বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করেছে আফগানিস্তান। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে হেরেছে তারা। টানা দুই পরাজয়ের পর আফগানিস্তানের ওয়ানডে খেলার মান নিয়ে এসেছে তুমুল সমালোচনা। তবে তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বড় চমক টেনেছে আফগানিস্তান। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়কে ভাগ্যের স্ট্রোক হিসেবে বিবেচনা করলেও সেখানেই থেমে থাকেনি আফগানরা। তবে চতুর্থ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আবারও হেরেছে আফগানিস্তান।

তবে প্রতিবেশী পাকিস্তানকে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে আফগানরা। যা তারা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও বজায় রেখেছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬ ম্যাচে ৩ জয়ের পর ৩ জয়। আফগানিস্তানের সেমিফাইনালের সম্ভাবনাও এখন হিসাব করা হচ্ছে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৫ নম্বরে থাকা আফগানিস্তান কীভাবে খেলতে পারে সেমিফাইনালে।

উপরে উল্লিখিত হিসাবে, আফগানিস্তান ৬ ম্যাচের মধ্যে ৩ জিতে র্যাঙ্কিংয়ে ৫ নম্বরে রয়েছে।যা তাদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। এই মুহূর্তে আফগানিস্তানকে হারিয়ে চারটি দল হল ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট ৮।

বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ পর্যন্ত এই তালিকায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে একমাত্র দল আফগানিস্তান। তাদের সাথে পয়েন্টের তালিকাটি মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। ৫ নম্বরে থাকা সত্ত্বেও আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হল তার নেট রান রেট। তিনটি ম্যাচে বড় হারের কারণে তাদের নেট সাফল্যের হার -০.৭।

আফগানিস্তানের পরের তিনটি ম্যাচ নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তারা বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ২ পয়েন্ট এবং দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে। মানে এই দুই দলের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও দুটি ম্যাচই কঠিন হবে, তবে এই দুটি ম্যাচে জয় আফগানিস্তানের সেমিফাইনালে ওঠা অনেক সহজ করে দেবে।

এখন, আফগানিস্তান তাদের পরের তিনটি ম্যাচ জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ১২। অস্ট্রেলিয়া যদি আফগানিস্তানের কাছে হারে তবে তারাও ১২ পয়েন্ট পর্যন্ত পেতে পারে। যাইহোক, +০.৯৭০ পয়েন্টের রান রেটে অস্ট্রেলিয়া আফগানিস্তানের থেকে বেশ এগিয়ে আছে। তাই শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট সমান হলেও অস্ট্রেলিয়ার লাইন ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তা ছাড়া আফগানিস্তানের ম্যাচ বাদ দিলে অস্ট্রেলিয়ার বাকি দুটি ম্যাচ হবে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিপক্ষে। এই দুই দলই এখন তলানিতে।

আফগানিস্তান এখন যা আশা করতে পারে তা হল অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের কাছে তিনটি ম্যাচের মধ্যে অন্তত দুটি হারে এবং সবকটি জিততে পারে। এটি আফগানিস্তানকে পয়েন্টের দিক থেকে অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডকে ছাড়িয়ে যেতে দেবে (দুই বা ততোধিক ম্যাচ হেরে যাওয়া দল)। আর যদি দক্ষিণ আফ্রিকা বাকি ৩ ম্যাচ হারে, তাহলেও পয়েন্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার পয়েন্ট থাকবে ১০ এবং আফগানিস্তানের পয়েন্ট ১২।

এ ছাড়া পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা বা নেদারল্যান্ডসহ অন্যদের ৩ ম্যাচ জিতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শেষ করার সুযোগ রয়েছে। আর আফগানিস্তানের পরের ম্যাচ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে হারলে সেমিফাইনালে ওঠার পথ তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। তা হলে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের হারাতে হবে।

• এই ক্ষেত্রে তারা ১২ পয়েন্ট পাবে।
• যদি নিউজিল্যান্ড দুটি ম্যাচ হারে বা অস্ট্রেলিয়া যদি ইংল্যান্ড বা বাংলাদেশের কাছে হারে বা যদি দক্ষিণ আফ্রিকা ভারত ও নিউজিল্যান্ডের কাছে হারে তবে দলগুলির পয়েন্ট 12-এর নিচে থাকবে। এবং আফগানিস্তান কোনো রান রেট গণনা ছাড়াই পয়েন্ট নিয়ে খেলে সেমিফাইনালে পৌঁছে যাবে। .

আফগানিস্তান দুই ম্যাচেই জিতলে

• তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ১০
• যদি তারা নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে যায়, তবে সবকিছু উপরের হিসাবের মতো হওয়া উচিত। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গেলেও, ট্যালি একই থাকবে, তবে সেক্ষেত্রে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের কাছে হারতে হবে প্যাট কামিন্সের দলকে। আর আফগানিস্তান যদি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারে, তবেই তারা নিউজিল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়াকে ছুঁতে পারবে। সব ক্ষেত্রে নেট এক্সিকিউশন রেট ভাগ্য নির্ধারণ করবে।
• এমন অবস্থায় পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসেরও সুযোগ আছে ১০ পয়েন্ট পাওয়ার।
• যদি নিউজিল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া তিনটি ম্যাচই হারে এবং নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা একটি করে ম্যাচ হারে, আফগানিস্তান তাদের সাফল্যের হার নির্বিশেষে সেমিফাইনালে যেতে পারে।

আফগানিস্তান যদি একটি ম্যাচ জিতে

• তারপর আফগানিস্তানের পয়েন্ট ৮।
• অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ড বা উভয় দলই তিনটি ম্যাচ হারলে ৮ পয়েন্টের বেশি পাবে না।
• অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান বা নেদারল্যান্ডস যদি অন্তত একটি ম্যাচ হারে তবে তারা ৮ পয়েন্টের বেশি পাবে না।
• ইংল্যান্ড বা বাংলাদেশ বা উভয় দলই তিনটি ম্যাচে জিততে পারেনি। এমনকি তারা জিতলেও, এটি ব্যাপক ব্যবধানে হবে না।
• এই সমীকরণ অনুসরণ করে, সবকিছুই নেট এক্সিকিউশন স্পিডের উপর নির্ভর করবে।