| ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

১৬ বছরে ১০ বার মেডিক্যালের প্রশ্ন ফাঁস, আয় শত কোটি টাকা

জাতীয় ডেস্ক . বিনোদন৬৯.কম
২০২৩ আগস্ট ১৪ ১৫:৩৭:০৯
১৬ বছরে ১০ বার মেডিক্যালের প্রশ্ন ফাঁস, আয় শত কোটি টাকা

মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানোর আড়ালে প্রশ্ন ফাঁস করত একটি চক্র। যাদের মধ্যে সাতজনই ডাক্তার। চক্রটিতে সক্রিয় ৮০ জন সদস্য ১৬ বছরে শতাধিক শিক্ষার্থীদের ফাঁস করা প্রশ্ন সরবরাহ করেছেন, যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে মেডিক্যালে ভর্তিও হয়েছেন। ইতিমেধ্যে অনেকে পাশ করে ডাক্তারও হয়ে গেছেন।

বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের আড়ালে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সংস্থাটি দাবি করছে, এদের মধ্যে ৫ জন চিকিৎসক বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। চক্রটি ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১০ বার শত শত মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্ন সরবরাহ করেছে। এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করেছে। এসব টাকা দিয়ে তারা দেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেছেন এবং বিদেশে পাচার করেছেন।

গ্রেপ্তাররা হলেন ফেইম কোচিং সেন্টারের সঙ্গে জড়িত ও প্রধান অভিযুক্ত ডা. ময়েজ উদ্দিন আহমেদ প্রধান (৫০), জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. সোহেলী জামান (৪০), প্রাইমেট কোচিং সেন্টারের মালিক ডা. মো. আবু রায়হান, থ্রি-ডক্টরস কোচিং সেন্টারের ডা. জেড এম সালেহীন শোভন (৪৮), মেডিকো ভর্তি কোচিং সেন্টারের মালিক ডা. মো. জোবাইদুর রহমান জনি (৩৮), জাতীয় পঙ্গু হাসপাতাল (নিটোর) এর চিকিৎসক ডা. জিল্লুর হাসান রনি (৩৭), ইমরুল কায়েস হিমেল (৩২), গ্রেপ্তার জসীমের বড় ভাই জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মুক্তার (৬৮), রওশন আলী হিমু (৪৫), ই-হক কোচিং সেন্টারের মালিক আক্তারুজ্জামান তুষার (৪৩), ঢাকার ফার্মগেটে ইউনির্ভাসেল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সহায়তা কেন্দ্রের জহির উদ্দিন আহমেদ বাপ্পী (৪৫), টাঙ্গাইলের মিন্টু মেমোরিয়াল হাই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস সরকার (৬৩)।

সেসময় তাদের কাছ থেকে ১৯টি মোবাইল ফোন, ৪টি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ব্যাংক কার্ড, ভর্তির এডমিট কার্ড নগদ দুই লাখ ১১ হাজার, থাইল্যান্ডের মুদ্রা ১৫ হাজার ১০০ বাথ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে সংস্থাটির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী বলেন: দেশের সব স্তরের প্রশ্নফাঁস বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে সিআইডির বিশেষায়িত একাধিক দল সারা বছর মাঠে কাজ করে ইতোমধ্যে এসএসসি, এইচএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এবং বিসিএসসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসকারী বড় চক্রগুলোকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনেছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে নিয়মিত প্রশ্ন ফাঁসকারী বিশাল এক সিন্ডিকেটের খোঁজ পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ। এ ঘটনায় ২০২০ সালের ২০ জুলাই মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায় সম্প্রতি চক্রের অন্তত ৮০ সক্রিয় সদস্যরা প্রায় ১৬ বছরে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধ উপায়ে মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভর্তি করিয়ে শত কোটি টাকা আয় করেছেন।

এই ঘটনায় জড়িতদের ঢাকা, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার টিম। গ্রেপ্তার ১২ জনের মধ্যে ৭ জনই ডাক্তার। এদের প্রায় সবাই বিভিন্ন মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং সেন্টার, নয়তো প্রাইভেট পড়ানোর আড়ালে প্রশ্নফাঁস করতেন।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৮ জন তাদের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। যাতে শতাধিক শিক্ষার্থীর নাম উঠে এসেছে, যারা প্রশ্ন পেয়ে মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছেন। ইতিমেধ্যে অনেকে পাশ করে ডাক্তারও হয়ে গেছেন। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।

সিআইডি প্রধান বলেন: গ্রেপ্তারদের আসামিদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের দেওয়া বিপুল পরিমাণ ব্যাংকের চেক এবং এডমিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়াও মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূঁইয়ার কাছ থেকে একটি গোপন ডায়েরি উদ্ধার করা হয়, যেখানে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা চক্রের অন্যান্য সদস্যদের নাম রয়েছে। সেসব সদস্যদের ধরতে সিআইডির অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরে অন্তত ১০ বার এই চক্র মেডিক্যালে প্রশ্নফাঁস করেছে। এদের ব্যাংক একাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে, যেগুলো মানিলন্ডারিং মামলায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার ডাক্তার ময়েজ উদ্দিন প্রশ্ন ফাঁস চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড। মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে ফেইম নামের একটি কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে মেডিকেল প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়ান। গত ২০ বছর এভাবে শত শত শিক্ষার্থীকে ভর্তি করিয়েছেন। ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা ময়েজ বর্তমানে জামায়াতের চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে দুটি মানিলন্ডারিং মামলা রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও সাবেক ছাত্রদলের রাজনীতি করা গ্রেপ্তার অন্য চিকিৎসকরা হলেন- সালেহীন শোভন, জোবাইদুর রহমান, জিল্লুর হাসান রনি ও জহির উদ্দিন আহমেদ বাপ্পী। তারা সবাই ২০০৫ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত হন। এরপর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের আড়ালে প্রশ্ন ফাঁস করে আসছিলেন।

আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

ক্রিকেট

আচমকা টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বললেন রোহিত শর্মা

আচমকা টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বললেন রোহিত শর্মা

রোহিত শর্মা টেস্ট ক্রিকেটকে জানালেন বিদায়। ইনস্টাগ্রামে ক্যাপশনের সঙ্গে দিলেন আবেগঘন বার্তা। দেখে নিন তার ...

পিএসএলের উদ্বোধনী দিনেই হোটেলে অগ্নিকাণ্ড

পিএসএলের উদ্বোধনী দিনেই হোটেলে অগ্নিকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ২০২৫-এর পর্দা উঠছে আজ, ১১ এপ্রিল, ইসলামাবাদ ইউনাইটেড বনাম ...

ফুটবল

বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব: ২০২৫ সালেআর্জেন্টিনার পরবর্তী ম্যাচ সূচি

বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব: ২০২৫ সালেআর্জেন্টিনার পরবর্তী ম্যাচ সূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে লাতিন আমেরিকার বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনা আগামী চারটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ...

বাংলাদেশ দলে খেলে কত টাকা পেলেন হামজা

বাংলাদেশ দলে খেলে কত টাকা পেলেন হামজা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের ...