মূল্যস্ফীতির কবলে সরকারি কর্মচারীরা: নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন 'এখনই জরুরি'
নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ১১ বছর পর নবম জাতীয় পে-স্কেল বাস্তবায়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে দাঁড়িয়ে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় আকাশচুম্বী হওয়ায় এই পে-স্কেলকে কেবল বেতন বৃদ্ধি হিসেবে নয়, বরং প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও যৌক্তিক চাহিদা
গত ২০১৫ সালে অষ্টম পে-স্কেল ঘোষণার পর থেকে মূল্যস্ফীতি কয়েক গুণ বেড়েছে। বর্তমানে ২০তম গ্রেডের একজন কর্মচারীর সর্বসাকুল্যে ১৬ হাজার টাকা বেতনে শহরে জীবনধারণ করা রীতিমতো অসম্ভব।
* সংকটের কারণ: ক্যাব এবং সিপিডি-এর তথ্যমতে, দেশে জীবনযাত্রার ব্যয় ও ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে চরমভাবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২.৫৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড।
* কর্মচারীদের প্রস্তাব: কর্মচারী সংগঠনগুলো বাজারের বাস্তবতা অনুযায়ী সর্বনিম্ন মূল বেতন ৩২ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা (১:৪ অনুপাত) করার দাবি জানিয়েছে। তারা গ্রেড সংখ্যা ১২টিতে সীমিত করা এবং মূল্যস্ফীতির হার অনুযায়ী বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট সমন্বয়ের পরামর্শ দিয়েছে।
প্রস্তাবিত স্কেলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব
নবম পে-স্কেল বাস্তবায়িত হলে কর্মচারীদের কর্মউদ্দীপনা বৃদ্ধি পাবে এবং অভাবজনিত দুর্নীতি কমানোর পথ তৈরি হবে।
* এটি দেশের বৃহত্তর অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে: ভোগব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে চাহিদা বাড়বে, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসবে এবং উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। একটি আদর্শ পে-স্কেল দেশের প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও সেবাপ্রাপ্তির মান উন্নত করতে সহায়তা করবে।
কমিশনের অগ্রগতি ও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
অন্তর্বর্তী সরকার নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নে কমিশন গঠন করে দ্রুত কাজ শুরু করলেও, বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক ধোঁয়াশা।
* কাজের অগ্রগতি: অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত পে-কমিশন সচিব, বিভিন্ন সংগঠন এবং পেশাজীবীদের সাথে আলোচনা শেষ করে সুপারিশমালা প্রস্তুতের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
* হতাশার কারণ: কমিশনের কাজ প্রায় শেষ হলেও, অর্থমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্য ("নতুন পে কমিশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আগামী সরকার") কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা সৃষ্টি করেছে।
* কর্মচারীদের কঠোর অবস্থান: পে-স্কেল দ্রুত কার্যকরের দাবিতে কর্মচারীরা কমিশনকে সুপারিশ দাখিলের জন্য ৩০ নভেম্বর চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় তারা আগামী ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
সকল আশঙ্কা দূর করে এবং জীবনযাত্রার ন্যূনতম প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে, এই যৌক্তিক পে-স্কেল বাস্তবায়নের এখনই সময়।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- ৭০ সচিবের মতামত নিয়ে চূড়ান্ত হলো নবম পে-স্কেলের রূপরেখা
- সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ল সর্বোচ্চ ৭,৮০০ টাকা, সর্বনিম্ন ৪,০০০: মহার্ঘ ভাতায় বড় পরিবর্তন
- নবম পে-স্কেল চূড়ান্তের পথে: সর্বনিম্ন বেতন ও গ্রেড নিয়ে যা জানা গেলো
- পে স্কেল: ডিসেম্বরেই চূড়ান্ত সুপারিশ! যে গ্রেড ভাঙছে কমিশন
- নবম পে স্কেলের সুপারিশ আসছে ডিসেম্বরে: শেষ পর্যন্ত বেতন বাড়ছে কত
- নবম পে স্কেলে ৩-৪ গুন বেতন বৃদ্ধি না করার প্রস্তাব
- নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে জটিলতা
- পে-স্কেলের সুপারিশ নিয়ে ৭০ সচিবের মতামত চুড়ান্ত: পে কমিশনের সর্বশেষ পদক্ষেপ
- নবম বেতন কাঠামো আসছে ৩ ধাপে, সুবিধা শুরু ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে
- সারাদেশে বৃষ্টির আভাস
- এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা
- পে স্কেলের সুপারিশ নিয়ে কমিশনের সর্বশেষ পদক্ষেপ যা জানা গেল
- ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, বাংলাদেশ বনাম চীনের ম্যাচ
- বিমানবন্দরে তারেক রহমানের ভিডিও, যা জানা গেল
- নতুন পে স্কেল: যে মতামত দিলেন ৭০ সচিব
