতিক ভাষায় বক্তব্য দেওয়া। তাদের ভূমিকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সংবিধান ও চাকরিবিধি। কোনো কর্মকর্তার ব্যক্তিগত মত থাকলে, তা উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা করাই যথার্থ পন্থা। জনসম্মুখে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া তাদের কর্তব্য নয়।
জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের সময় ৬৬% প্রাণহানির কারণ ছিল লিথাল অস্ত্র, যা কেবল সেনাবাহিনী, র্যাব বা বিজিবির কাছে থাকে। পুলিশের নয়। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, এই অস্ত্রের ব্যবহার কীভাবে ঘটল?
আমরা বারবার বলেছি— বাংলাদেশ আর ভুটান বা সিকিম হবে না। আমরা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব। দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তা, জওয়ান, অবসরপ্রাপ্ত সিপাহী থেকে শুরু করে সব বাহিনীর সদস্য যারা ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে জনগণের সঙ্গে ছিলেন— তাদের মতো পেশাদার, সংবেদনশীল ভূমিকাই এখন সময়ের দাবি।
যারা আজ ভারতের ট্রানজিট ও ট্রান্সপোর্ট সুবিধা বিনা শর্তে দিচ্ছে, যারা বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহারের বিনিময়ে এক টাকাও আদায় করতে পারছে না, তারা কি কখনো দেশের স্বার্থ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে? ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের অনিয়মের সময় তারা কোথায় ছিলেন?
বাংলাদেশ আজ আর ১৭৫৭ সালের পলাশী নয়। আজকের বাংলাদেশ নিজের পতাকা, রক্ত, এবং স্বাধীনতায় গড়া একটি রাষ্ট্র। অতএব, সেনাবাহিনীসহ সব রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্রতি আমাদের অনুরোধ— আপনারা পেশাদার থাকুন, দায়িত্বশীল আচরণ করুন। আমরা আপনাদের ২০০৭ সালের ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন বা প্রণব মুখার্জীর শিষ্য হিসাবে দেখতে চাই না।
আমরা চাই, আপনারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সেনা হোন, লাল-সবুজের পতাকার সর্বোচ্চ রক্ষক হোন— দেশপ্রেমিক হয়ে উঠুন, মীরজাফর নয়।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- যাকে প্রধানমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা
- অবশেষে বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু
- সয়াবিন তেলের দাম কমে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
- সরকারি কর্মচারীদের বেতনের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা
- সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন কত টাকা বেতন বাড়লো
- মৃত্যুর পর ভাই বোনের আর কখনো দেখা হবে না, ইসলাম কি বলে
- বড় সুখবর দিলো সংযুক্ত আরব আমিরাত
- ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত যেসব দেশ
- ইরানের শিয়ারা কি মুসলমান নয়, যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
- ইরানের বিজয় নিয়ে যা বলেছেন মহানবী (সা)
- পুরুষদের গোসল ফরজ হলে যেসব কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
- কমোডে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করলে গুনাহ হবে কিনা
- আজ দেশের বাজারে এক ভরি সোনার দাম
- ইরানের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিল চীন
- বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ নিরাপদ ব্যাংক