বাংলাদেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে কমে গেল পেঁয়াজের দাম!

পাবনায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম তীব্রভাবে কমে গেছে। এখন পাইকারি বাজারে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, যা কৃষকদের জন্য বড় ধরনের লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রথমে প্রচণ্ড প্রতিকূল আবহাওয়া, পরে উত্তোলন মৌসুমে দাম কমে যাওয়ার ফলে পেঁয়াজ চাষিরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। বর্তমানে তাদের দাবি, ন্যায্যমূল্য পাওয়ার জন্য পেঁয়াজ উত্তোলনের সময় বিদেশি পেঁয়াজের আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ করতে হবে।
পাবনার সুজানগর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামটি পেঁয়াজ চাষের জন্য বিখ্যাত। পদ্মা চরের এই গ্রামে এখন শীতকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলার কাজে চাষিরা ব্যস্ত। তারা পেঁয়াজ তুলে বাড়িতে এনে বাছাই করে বাজারে বিক্রির জন্য পাঠাচ্ছেন।
গত কয়েক বছর পেঁয়াজ চাষ থেকে লাভবান হওয়ায়, এ বছরও সুজানগর, সাঁথিয়া, বেড়া ও সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ করা হয়। তবে প্রথম দফায় উচ্চমূল্যে কন্দবীজ কিনে রোপণের পর অতিবৃষ্টিতে প্রায় সবকটি নষ্ট হয়ে যায়। এরপর আবার নতুন করে রোপণ করতে গিয়ে খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
এরপরেও চাষিরা কাঙ্ক্ষিত ফলন পাননি। আর বর্তমান দামের অবস্থা দেখে তারা মনে করছেন, এই লোকসান আর সহ্য করা সম্ভব নয়। বর্তমানে যে দাম মিলছে, তাতে প্রতি বিঘায় ৩০ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে তারা ভবিষ্যতে পেঁয়াজ চাষ করতে চাইবেন না।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, “এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করতে বিঘায় এক লাখ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন পেয়েছি বিঘায় ৫০ মণ। ১৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলে ৭৫ হাজার টাকা পাচ্ছি, অথচ আমার লোকসান ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এরকম হলে আগামীতে পেঁয়াজ আর লাগাবো না।”
বামুন্দি গ্রামের কৃষক ময়েন উদ্দিন খান বলেন, “প্রথমে পেঁয়াজ লাগানোর পর বৃষ্টিতে তা নষ্ট হয়ে যায়। অনেকেই সেগুলো জমিতে রেখে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু অধিকাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুন করে আবার রোপণ করতে হয়েছে। এতে খরচ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে, কিন্তু ফলনও কম এবং দামও পড়েছে। বাজারে দাম কমে যাওয়ার কারণে উৎপাদন খরচও উঠছে না।”
পাইকারি বাজারের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাট চিনাখড়া হাটে পেঁয়াজের দাম বেশ কমে গেছে। এখন প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, তবে কিছুদিন আগে একই পেঁয়াজ ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আশরাফ আলী জানান, “এখন সকলেই পেঁয়াজ তুলছে, ফলে হাটে পেঁয়াজের সরবরাহ অনেক বেড়ে গেছে এবং দাম কমেছে। আমরা বাজার অনুযায়ী পেঁয়াজ কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাই। তবে, এখানে কোনো সিন্ডিকেট নেই, এবং পেঁয়াজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না।”
কৃষি বিভাগও কৃষকদের ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করেছে। সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম জানান, “অনেক কৃষক একসঙ্গে পেঁয়াজ তুলছেন এবং বাজারে বিক্রি করছেন, যা দাম কমে যাওয়ার মূল কারণ। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি, অপরিপক্ব পেঁয়াজ জমি থেকে না তুলে পরিপক্ব পেঁয়াজ ধীরে ধীরে তুলে বাজার দেখে বিক্রি করতে। আশা করছি, দাম আবার বাড়বে।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে পাবনা জেলায় মোট ৮ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিকটন রাখা হয়েছে।
কৃষকদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে, কারণ দাম কমে যাওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন খরচও বেড়েছে। তাছাড়া, চলতি মৌসুমে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বৃষ্টির কারণে ফলনও কম হয়েছে, যা তাদের আরও বেশি সমস্যায় ফেলেছে। কৃষকদের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল, উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পাওয়া।
আপনার জন্য নির্বাচিত নিউজ
- বাংলা ৬ সিনেমায় বাস্তবেই সহবাস করতে হয়েছে নায়ক-নায়িকার
- আলোচিত সেই বাবা-মেয়েকে নিয়ে বেড়িয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
- নিজ অফিসেই শেষ গুলি, এএসপি আত্মহত্যার পেছনে যে কষ্টের গল্প বললেন ভাই
- এএসপি পলাশের আত্মহত্যা একদিন পর বেড়িয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
- হঠাৎ হামলা! পাকিস্তানের মিসাইলে কাঁপলো ভারতের ১৫ শহর
- দুই দিনের ছুটি বাতিল, সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে
- বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে যা চাইলো ডোনাল্ড ট্রাম্প
- পাকিস্তানের বিপক্ষে যুদ্ধে কত সৈন্য হারিয়েছে স্বীকার করল ভারত
- বাংলাদেশে ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা : সরকারি ছুটি মিলবে কত দিন
- এক বিছানায় দুই স্ত্রী নিয়ে থাকলে ইসলাম কী বলে
- আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া, দাবি দ্রুত নির্বাচনের
- ভারতের হামলায় কতজন সেনা হারিয়েছে পাকিস্তান
- কাশ্মীরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: পাকিস্তানের দাবি, ৫০ ভারতীয় সেনা নিহত
- আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ঘিরে তোলপাড়, কী বলছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ
- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পথে! কী বলছে সরকার