দাড়ি ছোট রাখলে কি গোনাহ হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলাম ধর্মে দাড়ি রাখা শুধু একটি ব্যক্তিগত পছন্দ নয়, বরং এটি একটি স্পষ্ট নির্দেশ যা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “দাড়ি ছেড়ে দাও”—অর্থাৎ এটিকে লম্বা করতে বলা হয়েছে। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে, সাহাবায়ে কেরাম দাড়িকে এক মুষ্টি পরিমাণ লম্বা রাখতেন এবং অতিরিক্ত অংশ ছেটে দিতেন। তবে এক মুষ্টির আগে দাড়ি ছোট করে রাখার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না।
বিশ্বের অধিকাংশ আলেমদের মতে, দাড়ি রাখা ওয়াজিব। যদিও কিছু আরব বা ইজিপশিয়ান আলেমদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে, তবে মেজরিটি বা সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমগণ একমত যে, দাড়ি রাখা ফরজ না হলেও ওয়াজিব পর্যায়ে পড়ে। কেউ কেউ বলেন, এটি সুন্নত—কিন্তু যেহেতু নবীজী এটি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, তাই তা শুধু ব্যক্তিগত সুন্নত নয় বরং ‘আম আদেশ’ হিসেবে ওয়াজিব হয়ে যায়।
তবে এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে, দাড়ি রাখাকে কেন্দ্র করে অন্যের প্রতি উপহাস বা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করাও হারাম। কেউ দাড়ি রাখতে শুরু করেছে, তাকেও উৎসাহ দেওয়া উচিত, দূরে সরিয়ে দেওয়া নয়। অনেক সময় দেখা যায়, দাড়ি রাখা ব্যক্তির মুখে খারাপ ভাষা, চরিত্রে সমস্যা কিংবা প্রতারণামূলক ব্যবসা—যা সম্পূর্ণভাবে দ্বীনের পরিপন্থী। এতে তার দাড়ির মাধ্যমে অর্জিত সওয়াব ম্লান হয়ে যায়।
দাড়ি রাখা গুরুত্বপূর্ণ, তবে ইসলাম শুধু দাড়ি রাখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। নামাজ, হালাল রুজি, সদ্ব্যবহার, ইনসাফ, অমান্যতা থেকে বিরত থাকা—এসব ফরজ বা বড় বড় দায়িত্বও পালন করা আবশ্যক।
দ্বীন নিয়ে তামাশা ও ভুল বিয়ে
বর্তমান সময়ে অনেকে ইসলামী শরীয়তের বিধান নিয়ে হাস্য-রস করে, বিশেষ করে বিয়ের ক্ষেত্রে। কেউ কেউ মেসেঞ্জারে ‘হ্যাঁ বলেছি’ বলেই বিয়েকে বৈধ মনে করে থাকেন। অথচ বিয়ের জন্য ইজাব-কবুল, সাক্ষী, অভিভাবকের অনুমতি—এসব অপরিহার্য শর্ত। কোনো মেয়ে যদি বয়সে অপ্রাপ্তবয়স্ক হয় এবং মেসেঞ্জারে কোনো ছেলে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ‘হ্যাঁ’ শোনে, সেটা শরিয়ত মোতাবেক বৈধ বিবাহ বলে গণ্য হয় না। এসব হলে তা জেনার শামিল হয়ে যেতে পারে। তাই মুসলিম যুবসমাজকে এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
সন্তানদের মধ্যে বৈষম্য ও ইসলামি ইনসাফ
অনেক অভিভাবক নিজের সন্তানের মধ্যে পার্থক্য করে থাকেন। কেউ পাঁচ সন্তানের মধ্যে চারজনকে সম্পত্তি লিখে দেন, একজনকে বাদ দিয়ে দেন। ইসলামী শরিয়তে এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। কোনো সন্তান যদি ইসলাম ত্যাগ না করে, তবে সে তার পিতার সম্পত্তির অধিকার হারায় না। নবীজী স্পষ্টভাবে বলেছেন, সব সন্তানদের মধ্যে সমতা বজায় রাখতে হবে। জীবিত অবস্থায় কেউ যদি সন্তানদের মধ্যে মাল সম্পদ বণ্টন করেন, তবে তা সমানভাবে করতে হবে। দান করলে নেক সন্তানকে বেশি দেওয়া যেতে পারে দ্বীনের স্বার্থে, কিন্তু কাউকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা যাবে না।
যদি কোনো ব্যক্তি এমন অন্যায় বণ্টন করেন, তাহলেও তার জানাজা নামাজ আদায় করা যাবে। তবে তিনি আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবেন। অন্যদিকে সন্তানদের দায়িত্ব হবে পিতার অন্যায় বণ্টনের ভারসাম্য রক্ষা করা, যাতে তিনি আখিরাতে মুক্তি পান।
ইসলামের প্রতিটি বিধানেই ভারসাম্য ও ইনসাফের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। শুধু দাড়ি রাখা নয়, বরং ব্যক্তি চরিত্র, পারিবারিক আচরণ, সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা এবং শত্রুর সঙ্গেও ন্যায়পরায়ণতা—এই সবই ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। দাড়ি রাখা ওয়াজিব, তবে তার সঙ্গে অন্য ফরজ বিধান মেনে চলাও সমান জরুরি।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরিপূর্ণভাবে দ্বীনের পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
সোহাগ/
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাংলাদেশকে সতর্কবার্তা পাঠাল ইরান
- পায়খানার রাস্তার লোম কাটা জায়েজ কিনা
- সহবাসের পর বীর্য বাইরে ফেললে গুনাহ হয় কি
- দেশে জ্বালানি তেলের দাম নতুন করে নির্ধারণ
- ২৪ ঘন্টার মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ কমে গেল জ্বালানি তেলের দাম
- বাংলাদেশের বাজারে আজ ১ ভরি সোনার দাম
- কোন রক্তের গ্রুপে গরম বা শীত বেশি লাগে
- বাংলা ১০ সিনেমায় বাস্তবেই সহবাস করতে হয়েছে নায়ক-নায়িকাদের
- অবশেষে ভারতীয় ভিসা নিয়ে এলো বড় সুখবর!
- নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকিতে বাংলাদেশ!
- মৃত্যুর আগে মানুষ যে স্বপ্ন বার বার দেখে
- চাকরিতে থাকা বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বড় সুখবর
- অবশেষে বাংলাদেশকে সুখবর পাঠাল ভারত
- ইরানের জন্য নতুন দুঃসংবাদ
- আবারও ইসরায়েলে হামলা