বিএনপি, এনসিপি ও জামায়াতের নির্বাচনী দ্বন্দ্ব, দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে যখন ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক শক্তিতে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে, তখন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে এক অদ্ভুত ঐক্য গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ঐক্য ভেঙে গিয়ে, দলগুলো এখন নিজেদের মধ্যে নানা কৌশল এবং আদর্শের ভিত্তিতে আলাদা পথ অনুসরণ করছে। বর্তমানে, নির্বাচন নিয়ে তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দল নিজেদের ভিন্ন ভিন্ন দাবী তুলে ধরেছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি শুরু থেকেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। দলটির নেতৃবৃন্দ মনে করেন, জনগণের ম্যান্ডেট প্রাপ্তির জন্য নির্বাচন জরুরি এবং তাদের একমাত্র লক্ষ্য এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সমর্থন অর্জন করা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, "আর সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে, জনগণের চাহিদা পূরণের সময় এসে গেছে।" বিএনপি এতটাই দৃঢ়ভাবে এই দাবি তুলছে যে, তারা আর কোনো দেরি দেখতে চায় না।
অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিজেদের অবস্থান থেকে জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচনের একযোগে আয়োজনের পক্ষে। এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা জাতীয় নির্বাচন পেছাতে চাইছে না, বরং একসঙ্গে জাতীয় ও গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে, যদি সরকার যথাযথ প্রস্তুতি নেয়। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল আসলাম আদিব বলেন, "জাতীয় এবং গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে হতে পারে, এতে নির্বাচন পেছানোর প্রয়োজন নেই। তবে, সরকারের প্রস্তুতির উদ্যোগ জরুরি।"
তৃতীয় পক্ষ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী একেবারে আলাদা অবস্থান নিয়েছে। তাদের মতে, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে দ্রুত স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করা উচিত। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, "স্থানীয় নির্বাচন আগে হওয়া উচিত, কারণ সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোর নির্বাচিত প্রতিনিধির অভাব রয়েছে, ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে এবং জনগণ তাদের সমস্যার সমাধানে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে যেতে পারছে না।"
এদিকে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, স্থানীয় নির্বাচনের আগে যদি জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে তা বাস্তবিকভাবে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠতে পারে। নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, "স্থানীয় নির্বাচনের জন্য অন্তত এক বছরের প্রস্তুতি প্রয়োজন, কারণ এটি ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। তবে আমাদের লক্ষ্য ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন করা।"
ইসি আরও জানিয়েছে, সরকার থেকে এখন পর্যন্ত স্থানীয় নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি, তবে তারা জুনের মধ্যে ভোটার তালিকা প্রস্তুতসহ অন্যান্য প্রস্তুতি শেষ করার পরিকল্পনা করছে।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন চলছে চরম উত্তেজনা। বিএনপি, এনসিপি এবং জামায়াত—এই তিনটি দল নির্বাচন নিয়ে তাদের নিজস্ব অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরছে। একদিকে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ এবং তর্ক-বিতর্ক রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করছে। এখন সবার নজর নির্বাচন কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং সরকারের পরিকল্পনায়।
অতএব, বাংলাদেশে নির্বাচনের সময়, পদ্ধতি এবং কার্যক্রম নিয়ে চলমান রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নিঃসন্দেহে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সকলের চোখ এখন এই ঘটনাপ্রবাহের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাংলা ৬ সিনেমায় বাস্তবেই সহবাস করতে হয়েছে নায়ক-নায়িকার
- আলোচিত সেই বাবা-মেয়েকে নিয়ে বেড়িয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
- বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে যা চাইলো ডোনাল্ড ট্রাম্প
- দেশের বাজারে কমলো জ্বালানি তেলের দাম
- পাকিস্তানের বিপক্ষে যুদ্ধে কত সৈন্য হারিয়েছে স্বীকার করল ভারত
- বাংলাদেশে ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা : সরকারি ছুটি মিলবে কত দিন
- এক বিছানায় দুই স্ত্রী নিয়ে থাকলে ইসলাম কী বলে
- সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মহার্ঘ ঘোষণা
- আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া, দাবি দ্রুত নির্বাচনের
- ভারতের হামলায় কতজন সেনা হারিয়েছে পাকিস্তান
- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পথে! কী বলছে সরকার
- এএসপি পলাশকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করলেন তার বোন ও দুলাভাই
- তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আঘাত আনবে বাংলাদেশের যে এলাকায়
- কোরবানীর ঈদ কবে, জানা গেল বাংলাদেশে সরকারি ছুটি ও তারিখ
- মিশা সওদাগরকে রাস্তায় মারধর, সত্যতা নিয়ে যা জানা গেল