কুকুর-বিড়াল হত্যা করলে বাংলাদেশের আইনে শাস্তি কী
নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনার ঈশ্বরদীতে সদ্যোজাত আটটি পথকুকুর ছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে হত্যার এক নৃশংস ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সন্তান হারানো মা কুকুরের হৃদয়বিদারক আর্তনাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর আবারও আলোচনা এসেছে, বাংলাদেশে পথকুকুর বা বিড়াল হত্যা করলে আইনি কী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে?
ঘটনা ও প্রশাসনের পদক্ষেপ
ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ কোয়ার্টার এলাকায় এক সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী তাঁর ছেলেকে দিয়ে কুকুরছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দেন, পরে মৃত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করা হয়।
* প্রশাসনিক ব্যবস্থা: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কোয়ার্টার বরাদ্দ বাতিল করেছেন।
* চিকিৎসা: আহত মা কুকুরকে বর্তমানে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অধীনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
* আইনি তৎপরতা: ঢাকার 'অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার' সংগঠনের সদস্যরা ঈশ্বরদীতে গিয়ে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
বাংলাদেশের প্রাণি কল্যাণ আইন, ২০১৯
বাংলাদেশে প্রাণি নির্যাতন ও হত্যার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের প্রাণি কল্যাণ আইন চালু আছে। এই আইনে মালিকবিহীন (পথ) কুকুর বা বিড়াল হত্যা, অপসারণ বা নির্যাতন করাকে বিশেষ কারণ ছাড়া অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
শাস্তির বিধান
| প্রথমবার অপরাধ | ৬ মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ১০,০০০ টাকা জরিমানা। |
| পুনরায় অপরাধ | ২ বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০,০০০ টাকা জরিমানা। |
আইনের ৬ ও ৭ ধারায় বলা হয়েছে, অঙ্গহানি, বিষ প্রয়োগে হত্যা, মারধর, নির্যাতন এবং অনাহারে রাখাকে 'নিষ্ঠুর আচরণ' হিসেবে গণ্য করা হবে। এই শাস্তি পোষ্য প্রাণি, পথ প্রাণি—সব ধরনের প্রাণির জন্যই প্রযোজ্য।
আইনি প্রক্রিয়ায় জটিলতা ও সীমাবদ্ধতা
প্রাণি অধিকারকর্মীদের মতে, আইন থাকলেও এর প্রয়োগে বড় ধরনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে:
* মামলার সীমাবদ্ধতা: আইন অনুযায়ী, সাধারণ নাগরিক নিজে গিয়ে সরাসরি মামলা করতে পারবেন না। শুধুমাত্র প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা তাঁর অনুমোদিত ভেটেরিনারি সার্জন লিখিত অভিযোগ দিলেই আদালত মামলা গ্রহণ করতে পারে। এই কারণে অনেক ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে দেরি হয়।
* দণ্ডবিধির প্রয়োগ: ২০১৯ সালের আইনে মামলা করা না গেলে পুলিশ দণ্ডবিধির ৪২৯ ধারা ব্যবহার করতে পারে। এই ধারায় ৫০ টাকা বা তার বেশি মূল্যমানের প্রাণিকে হত্যা করলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে। তবে পথকুকুর বা বিড়ালের মূল্য নির্ধারণ করা কঠিন হওয়ায় এই ধারা প্রয়োগেও জটিলতা তৈরি হয়।
ঈশ্বরদীর ঘটনাটি কেবল নৃশংসতাই নয়, এটি আইন ও নৈতিকতার গুরুতর লঙ্ঘন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন বা ভ্রাম্যমাণ আদালত সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারে। প্রাণি অধিকার সংগঠনগুলো জিডি করে পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত শুরু করার সুযোগ রাখে। অধিকারকর্মীরা বলছেন, আইনের বিধান থাকা সত্ত্বেও, যদি এর প্রয়োগ শক্তিশালী করা না যায়, তবে এ ধরনের নিষ্ঠুরতা থামবে না এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে না।
আয়শা/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- নবম পে-স্কেল চূড়ান্তের পথে: সর্বনিম্ন বেতন ও গ্রেড নিয়ে যা জানা গেলো
- পে স্কেল: ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত সুপারিশ! যে গ্রেড ভাঙছে কমিশন
- সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর
- নবম বেতন কাঠামো আসছে ৩ ধাপে, সুবিধা শুরু ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে
- এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা
- নবম পে স্কেল: পর্দার আড়ালে উচ্চপর্যায়ের তৎপরতা, চূড়ান্ত কাঠামো নিয়ে গোপন প্রস্তুতি
- পে স্কেল ডেডলাইন শেষ, কর্মচারীদের আন্দোলন নিয়ে যা বলছে কমিশন
- সারাদেশে বৃষ্টির আভাস
- বিমানবন্দরে তারেক রহমানের ভিডিও, যা জানা গেল
- পে-স্কেল চূড়ান্তের পথে: 'আকাশচুম্বী নয়, বাস্তবসম্মত বেতন কাঠামো'র সুপারিশ
- মধ্যরাতে ৪.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাংলাদেশ
- ব্রাজিল বনাম বাংলাদেশ: লাতিন বাংলা সুপার কাপের পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি ঘোষণা
- আজকের সোনার বাজারদর: ২ ডিসেম্বর ২০২৫
- ৭০ সচিবের মতামত চূড়ান্ত: নবম পে-স্কেলের সুপারিশ আসছে ডিসেম্বরে
- পে স্কেলে ৭০ সচিবের চরম ‘বিরোধিতা’; যা জানা গেল
