মেজর ডালিম পাকিস্তানে আছেন, যা জানা গেল

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের এক নারকীয় ঘটনা ঘটে, যখন সেনাসদস্যদের হাতে নিহত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান। ওই ঘটনাতে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন সেনা কর্মকর্তা মেজর শরিফুল হক ডালিম। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি লেফটেনেন্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পান, তবে সাধারণ জনগণ তাকে আজও মেজর ডালিম হিসেবেই চেনে।
সম্প্রতি, প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের সঙ্গে এক লাইভ অনুষ্ঠানে যোগ দেন মেজর ডালিম। ৫০ বছর পর তাকে আবারো জনসমক্ষে দেখে সবার মধ্যে এক শক জাগ্রত হয়। অনেকেই অবাক হন, কারণ এতদিন ধরে তার বেঁচে থাকার বিষয়টি অজানা ছিল। মেজর ডালিম কোথায় আছেন, তিনি কি পাকিস্তানে আছেন, সে বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
২০০৯ সালে ডেইলি স্টার তাদের কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা সূত্রে জানায়, মেজর ডালিম পাকিস্তানে বসবাস করছেন এবং নিয়মিত লিবিয়া সফর করেন। বিশেষ করে লিবিয়ার বেনগাজি শহরে তার যাতায়াত রয়েছে। এই সূত্র আরও জানায়, বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকারের আমলে মেজর ডালিম একবার বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার দেশের বাইরে থাকা এবং বারবার বাংলাদেশে আসা, তাকে একটি রহস্যময় ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে। এই টাস্কফোর্সের প্রধান ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালি-উর-রেহমান। তাদের লক্ষ্য ছিল, যারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন এবং বিদেশে পালিয়ে গেছেন, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা। এই কাজটি করার জন্য তারা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করার চেষ্টা করেছিল। ওয়ালি-উর-রেহমান ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত টাস্কফোর্সের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালি-উর-রেহমান বলেন, মেজর ডালিমের আফ্রিকার কেনিয়া, নাইরোবি ও অন্যান্য দেশে ব্যবসা রয়েছে। তিনি কেনিয়ার পাসপোর্টও সংগ্রহ করেছিলেন। ওয়ালি-উর-রেহমান আরো জানান, মেজর ডালিম শুধু ব্যবসায়িক দিক থেকেই পরিচিত নন, তার রাজনৈতিক সংযোগও রয়েছে। বিশেষ করে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
মেজর ডালিমের পাকিস্তানে অবস্থান নিয়ে আরও কিছু খবর এসেছে, তবে তা নির্ভরযোগ্য নয়। কিছু সূত্র দাবি করে, মেজর ডালিম পাকিস্তানে একাধিক ব্যবসায়িক কার্যক্রমে জড়িত। এছাড়া, পাকিস্তান সরকার বা সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্ক সম্পর্কেও কিছু গুজব শোনা গেছে, যা মেজর ডালিমের রাজনৈতিক প্রভাব এবং খ্যাতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এদিকে, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পেছনে মেজর ডালিমের ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশে আজও নানা রকমের আলোচনা চলছে। তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বহু বছর ধরে নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ নানা দৃষ্টিকোণ থেকে মতামত প্রদান করেছে। তবে, তার বর্তমান অবস্থান বা জীবনের বাকি অংশ এখনও রহস্যে আবৃত।
মেজর ডালিমের বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষ একদিকে যেমন জানার আগ্রহ দেখায়, তেমনি তার সম্পর্কিত নানা তত্ত্ব, কূটনৈতিক তথ্য ও পরিস্কার অবস্থানও সবার কাছে একেবারে অজানা। তার জীবনের শেষ দিকের এ রহস্য এখনও অনেকের কাছে অমীমাংসিত এবং এটি ভবিষ্যতে আরো গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হতে পারে।
এভাবে, মেজর ডালিমের জীবন এবং তার বর্তমান অবস্থান বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছে। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রতিটি ব্যক্তির অবস্থান এবং তাদের জীবনযাত্রা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে থাকবে, এবং সেই অধ্যায়ের পরিপূর্ণতা আসবে যখন সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- ক্যান্সার হওয়ার ১ বছর আগে যেসব পূর্ব লক্ষণ দেখা দেয়
- মোটরসাইকেল মালিকদের জন্য বিআরটিএর কঠোর নির্দেশনা
- দেশে জ্বালানি তেলের দাম নতুন করে নির্ধারণ
- কোন গ্রুপের রক্তের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি
- দাম কমিয়ে আজ ১ ভরি সোনার দাম কত হল
- তীব্র শব্দে কেঁপে উঠলো ইরান, যা জানা গেল
- ইরানের জন্য নতুন দুঃসংবাদ
- নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত, নতুন বিতর্ক শুরু
- এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে যেদিন
- মৃত্যু ছেলের সাথে ১৫ বছর পর মায়ের দেখা
- স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই মৃত্যুদণ্ড, যা জানা গেল
- বাংলাদেশে আজ ১ ভরি সোনার দাম
- বাস পুড়ে তানজানিয়ায় ৩৮ জনের মৃত্যু
- ভয়াবহ সুনামির শঙ্কা, প্রাণহানি ঘটতে পারে ৩ লাখ মানুষের
- নির্বাচন ঠেকানোর জন্য প্রকাশ্যে হুমকি দিলেন ওবায়দুল কাদের