
রাকিব হাসান
রিপোর্টার
বাংলাদেশের টাকার মান কেন বাড়ছে না!

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২১ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড ছুঁয়েছিল। কিন্তু পরের দুই বছর আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভ দ্রুত কমতে থাকে এবং ২০২৪ সালের মাঝামাঝি তা ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। তবে বর্তমানে রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক সহায়তার কারণে রিজার্ভ আবারও বেড়ে ৩১.৭২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা একটি ইতিবাচক দিক।
তবে প্রশ্ন হলো, রিজার্ভ বাড়লেও ডলারের বিপরীতে টাকার মান কেন বাড়ছে না? এর পেছনে বেশ কয়েকটি আন্তঃসম্পর্কিত কারণ রয়েছে।
টাকার মানের নিম্নমুখী প্রবণতা
২০২২ সালে ১ ডলারের মূল্য ছিল ৮৫ থেকে ৮৬ টাকা, যা ২০২৪ সালের শুরুতে ১১০ টাকা এবং বছরের শেষে প্রায় ১২২ টাকায় পৌঁছে যায়। যদিও ২০২৫ সালে টাকার মান কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে, তবুও এটি ঐতিহাসিকভাবে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। ডলারের বিপরীতে টাকার এই দুর্বলতার কারণগুলো হলো:
* আস্থা সংকট: ২০২২-২৩ সালের বড় অর্থনৈতিক ঘাটতি সামাল দিতে রিজার্ভ থেকে বিপুল অর্থ খরচ করার কারণে টাকার উপর বাজারের আস্থা কমে গেছে। রিজার্ভ বাড়লেও সেই আস্থা পুরোপুরি ফিরতে সময় লাগছে।
* উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি: দেশে মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কে পৌঁছানোর কারণে টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে এটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, তা এখনো লক্ষ্যমাত্রার উপরে।
* বাজারের মনস্তত্ত্ব: যখনই বাজারে ধারণা তৈরি হয় যে টাকার মান আরও কমতে পারে, তখন ব্যবসায়ী ও প্রবাসীরা ডলার জমিয়ে রাখেন। এতে কৃত্রিম ঘাটতি তৈরি হয়ে টাকার উপর চাপ বাড়ে।
* রিজার্ভের গুণগত সীমাবদ্ধতা: বর্তমান রিজার্ভের একটি অংশ হলো ঋণ বা স্বল্পমেয়াদী চুক্তিভিত্তিক অর্থ, যা পুরোপুরি ব্যবহারযোগ্য নয়। মোট রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের বেশি দেখালেও, বাস্তবে নিট রিজার্ভ ২৫-২৬ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে রয়েছে।
* নীতিগত সিদ্ধান্ত: নীতি নির্ধারকরা ইচ্ছাকৃতভাবে টাকার মান কিছুটা দুর্বল রেখেছেন, যাতে রপ্তানিকারকরা সুবিধা পায়। এর ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ৮.৬ শতাংশ বেড়েছে।
সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ
টাকার উপর চাপ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে:
* কঠোর মুদ্রানীতি: সুদের হার বাড়িয়ে ঋণ ও আমদানির চাহিদা কমানো হয়েছে।
* বিনিময় হারের সংস্কার: স্থির বিনিময় হারের পরিবর্তে 'ক্রলিং পেগ' ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, যাতে অফিশিয়াল ও খোলা বাজারের হারের মধ্যে ব্যবধান কমে আসে।
* আমদানি নিয়ন্ত্রণ: বিলাসী পণ্য আমদানিতে কঠোরতা এবং জ্বালানির ভর্তুকি কমানো হয়েছে, যার ফলে আমদানি ব্যয় কমেছে।
* বৈদেশিক সহায়তা: আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কাছ থেকে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা নেওয়া হয়েছে।
* রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি: ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা চালু রাখা এবং হুন্ডি প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি করার ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
এই পদক্ষেপগুলো টাকার উপর চাপ কমাতে সাহায্য করেছে, কিন্তু বাজারের আস্থা পুরোপুরি ফিরে না আসা পর্যন্ত টাকার মান আগের অবস্থায় ফিরে আসা কঠিন।
রাকিব হাসান/
আপনার ন্য নির্বািত নিউজ
- প্রশংসার জোয়ারে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান
- রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের বৈঠক
- ১ দিনের ছুটি নিলেই মিলবে টানা ৩ দিনের ছুটি
- পাঁচটি ব্যাংকে টাকা তুলতে পারছেন না গ্রাহকরা
- দেশের বাজারে আজ এক ভরি স্বর্ণের দাম
- অবশেষে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য বড় সুখবর
- এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডি গঠনে নতুন নীতিমালা জারি
- স্ট্রোকের ২ মাস আগে শরীরে দেখা দেয় ৬টি লক্ষণ
- অবশেষে বাংলাদেশে চালু হলো ৫জি: যেভাবে ব্যবহার করবেন
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
- আবারও কমলো এলপি গ্যাস ও অটোগ্যাসের দাম
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর
- লাফিয়ে বাড়ল স্বর্ণের দাম, দেখুন আজকের দাম
- ঘরে বসে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করুন সহজে
- ফের বাড়লো সোনার দাম