সত্যিই কি আল্লাহ মানুষকে ভুলে যান (ভিডিওসহ)
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, আল্লাহ কি তাঁর কোনো বান্দাকে সত্যিই ভুলে যেতে পারেন? মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের কিছু আয়াতে যখন আল্লাহ নিজেই বলেন, "তোমরা আমাকে ভুলে গিয়েছিলে, তাই আজ আমি তোমাদের ভুলে গেলাম," তখন এই প্রশ্নটি আরও গভীর হয়। আজ আমরা কোরআনের আয়াত ও ব্যাখ্যায় এই রহস্যের উত্তর খুঁজব।
আল্লাহর 'ভুলে যাওয়া' বনাম আল্লাহর সত্তাগত জ্ঞান
প্রথমত, কোরআন আল্লাহর সত্তাগত জ্ঞান ও প্রকৃতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেয়। সূরা মারিয়ামের ৬৪ নম্বর আয়াতে সুস্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে, "তোমার প্রভু কখনো ভুলেন না।" একইভাবে, সূরা ত্বহা-এর ৫২ নম্বর আয়াতে হযরত মূসা (আ.) ফেরাউনের সামনে বলেছিলেন, "এর জ্ঞান আমার প্রতিপালকের নিকট লিপিবদ্ধ রয়েছে; আমার প্রভু কখনো ভুল করেন না আর কখনো ভুলেনও না।" অর্থাৎ, আল্লাহ সর্বজ্ঞ। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ—সবকিছু তাঁর জ্ঞানের আওতায়। তাঁর সত্তার মধ্যে কোনো ঘাটতি বা ভুলে যাওয়ার ভাব নেই।
তাহলে সেই আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা কী, যেখানে 'ভুলে যাওয়ার' কথা বলা হয়েছে?
কোরআনের 'ভুলে যাওয়া'র প্রকৃত অর্থ
কোরআনের সূরা ত্বহা (আয়াত ১২৬) এবং সূরা তাওবা (আয়াত ৬৭)-তে আল্লাহ তাদের ভুলে যাওয়ার কথা বলেছেন যারা পৃথিবীতে তাঁকে ভুলে গিয়েছিল। যেমন, আল্লাহ মুনাফিকদের সম্পর্কে বলেছেন, "তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে, তাই তিনিও তাদেরকে ভুলে গেছেন।"
ইসলামিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই 'ভুলে যাওয়া' মানে আক্ষরিক অর্থে আল্লাহ তাঁদের মনে রাখতে পারেননি, তা নয়। বরং আরবি ভাষায় 'নাসি' (نَسِي) বা 'নিসিয়ান' (نِسْيَان) শব্দের আরেকটি অর্থ হলো উপেক্ষা করা, পরোয়া না করা, রহমত থেকে বঞ্চিত করা বা পরিত্যাগ করা।
এর মানে হলো: যারা দুনিয়ায় আল্লাহর আদেশ-নিষেধ, তাঁর নেয়ামত ও স্মরণকে উপেক্ষা করেছিল, কিয়ামতের দিনে আল্লাহও তাদের প্রতি উদাসীন থাকবেন। তিনি তাদের তাঁর বিশেষ রহমত ও দয়ার বাইরে রেখে দেবেন এবং তাদের পাপের প্রতিফল দেবেন। সেই 'ছেড়ে দেওয়া'ই হলো আসল বিপদ।
আল্লাহকে ভুলে গেলে পরিণতি কী হয়
আল্লাহকে ভুলে গেলে কেবল ঈমানই হারানো হয় না, বরং মানুষ তার আত্মপরিচয়ও হারায়। সূরা হাশরের ১৯ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ তাআলা সাবধান করে বলেছেন, "তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা আল্লাহকে ভুলে গেছে। ফলে আল্লাহ তাদেরকে আত্মভোলা করে দিয়েছেন। আর তারাই হলো পাপাচারী।"
এই আয়াতে একটি ভয়ংকর সত্য প্রকাশ পেয়েছে। যখন মানুষ আল্লাহকে ভুলে যায়, তখন সে নিজের জীবনের আসল উদ্দেশ্য, মর্যাদা বা নৈতিকতা চিনতে পারে না। তার আত্মা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অন্তরের আলো নিভে যায়।
আল্লাহর স্মরণ ও প্রত্যাবর্তনের সুযোগ
মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন মূলত তাঁকে স্মরণ করার জন্যই। সালাত (নামাজ) প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য হলো এই স্মরণের অনুশীলন। আল্লাহ বলেন, "সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ করো। আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, অকৃতজ্ঞ হয়ো না।"
যতক্ষণ না মৃত্যু আসে, ততক্ষণ মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করে ভুল থেকে ফিরে আসতে পারে। আর যখন বান্দা অনুশোচনা নিয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে, তখনই আল্লাহ তাকে আবারো নিজের রহমতের দিকে টেনে নেন।
অতএব, আল্লাহ তাঁর বান্দাকে কখনো ভুলে যান না; কিন্তু আমরা যদি স্বেচ্ছায় তাঁকে ভুলে যাই, তবে তিনি আমাদের ছেড়ে দেবেন। সেই ছেড়ে দেওয়াই হলো জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি। একজন মুমিনের জন্য দুনিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করা।
আশা/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর
- এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা
- নবম বেতন কাঠামো আসছে ৩ ধাপে, সুবিধা শুরু ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে
- নবম পে স্কেল: পর্দার আড়ালে উচ্চপর্যায়ের তৎপরতা, চূড়ান্ত কাঠামো নিয়ে গোপন প্রস্তুতি
- পে স্কেল ডেডলাইন শেষ, কর্মচারীদের আন্দোলন নিয়ে যা বলছে কমিশন
- ব্রাজিল বনাম বাংলাদেশ: লাতিন বাংলা সুপার কাপের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি ঘোষণা
- পে-স্কেল চূড়ান্তের পথে: 'আকাশচুম্বী নয়, বাস্তবসম্মত বেতন কাঠামো'র সুপারিশ
- বিমানবন্দরে তারেক রহমানের ভিডিও, যা জানা গেল
- পে-স্কেল নিয়ে অচিরেই চূড়ান্ত সুপারিশ
- ৭০ সচিবের মতামত চূড়ান্ত: নবম পে-স্কেলের সুপারিশ আসছে ডিসেম্বরে
- টিউলিপের কারণেই দেশে আসতে পারছেন না তারেক রহমান
- আজকের সোনার বাজারদর: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
- খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থার নিয়ে যা জানাল বিএনপি
- নবম পে স্কেল নিয়ে অনিশ্চয়তা: সর্বশেষ যা জানা গেলো
- তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে যে তথ্য দিলেন মির্জা ফখরুল
